• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
মাত্র ১০ হাজার টাকায় শিশু অপহরণ ও খুন!

সাত বছরের এক শিশু মামুন মিয়া

সংরক্ষিত ছবি

অপরাধ

মাত্র ১০ হাজার টাকায় শিশু অপহরণ ও খুন!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক, নরসিংদী
  • প্রকাশিত ১২ জুলাই ২০১৮

মাত্র ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে সাত বছরের এক শিশুকে। নিহত শিশুর বাবা প্রবাসী সুজন মিয়ার ব্যাংকে জমা রাখা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার লোভে তার শিশুপুত্র মামুন মিয়াকে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে শিশুটিকে দুই দিন অভুক্ত রেখে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ও গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হলো ভাড়াটে খুনি নাসির, হত্যার পরিকল্পনাকারী নিহত শিশুর বাবা সুজনের জেঠাতো ভাই জয়নাল মাস্টার ও তার ছেলে আরমান।

গতকাল বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিউর রহমান, গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ জানায়, রায়পুরার হাসিমপুর এলাকার সুজন মিয়ার ছোট ছেলে মামুন গত ২০ জুন বিকালে বাড়ির সামনের রাস্তায় খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে দফায় দফায় অচেনা নম্বর থেকে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন কৌশলে তার পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর প্রতিবেশী জয়নাল মাস্টারের তিনতলা বাড়ির ছাদে হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় মামুনের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সুজন বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় মামলা করেন। পরে মামলার তদন্তভার থানা থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত সন্দেহে জয়নাল মাস্টার, তার ছেলে আরমানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্যে রাজনগর এলাকার নাসির মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাসির শিশু মামুনকে হত্যার কথা স্বীকার করে। একই সঙ্গে হত্যার কারণ ও পরিকল্পনার বিবরণ দেয়।

জয়নাল মাস্টারকে শিশু মামুন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আখ্যায়িত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবদুল গাফফার পিপিএম বলেন, ‘তিনি মূলত বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করেন। সুজন মিয়াকেও তিনিই সৌদি আরবে পাঠিয়েছিলেন। এমনকি জয়নাল মাস্টারের মাধ্যমেই বিদেশ থেকে টাকা-পয়সা দেশে পাঠাতেন সুজন। তিনি দেশে ফিরে সব টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করে রাখেন। সেই টাকার লোভেই জয়নাল মাস্টার ছেলে আরমান এবং নাতি নরসিংদী মডেল কলেজের শিক্ষার্থী জিদান ও লিমনকে দিয়ে নাসিরকে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করে শিশু মামুনকে অপহরণ ও খুন করায়।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, নাসিরের দেওয়া তথ্যে জয়নাল মাস্টার, আরমান ও নাসিরকে গ্রেফতার করা হয়। তবে জিদান ও লিমন পলাতক। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads