• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
রাজধানীর মাদক ব্যবসার স্থান ও কৌশলে পরিবর্তন

রাজধানীর মাদক ব্যবসার স্থান ও কৌশলে পরিবর্তন

প্রতীকী ছবি

অপরাধ

রাজধানীর মাদক ব্যবসার স্থান ও কৌশলে পরিবর্তন

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ০২ জুন ২০১৮

বদলে গেছে রাজধানীর মাদক ব্যবসার স্থান ও কৌশল। দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হওয়ায় গা-ঢাকা দিয়েছে মাদক বিক্রেতারা। এ ছাড়া মাদক বিক্রেতাদের অনেকেই ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তাই মাদক ব্যবসার স্পটগুলো আর আগের মতো নেই। দু-একজন বিক্রেতা ঘাপটি মেরে থাকলেও মাদক বিক্রি বর্তমানে বন্ধ করে দিয়েছে। আবার কেউ কেউ নিজের এলাকা ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতায় এ ব্যবসা করছে। স্পটের আশপাশে ক্রেতারা ঘোরাঘুরি করলেও ভয়ে কথা বলছে না। গতকাল শুক্রবার মিরপুর শাহআলী, কারওয়ান বাজার, জেনেভা ক্যাম্প, শুক্রাবাদ, তেজকুনিপাড়া, মহাখালী এলাকার মাদক স্পট ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ করা গেছে।

মাদক ব্যবসার স্পট হিসেবে পরিচিত কারওয়ান বাজার রেললাইন বস্তি এলাকায় কোনো মাদক বিক্রেতাকে দেখা যায়নি গতকাল শুক্রবার। নতুন লোক দেখলেই বস্তির বাসিন্দারা কখনো ক্রেতা আবার কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মনে করে নির্বাক তাকিয়ে থেকেছে। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ এলাকার প্রায় সব মাদক বিক্রেতাকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। এখন আর কেউ এখানে গাঁজা-ইয়াবা বিক্রি করে না।

অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেনেভা ক্যাম্পের এক ব্যবসায়ী জানান, ক্যাম্পে মাদক বিক্রেতাদের বেশিরভাগই বর্তমানে কারাগারে। কিছু বাইরে থাকলেও প্রকাশ্যে বিক্রি করছে না। এ ছাড়া নতুন কোনো ক্রেতার কাছে বিক্রিও করা যাচ্ছে না। অভিযানের পর থেকে ইয়াবার চালান আসা কমে গেছে। তবে গাঁজা বিক্রি হচ্ছে গোপনে। পুরনো ইয়াবার ক্রেতাদের ধরে রাখতে তাদের কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে গাঁজা সরবরাহ করা হয় বলে জানান তিনি।

একই চিত্র মহাখালী সাততলা বস্তি এলাকারও। এখন আর ডেকে ডেকে বাবা (ইয়াবা) বিক্রি হয় না সেখানে। নতুন লোক দেখলেই শিশু-কিশোররা তাকিয়ে দেখছে। এর আগে এসব শিশু-কিশোরই প্রকাশ্যে ডেকে ডেকে মাদক বিক্রি করত।

ওই বস্তির একাধিক বাসিন্দা জানান, র্যাব-পুলিশ অনেক বিক্রেতাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এখন বিক্রি করে না কেউ।

মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর মিরপুর শাহআলী এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি বন্ধ হলেও থেমে নেই গোপনে। মাজারের ভেতর ও বাইরে আগের মতোই গানবাজনার ফাঁকে বিক্রি হচ্ছে গাঁজা। প্রতি বৃহস্পতিবার বিক্রির পরিমাণ বেশি হয়। ওইদিন রাতে গানবাজনার আসর বসায় বিক্রি বেশি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া চটবাড়ি এলাকায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা সচল রয়েছে। চটবাড়ি লেকে নৌকায় চড়ানোর নামে লেকের মাঝামাঝি স্থানে গিয়ে ইয়াবা সেবনের চিত্র এখনো বদলায়নি।

তবে শাহ আলী থানা পুলিশের দাবি, এলাকায় কোনো মাদক বিক্রেতা নেই। রাজধানীর ৮০ শতাংশ আবাসিক হোটেলেই ইয়াবা সরবরাহ করত মাদক ব্যবসায়ীরা। চাইলেই ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ইয়াবা পৌঁছে দিত হোটেলের কর্মচারীরা। কিন্তু এখন মাদক ব্যবসায়ীরা নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ায় তারাও ইয়াবা সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার এ প্রসঙ্গে বলেন, আমার এলাকায় মাদকের যেসব ডেরা ছিল অভিযান পরিচালনার পর সেগুলো আর নেই। গত কদিন এ এলাকার অর্ধশত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। বাকিরা পালিয়ে গেছে। তাই এলাকায় মাদক বেচাকেনা হচ্ছে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads