• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
‘উৎস বন্ধ না করে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়’

‘উৎস বন্ধ না করে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়’

প্রতীকী ছবি

অপরাধ

চট্টগ্রামে ১৫ লাখ ইয়াবা ধ্বংস 

‘উৎস বন্ধ না করে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক ও চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • প্রকাশিত ০৩ জুন ২০১৮

মানবাধিকারকর্মী ও সুশীল সমাজের পর এবার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, উৎস বন্ধ না করে মাদক নির্মূল করা সম্ভব নয়। মাদকবিরোধী অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড শুরুর পরই নড়েচড়ে বসেন দেশের মানবাধিকারকর্মী ও সুশীল সমাজের সদস্যরা। চুনোপুঁটি মাদক বিক্রেতাদের হত্যা করে এই মারাত্মক সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তারা। তারা বলেন, এই অভিযান দিয়ে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসার খুব সামান্যই থামানো যাবে। কারণ এ ব্যবসার বিস্তৃতি অনেক গভীরে। সমূলে মাদক নির্মূল করতে হলে সবার আগে এর উৎস বন্ধ করতে হবে। চট্টগ্রামে গতকাল আটক মাদক দ্রব্য ধ্বংস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহারের কণ্ঠে মানবাধিকারকর্মীদের এসব বক্তব্যের প্রতিধ্বনি শোনা গেল

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জুতা আবিষ্কার’ কবিতাটি উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘চরণ ঢাকব, না ধরণী ঢাকব’- এখন যেখান থেকে উৎস, সেই উৎসমুখ যদি বন্ধ না হয়, তাহলে মাদক নির্মূল করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কার্যালয়ে জব্দ করা মাদক ধ্বংসের এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ইকবাল বাহার।

উৎসমুখ বন্ধের ওপর জোর দিয়ে সিএমপি কমিশনার বলেন, ১০টি জায়গা দিয়ে হয়তো এই মাদকটি আসে। এটি ১০ হাজার বা ৫০ হাজার জায়গায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। ৫০ হাজার জায়গায় ৫০ হাজার মানুষকে আইনের আওতায় আনা অত্যন্ত দুরূহ। এ কারণে আমরা উৎসমুখটাকে যদি বন্ধ করতে পারি তাহলে কিন্তু মাদককে নির্মূল করা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

সিএমপি কমিশনার বলেন, সবাই যদি একাট্টা হয়ে চেষ্টা করি তাহলে এ জাতিকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, কয়েকটি ধাপে তারা কাজ করছেন। মানুষকে সচেতন করে পাড়া-মহল্লায় মাদকবিরোধী কমিটি করা। স্থানীয়দের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে মাদক-সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করছেন তারা।

এ দিন সিএমপি কার্যালয়ে বিভিন্ন সময়ে আটক ১৫ লাখ ৩৮ হাজার ইয়াবা এবং ৯ কেজি ৮০০ গ্রাম গাঁজা ধ্বংস করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম ওসমান গণি, মহানগর হাকিম আল ইমরান খান, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদ উল হাসান, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান, অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম প্রমুখ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সমস্যার সমাধানের নামে প্রান্তিক পর্যায়ের মাদক বিক্রেতাদের হত্যা করা হচ্ছে। এভাবে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়। চুনোপুঁটিদের মারলে চলবে না, রুই-কাতলাদেরও ধরতে হবে।  

মেথামফেটামিন নামের ইয়াবা ট্যাবলেটের জোয়ার শুরু হয়েছে মিয়ানমার থেকে। তা ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। গত সপ্তাহে ক্রিস্টাল মেথামফেটামিনের বিশাল একটি চালান জব্দ করেছে মালয়েশিয়া। সেখানকার কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, মিয়ানমার থেকে শিপমেন্টে হলুদ চা পাতার প্যাকেটে করে পাঠানো হয়েছিল ১ দশমিক ২ টন মেথামফেটামিন। ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডেও রেকর্ড পরিমাণ এই নেশাদ্রব্য জব্দ হয়েছে। মাদকের এই বাজার উদ্বেগজনকভাবে, ভয়াবহ গতিতে বাড়ছে। তবে ইয়াবা পাচার বন্ধে মিয়ানমার সরকারের সহায়তা চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না বলে সম্প্রতি জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads