• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
বাচ্চু হত্যায় জড়িত ৫ জঙ্গিকে খুঁজছে পুলিশ

প্রকাশক ও লেখক শাহজাহান বাচ্চু

সংরক্ষিত ছবি

অপরাধ

বাচ্চু হত্যায় জড়িত ৫ জঙ্গিকে খুঁজছে পুলিশ

উত্তরাঞ্চলে সক্রিয় হচ্ছে জঙ্গিরা

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ৩০ জুন ২০১৮

মুন্সীগঞ্জে প্রকাশক ও লেখক শাহজাহান বাচ্চু হত্যাকাণ্ডে জড়িত নব্য জেএমবির (জামা’আতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ) পাঁচ সদস্যকে খুঁজছে পুলিশ। হত্যায় জড়িত আবদুর রহমানকে গ্রেফতার ও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের পর বাকিদের ধরতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি অঞ্চল ঘিরে জঙ্গিরা আবারো সক্রিয় হচ্ছে বলে ধারণা করছে গোয়েন্দা পুলিশ।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর হলি আর্টিজানে হামলার পর অভিযানের মুখে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া জেএমবিসহ অন্যান্য জঙ্গি সংগঠন আবারো সক্রিয় হচ্ছে। তাদের ধারণা, জঙ্গিরা রাজশাহীর রানীনগর, আত্রাইয়ের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাতায়াত শুরু করেছে। এখানে অবস্থান ও প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা যেকোনো এলাকায় হামলার পরিকল্পনা করতে পারে বলেও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার আশঙ্কা। পুলিশের ধারণা, প্রকাশক বাচ্চু হত্যায় জড়িতরাও উত্তরবঙ্গের কোনো এলাকায় ফিরে গেছে।

এ ব্যাপারে অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটপ্রধান পুলিশের অতিরিক্ত আইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জঙ্গিরা ঘাপটি মেরে আছে। তারা নির্মূল হয়ে গেছে- এ দাবি আমরা কখনোই করিনি। তবে হ্যাঁ, পুলিশি তৎপরতার মুখে তারা নিষ্ক্রিয় ছিল। এখন আবারো সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এসব ধোপে টিকবে না। যেখানেই জঙ্গি, সেখানেই অভিযান। বাংলাদেশে আর জঙ্গিরা সুবিধা করতে পারবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাচ্চু হত্যার প্রধান আসামি আবদুর রহমান বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে, বাকিরাও রেহাই পাবে না। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে- শিগগিরই ধরা পড়ে যাবে। রাজশাহীর দুর্গম অঞ্চলে তারা তৎপর হচ্ছে কি না- এ ব্যাপারে আমরা খোঁজ নেওয়া শুরু করেছি।’

পুলিশ জানায়, জেএমবির সামরিক কমান্ডার আবদুর রহমান প্রকাশক ও মুক্তমনা লেখক শাহজাহান বাচ্চুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ৩ মাস আগে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের খাসমহল এলাকার একটি বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করে সে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১১ জুন ইফতারের আগমুহূর্তে মধ্যপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কাকালদি তিন রাস্তার মোড়ে গুলি করে হত্যা করা হয় বাচ্চুকে। হত্যার ১৩ দিনের মাথায় ২৪ জুন গাজীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে আবদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার ঘরের আলমারি থেকে দুটি ৭.৬৫ পিস্তল, ২১ রাউন্ড গুলি ও রান্নাঘর থেকে চারটি তাজা গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়।

লালু, সাঈদ, আক্কাস ও কাওসার ছদ্মনাম ধারণ করে বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করত আবদুর রহমান। সে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থানার ঢাকাইয়া পাড়ার হোসেন আলীর ছেলে। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সে বাচ্চু হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। আবদুর রহমান পুলিশকে জানায়, বাচ্চু কিলিং মিশনে আরো ৫ জেএমবি সদস্য অংশ নেয়। ২০১৫ সাল থেকেই বাচ্চুর গতিবিধি লক্ষ্য করে হত্যার পরিকল্পনা করে আসছিল তারা। বাচ্চুকে জেএমবির সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে হত্যা করা হয়। গ্রেফতারের পর গত বুধবার রাতে পুলিশি অভিযানকালে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয় আবদুর রহমান।

গত ১২ জুন সিরাজদিখান থানায় শাহজাহান বাচ্চুর দ্বিতীয় স্ত্রী আফসানা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। বাচ্চু বিশাকা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ও মুন্সীগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads