• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
পার্বতীপুরে রেলের টিকিট কালোবাজারে, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

কাউন্টারের সামনে দালালদের হাতে বিক্রি করা টিকেট তিনগুন দামে বিক্রি করতে দেখা যায়

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

পার্বতীপুরে রেলের টিকিট কালোবাজারে, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

  • সোহেল সানী, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২১ জুন ২০১৮

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমজোনের বৃহৎ জংশন দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট অধিকাংশই চলে যাচ্ছে কালোবাজারীর হাতে।

পার্বতীপুর স্টেশন থেকে আন্তনগর ট্রেনে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে চালাচলকারী যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনের অধিকাংশ টিকিট বিক্রি হচ্ছে কালোবাজারে। ফলে কালোবাজারিদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। টিকেট কালোবাজারী হওয়ায় ঈদে কর্মস্থলে ফিরতে যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। কাউন্টারে শুধুমাত্র স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি হচ্ছে। সিট বুকিং টিকেটের জন্য ধর্ণা দিতে হচ্ছে দালাল চক্রের কাছে। এ টিকিট কে বা কারা পাচ্ছে এ বিষয়ে কোন তথ্যই রেলের কর্মকর্তারা রাখছে না। স্টেশনের কালোবাজারীরা রেলের টিকেট কাউন্টারের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহায়তায় ব্যবসা করে যাচ্ছে দেদারসে।

টিকিট বিক্রি করতে রেলস্টেশন কাউন্টারের সামনে সাঁটানো বিজ্ঞাপনগুলোতে ট্রেনের নাম, টিকিটের সংখ্যা ও মোবাইল নম্বর লিখে দিয়েছেন তারা। এসব বিজ্ঞাপন কাউন্টারের সামনে শুধু লাগানো হয়নি, অন্যত্রও টিকিট বিক্রির বিজ্ঞাপন শোভা পাচ্ছে। বিজ্ঞাপনগুলোতে ফোন দিলে তারা তিনগুন দাম দাবি করছে। সেই সাথে পানের দোকান, ঔষধের ফার্মেসী, হোটেলে ও বাসা-বাড়িতে ট্রেনের টিকিট মিলছে এখন।

এ ব্যাপারে রবিউল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, কাউন্টারে টিকেট করতে গেলে সিটবিহীন টিকেট মিলছে। পরক্ষণেই কাউন্টারের সামনে দালালদের হাতে বিক্রি করা টিকেট তিনগুন দামে বিক্রি করতে দেখা যায়। তিনি নিজে নীলসাগর ট্রেনের পার্বতীপুর-ঢাকা শোভন চেয়ার ৪৪০ টাকার স্থলে ১ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। এখন সেই টিকিট ১ হাজার টাকা থেকে ১২শ’ টাকা করে বিক্রি করছে দালালরা। এভাবেই হরদম টিকেট বিক্রি হচ্ছে কালোবাজারে।

পার্বতীপুর রেল স্টেশনের জন্য ঢাকা টু দিনাজপুরগামী আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য শোভন চেয়ার ৯২টি, এসি চেয়ার ১২টি, নন এসি ৮টি ও বার্থ ৭টি, দ্রুতযান এক্সপ্রস ট্রেনের জন্য শোভন চেয়ার ৯২টি, এসি চেয়ার ১৫টি, নন এসি ১০টি, নীলসাগর এক্সপ্রস ট্রেনের জন্য শোভন চেয়ার ৯২ টি, এসি চেয়ার ১২টি, নন এসি ৪টি ও এসি বার্থ ৪টি এবং ঈদ স্পেশাল দুইটি ট্রেনের প্রথম শ্রেণী ২৪টি, শোভন চেয়ার ১৪৪টি ও সাধারন চেয়ার ৪০০টি বরাদ্দ রয়েছে। পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি, মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি, বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা, বিদেশী মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত ল্যাম্ব হাসপাতাল ও পার্বতীপুর রেলওয়ে অয়েল হেড ডিপো মিলে সরকারের সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ ৫টি স্থাপনা (কেপিআই এলাকা) থাকার কারনে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর পার্বতীপুরের জন্য বরাদ্দ থাকা আসন অপ্রতুল হিসেবে মনে করেন ভিআইপি যাত্রীরা। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। 

এ ব্যাপারে পার্বতীপুর স্টেশন মাস্টার জিয়াদুল আহসান এর কাছে জানতে চাইলে বলেন, কালোবাজারে রেলওয়ের টিকিট বিক্রির বিষয়টি দেখার কাজ তার নয়। এর জন্য আলাদা প্রশাসন রয়েছে। প্রশাসনকে তিনি অবহিত করেছেন। অন্যদিকে ঈদের পর ফিরতি টিকিট অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। পার্বতীপুর রেলস্টেশন কাউন্টারে আগামী ২৬ জুন পর্যন্ত কোন টিকিট নেই। সেই সাথে চাহিদার তুলনায় আসন বরাদ্দ অনেক কম বলে তিনি উল্লেখ করেন। 
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমজোনের পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) আনোয়ার হোসেন এর মোবাইলে একাধিকাবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না হওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads