• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
ধর্ষণের মামলায় তাৎক্ষণিক অভিযোগ গ্রহণের নির্দেশ

ধর্ষণের মামলায় তাৎক্ষণিক অভিযোগ গ্রহণের নির্দেশ

প্রতীকী ছবি

অপরাধ

ধর্ষণের মামলায় তাৎক্ষণিক অভিযোগ গ্রহণের নির্দেশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ মে ২০১৮

অভিযোগের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষিতার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো, তাৎক্ষণিক অভিযোগ গ্রহণ এবং সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া অভিযোগ গ্রহণে বিলম্ব হলে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলা দায়ের ও তদন্তে সুনির্দিষ্ট আইন না হওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

৫ অধিকার সংগঠনের দায়ের করা জনস্বার্থ-বিষয়ক রিটের চূড়ান্ত নিষ্পত্তিকালে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের ঘোষিত রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি গতকাল রোববার প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রকাশিত রায়ের নির্দেশনা বলা হয়েছে- ১. ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের ঘটনায় থানার ওসি তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ লিখিতভাবে রেকর্ড করবেন। সেটা থানার আওতার মধ্যে সংঘটিত হোক বা না হোক। ২. অবিলম্বে এমন একটি অনলাইন সার্ভার তৈরি করতে হবে, যাতে এ ধরনের অভিযোগ সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে করা যায়। ৩. সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনো পুলিশ কর্মকর্তা যদি অভিযোগ গ্রহণে বিলম্ব করেন, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুনির্দিষ্ট বিধান থাকতে হবে। ৪. প্রত্যেক থানায় কনস্টেবলের নিচে নয়, এমন একজন নারী পুলিশ থাকবেন যিনি অভিযোগ পাওয়ার পর দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিউটি অফিসারের মাধ্যমে ও ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য, শুভাকাঙ্ক্ষী, সমাজকর্মী বা আইনজীবীর উপস্থিতিতে অভিযোগ রেকর্ড করবেন। ৫. সব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর সকল তথ্য সংরক্ষণে গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ৬. প্রত্যেক থানায় ভুক্তভোগীদের জন্য সহযোগিতাপূর্ণ নারী সমাজকর্মীদের একটি তালিকা রাখতে হবে। ৭. ভুক্তভোগীর আইনজীবী, সংশ্লিষ্ট বন্ধু, সমাজকর্মী অথবা নিরাপত্তা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার অভিযোগ রেকর্ড করতে হবে। ৮. অধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্রের প্রদত্ত অধিকার সম্পর্কে ভুক্তভোগীকে সচেতন করতে হবে এবং তিনি চাইলে যেকোনো তথ্য দিতে হবে। ৯. অভিযোগ প্রাপ্তির পর তাৎক্ষণিকভাবে ডিউটি অফিসার ‘ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার’-এ অবহিত করবে। ১০. ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার কোনো নারী করণীয় সম্পর্কে বুঝতে অক্ষম হলে তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে হবে। ১১. লিখিত অভিযোগ গ্রহণের পর কোনো ধরনের বিলম্ব না করে তদন্তকারী কর্মকর্তা ভুক্তভোগীকে একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করবেন। ১২. ভুক্তভোগীর দ্রুত সেরে উঠতে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সুবিধা থাকতে হবে। ১৩. ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নমূলক সব ঘটনায় বাধ্যতামূলকভাবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে হবে। ১৪. ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিএনএসহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করে তা ফরেনসিক ল্যাবে পাঠাতে হবে। ১৫. যেকোনো রিপোর্ট সংগ্রহ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তদন্তকারী সংস্থার যেকোনো ব্যর্থতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। ১৬. যত দ্রুত সম্ভব মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত রিপোর্ট প্রস্তুত করবেন। ১৭. নারী ও শিশুদের ওপর সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে ‘১০৯২১’ নাম্বারে ফোন করে যেন প্রতিকার পেতে পারে, সে বিষয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে। ১৮. ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং পরামর্শদানের জন্য প্রত্যেক মহানগরে একটি করে সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads