• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
সাতক্ষীরায় সহকারী শিক্ষক পদায়নে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

সহকারী শিক্ষক পদায়নে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

অপরাধ

সাতক্ষীরায় সহকারী শিক্ষক পদায়নে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

  • সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষক পদায়নে কয়েক লাখ টাকা ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের পছন্দমতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদায়ন দিতে আদায় করা হয়েছে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নামে এ টাকা গ্রহণ করেছেন অফিসের প্রধান সহকারী শেখ গোলাম মোস্তফা ও ক্যাশিয়ার জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিক। তবে তাদের দাবি, এ বছর পদায়নের বিষয়ে তাদের কোনো হাত নেই। যা করার সরাসরি ডিপিইও স্যার করেছেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের স্মারক নম্বর প্রাশিআ / ৭ (নিয়োগ) সশিনি (রাজস্ব) ২০১৪ / ২৪৯, তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ খ্রি. অনুসারে জেলায় ১২১ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য চূড়ান্ত করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ২১জন, কালিগঞ্জে ৯জন, কলারোয়ায় ৭জন, আশাশুনিতে ২৫জন, দেবহাটায় ২জন ও শ্যামনগরে ৩৯ জন। এদিকে এদেরকে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে যোগদান করার জন্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্দেশের কপি ১৬ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষর করলেও তা স্ব-স্ব উপজেলায় পাঠানো হয় ২৩ সেপ্টেম্বর।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে সব বিদ্যালয়ে শিক্ষক শূন্য রয়েছে সে সব বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক না দিয়ে টাকা নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। এসব শিক্ষককে জেলার বাইরে বদলি, দুর্গম এলাকায় পদায়না, টাকা ছাড়া কিন্তু ডিপিইও স্যার সই করবে না- এমন ভয়-ভীতি দেখিয়ে শিক্ষা অফিসের ওই দুই কর্মচারী টাকাগুলো আদায় করেছেন।

তবে এই দুই কর্মচারীর দাবি করেছেন, এ বছর পদায়ন বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।
তারা বলেন, যারা পদায়নের বিষয়ে আলোচনা করতে এসেছে তাদের সরাসরি ডিপিইও স্যারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এবার বিষয়টি তিনি নিজেই দেখেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক সংকট প্রকট। সেই সব বিদ্যালয়ের কথা চিন্তা না করে টাকা নিয়ে বদলি দেওয়া হয়েছে। এমন অনেক বিদ্যালয় আছে যেখানে শিক্ষক সংকট নেই। সেখানেও দেওয়া হয়েছে শিক্ষক। সাতক্ষীরা পৌর এলাকার ঐতিহ্যবাহি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে শিক্ষক সংকট প্রকট। সেখানেও দেওয়া হয়নি শিক্ষক।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের প্রধান সহকারী শেখ গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি কোনো টাকা গ্রহণ করিনি। তবে জাহাঙ্গীর সাহেবের কথা আমার জানা নেই।

এদিকে জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি বলেন, এ বছর এমন কোনো সুযোগ পাইনি। আমার কাছে যারা এসেছিল তাদের ডিপিইও স্যারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহল আমিন শিক্ষক সংকট থাকা বিদ্যালয়ে শিক্ষক না দেওয়ার কথা স্বীকারও করে বলেন, এটি নিয়ে বিচলিত হওয়ার দরকার নেই। জেলার বাইরে প্রায় ১২১ জন পুল শিক্ষক আছে। তারা খুব দ্রুত সাতক্ষীরায় যোগদান করবে। তখন যে সব বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে সে সব বিদ্যালয়ে শিক্ষক দেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, পদায়নের কথা বলে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিয়ম মেনেই পদায়ন দেওয়া হয়েছে।

এক সপ্তাহ বিলম্বে উপজেলায় চিঠি পাঠানো সংক্রান্ত বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, স্বাক্ষরের পরেও কিছু ভুল ছিল। সেগুলো ঠিক করতে একটু সময় লেগেছে। তাই দেরিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আর কিছু না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads