• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
মেঘনার দূর্গম চরে নিয়মিত বসছে মা ইলিশের হাট

চাঁদপুরের পশ্চিমাঞ্চলে মেঘনা রচরে আসাধু জেলেরা মা ইলিশ বিক্রয় করছে

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

মেঘনার দূর্গম চরে নিয়মিত বসছে মা ইলিশের হাট

  • মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ
  • প্রকাশিত ২০ অক্টোবর ২০১৮

চাঁদপুর সদরের আনন্দ বাজার, হরিনাঘাট ও মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে নিয়মিত বসছে ইলিশের হাট। চরউমেদ ও বোরচরে রাতে জমজমাট ইলিশের হাট বসলেও দিনের বেলাও হাট বসতে দেখা যাচ্ছে। এসব এলাকায় সন্ধ্যার পূর্ব মূহুর্তে ও সকাল ভোরে ইলিশের হাট বসতে দেখা যায়।

প্রশাসন মা ইলিশকে রক্ষার জন্যে মেঘনা নদীসহ পূর্ব অঞ্চলে অভিযান চালালেও মেঘনর পশ্চিম অঞ্চল দূর্গম হওয়ায় এলাকাটি থাকে অভিযানের বাইরে। এ সুযোগে অসাধু জেলেরা নির্দ্বিধায় মা ইলিশ ধরছে এবং তা বিক্রি করছে কম দামে। এদের সাথে স্থানীয় রাজনৈতিক কিছু নেতা-কর্মী জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে চরউমেদের নদীর পাড়ে ৪টি এবং চরকাশিমে ৫টি মাছের আড়ত রয়েছে। এখানে ইলিশ বেচাকেনা হচ্ছে উৎসব মুখর পরিবেশে। উপজেলার মূল ভূখন্ডের মেঘনা নদীর পাড়ের স্থায়ী মৎস্য আড়ৎগুলো বন্ধ থাকলেও লঞ্চঘাটগুলোর সংলগ্ন অঞ্চল, মেঘনার পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থানে বিক্রি হচ্ছে এই মা ইলিশ। এছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়েও মা ইলিশ ফেরি করে বিক্রি তো হচ্ছেই।

দিনের বেলাতে মেঘনা নদীর পূর্ব অঞ্চলের জেলেদের মাঝে পুলিশি আতঙ্ক থাকলেও সন্ধ্যার পর পুলিশি আতঙ্ক কেটে যায়। তবে মেঘনা নদীর পশ্চিমাংশের নদীতে পুলিশি অভিযান না থাকায় জেলেদের কোনো রকমের ভয় কাজ করে না। সেখানে মা ইলিশ রক্ষাকারী মতলব উত্তর উপজেলার টাস্কফোর্স তেমন একটা যায় না বললেই চলে। ফলে মেঘনায় জেলেরা এ সুযোগে নির্দ্বিধায় প্রজননের জন্যে আসা মা ইলিশগুলো ধরছে। আর এর নেপথ্যে কাজ করছে স্থানীয় কিছু অর্থলোভী প্রভাবশালী লোক। যাদের সাহস যোগানোর কারণেই জেলেদের বড় একটি অংশ এ কাজে উৎসাহ পাচ্ছে। সন্ধ্যার পর মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে মা ইলিশ শিকার ও বিক্রির উৎসবমুখর দৃশ্য দেখলে যে কারোর মনেই জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।

মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন জানান, উপজেলার ষাটনল থেকে আমিরাবাদ পর্যন্ত এতো বিশাল অঞ্চলে ২২ দিন দেখাশোনার জন্যে সরকারি বরাদ্দ খুবই কম। অঞ্চল ও কাজের তুলনায় যা খুবই সামান্য। তারপরেও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে স্পীডবোট হলে অভিযান পরিচালনা করা সহজ হতো, ট্রলার দিয়ে নদীতে কাজ করা অনেক কঠিন। কেননা, জেলেদের ট্রলারের অনেক গতি। আগে কোস্টগার্ড থাকলেও আমার উপজেলায় এবার কোস্টগার্ডের কোনো ক্যাম্প নেই।

এদিকে জেলা প্রশাসনের নিয়মিত অভিযানে শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) রাজরাজেশ্বর মেঘনা নদীতে অভিযানের মধ্য জেলেদের ইলিশ কেনার একটি গোপন ট্রলার জব্দ করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমার নেতৃত্বে উপজেলা টাস্কফোর্স। এসময় ট্রলার থেকে প্রায় ৫ মন ইলিশসহ জব্দ করেন। পরে ট্রলারটি মেঘনার মাঝ নদীতে ডুবিয়ে দেয়া হয়। সফল এ অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে কোস্ট গার্ড ও গণমাধ্যম কর্মীরা সহযোগিতা করেন।

শুক্রবার রাতে মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় মেঘনা নদীতে অভিযানে নামে জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মেঘনা ও পদ্মাসহ বিভিন্ন নদীতে ২২ দিন ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads