বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ইয়ার্ড থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা আদৌ উধাও হয়েছে কি না সেটি যাচাইয়ে বিদেশি নিরীক্ষক দিয়ে নিরীক্ষণের দাবি তুললেন আসামিরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বড়পুকুরিয়া কয়লা দুর্নীতি মামলায় আরো ৯ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পৃথক জিজ্ঞাসাবাদে প্রায় অভিন্ন অবস্থান নেন আসামিরা।
সংস্থার উপপরিচালক সামছুল আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি কর্মকর্তারা হলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা উত্তোলন কোম্পানির উপব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) খলিলুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স) আবদুল মান্নান পাটোয়ারি ও গোপাল চন্দ্র সাহা, ব্যবস্থাপক (হিসাব) সারোয়ার হোসেন, ব্যবস্থাপক (সেলস ও রেভিনিউ কালেকশন) কামরুল হাসান, উপব্যবস্থাপক (মার্কেটিং ও কাস্টমার সার্ভিসেস) মোহাম্মদ নোমান প্রধানিয়া, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) একেএম সিরাজুল ইসলাম ও শরিফুল আলম এবং সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) আল আমিন।
দুদক সূত্র জানায়, ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন কয়লা ঘাটতির বিষয়ে তাদের পৃথক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দায়দায়িত্ব এবং অধিক্ষেত্র সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বলেন, কয়লার বিষয়ে এককভাবে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। তারা শুধু ওপরের নির্দেশনা অনুসরণ করেছেন। কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগও নেই। এটি হতে পারে সিস্টেম লস এবং হিসাবের গরমিল। এ ঘটনায় বিদেশি বিশেষজ্ঞ দিয়ে নিরীক্ষা করানোরও দাবি জানান তারা।
দুদক সূত্র জানায়, ৩২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে অনেক নতুন তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এর আলোকে প্রতিষ্ঠানটির আরো এক ডজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে। এ ছাড়া আরো কিছু রেকর্ডপত্রও সংগ্রহ করা হবে। এর ভিত্তিতে কমিশনে রিপোর্ট পেশ করবে।
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ইয়ার্ড থেকে ২৩০ কোটি টাকা মূল্যমানের কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় গত ২৪ জুলাই মামলা করে কর্তৃপক্ষ। মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়। তফসিলভুক্ত হওয়ায় মামলাটি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি টিম।
তদন্ত প্রক্রিয়ায় ১৯ আসামিসহ ২১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয় ৩২ জনকে।