• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
জাবি ক্যাম্পাসে মাদকের রমরমা ব্যবসা

জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

জাবি ক্যাম্পাসে মাদকের রমরমা ব্যবসা

  • জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মাদকদ্রব্য কেনাবেচার অভয়ারণ্য এখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। প্রতিষ্ঠানটির কিছুসংখ্যক কর্মচারী ও পরিচিত কয়েক চক্র এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তারা মাদক সংগ্রহ করে, সেবন করে এবং বিক্রি করে। ক্যাম্পাসে সহজেই মিলছে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক। এই সহজলভ্যতায় শিক্ষার্থীদের একটি অংশও আসক্ত হচ্ছে। ক্যাম্পাসে মাদক কেনাবেচা ও সেবন বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো তৎপরতা না থাকার অভিযোগ উঠেছে।

গত মে মাসে মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। ওই তালিকায় শিক্ষার্থীদের হাতে ইয়াবা পৌঁছে দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের পিয়ন ফারুক আহমেদ মামুন। গাঁজা, ফেনসিডিল ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের পিয়ন আবদুল খালেক। ক্যাম্পাসের পাইকারি ও খুচরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নিরাপত্তা শাখার (গার্ড) পলাশ।  মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকায় এই তিনজনের নাম  উল্লেখ করা হয়। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাইরে থেকে ক্যাম্পাসে যারা  মাদক সরবরাহ করে তাদের মধ্যে প্রভাবশালী চক্র হলো সন্দ্বীপের উজ্জ্বল ও ইসলাম নগরের নূর হোসেন ওরফে ‘কালা’।

গত ২১ আগস্ট ২০ পিস ইয়াবাসহ আটক হয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক অধ্যাপকের গাড়িচালক মো. জামাল। পরে তার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিস বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও লেনদেন হওয়া নগদ অর্থসহ রেজিস্ট্রার অফিসের পিয়ন ফারুখ আহমেদ মামুন ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের পিয়ন একরাম হোসেন মোল্লাকে আটক করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশে ওই রাতেই আটক তিনজনের নামে আশুলিয়া থানায় মামলা ও পরে তাদের জেলে পাঠানো হয়। ঈদের পর আদালতের প্রথম কর্ম দিবস তারা তিনজন জামিনে মুক্তি পায়। আটক হওয়া দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মাদক ব্যবসা চক্রের চিহ্নিত ব্যক্তি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পিয়ন আবদুল খালেক। ক্যাম্পাসের ভেতরে থেকে মাদক সেবনকারীদের কাছে কঠোর নিরাপত্তা ও সহজলভ্যভাবে মাদকদ্রব্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য বেশ নামডাক রয়েছে তার।

ক্যাম্পাসের আশপাশে বসবাসকারী মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে ৬ জন। তাদের মধ্যে সন্দ্বীপ গ্রামের মো. উজ্জ্বল, ইসলামনগর গ্রামের দোকানি মো. নূর হোসেন অন্যতম।

এই তালিকার বাইরে অনুসন্ধানে অন্তত ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মাদক ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগ রয়েছে।  ক্যাম্পাসের বাইরে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। যারা নিয়মিত ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে অঞ্চলগুলোয় মাদক সরবরাহ করছে। আর তাদের আশ্রয় দিচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ কয়েক নেতা।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগে সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ছাত্রলীগের কারো মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকলে আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) রহিমা কানিজ বলেন, আমরা ইতোমধ্যে আটক হওয়া কর্মচারীদের বরখাস্ত করেছি এবং ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ঘটনার তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads