• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৭ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরও অন্তত সাত জন নিহত হয়েছে

ছবি সংরক্ষিত

অপরাধ

‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৭ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ মে ২০১৮

সারা দেশে চলমান মাদক বিরোধী অভিযানের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরও অন্তত সাত জন নিহত হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বুধবার সকালের মধ্যে ছয় জেলায় মাদক চোরাকারবারী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এসব ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয় বলে জানিয়েছে র‍্যাব ও পুলিশ।

এর মধ্যে পুলিশের গুলিতে কুষ্টিয়ায় দুইজন এবং জামালপুর, কুমিল্লা, ঠাকুরগাঁও ও রংপুরে একজন করে মোট চারজন নিহত হয়েছে। আর ফেনীতে র‍্যাবের গুলিতে নিহত হয়েছে একজন।

সরকারের পক্ষ থেকে মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালানোর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে প্রতি রাতেই মাদক ব্যবসায়ীরা 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হচ্ছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে সারা দেশে অন্তত ৩৭ ব্যক্তি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কুষ্টিয়ায় কুমারখালী ও ভেড়ামারা উপজেলার ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার গভীর রাতে এসব ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন,  মাদক বেচাকেনার খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলার লাহিনী পাড়া গড়াই নদীর পাড় সংলগ্ন সেতুর নিচে অবস্থান নেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করেন। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফটিক ওরফে গাফ্ফার (৩৭) গুলিবিদ্ধ হন। তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে  চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হামিদুর রহমান, এসআই শফিকুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আনোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল মো. আলাউদ্দিন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি গুলি, ৭০০ ইয়াবা ও কিছু গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।

ভেড়ামারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, মাদক বেচাকেনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের হাওয়াখালী মাঠে অবস্থান নেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। তখন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিটন হোসেন (৪০) গুলিবিদ্ধ হন। তাকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় থানার এসআই সালাউদ্দিন, কনস্টেবল মো. আমিনুর ও সানোয়ার হোসেন আহত হয়েছেন।  ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় শাটারগান, তিনটি গুলি, ৫০০ ইয়াবা ও কিছু হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।

জামালপুর

জামালপুরে পুলিশের সঙ্গে মাদক চোরাকারবারীদের 'বন্দুকযুদ্ধে' অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে পৌর শহরের ছনকান্দা মাদ্রাসা ঘাটে পুলিশের সঙ্গে মাদক চোরাকারবারিদের 'বন্দুকযুদ্ধে' ওই ব্যক্তি নিহত হয়।

জামালপুর সদর থানার ওসি নাছিমুল ইসলাম বলেন, পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হয়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়।  ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, এক হাজার ইয়াবা এবং ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।

কুমিল্লা

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায় মঙ্গলবার রাতে  ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তি হলেন- নুরুল ইসলাম ইছা। তিনি আদর্শ সদর উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে।

ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে মাদক মামলার এক আসমি গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।

জেলার পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলছেন, বুধবার ভোরে উপজেলার ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের বনবাড়ি এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।

ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলেন, গতকাল রাতে পীরগঞ্জ ও বালিয়াডাঙ্গী থানার পুলিশের যৌথ অভিযানের আটক হন মাদক ব্যবসায়ী আতাবুল। পরে তাঁকে নিয়ে অভিযানে বের হয় পুলিশ। পীরগঞ্জ উপজেলার ভাতারমারী ইক্ষু ফার্ম এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা চালায় আতাবুলের সহযোগীরা। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় আতাবুল নিহত হন।

নিহত আক্তাফুল (৩৮) বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের পারুয়া গ্রামের ভেলসা মোহাম্মদের ছেলে।  তার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা, মাদক আইনসহ ১৯টি মামলা রয়েছে।

রংপুর

রংপুরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে নগরীর হাজীরহাট এলাকার জাফরগঞ্জ সেতুর কাছে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহীন মিয়া (৪৫) রংপুর সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মনোহর শুকানচৌকি এলাকার শহিদার ওরফে সিরাজুলের ছেলে।

পুলিশ বলছে, শাহীনের নামে কোতোয়ালি ও গঙ্গাচড়া থানায় মাদক ও সড়ক ডাকাতির ১১টি মামলা রয়েছে।

রংপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, জাফরগঞ্জ সেতুর কাছে মাদক কেনাবেচার খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। এসময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের দিকে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। শাহীন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। অার বাকিরা পালিয়ে যায়।

ফেনী

ফেনীতে মঙ্গলবার রাতে র‍্যাবে সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ফেনী শহরের দাউদপুর এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।

নিহত মোহাম্মদ ফারুক (৩৫) চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাকার অলি আহম্মেদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক আইনের একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়াত জামিল ফাহিম বলেন, চট্টগ্রাম থেকে মাদকের চালান ঢাকা যাওয়ার খবরে ফেনীর দাউদপুর কাঁচা বাজার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে রাতে তল্লাশি করছিলেন র্যাাব সদস্যরা। এ সময় একটি প্রাইভেটকারকে থামার ইংগিত দেওয়া হলে সেখান থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। র্যা বও আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। তাতে মাদক ব্যবসায়ী ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়।

পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ ও ২২ হাজার ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র্যাগব। এ ছাড়াও মাদক চোরাকারবারিদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads