• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
প্রতারনা করে দলিল রেজিষ্ট্রির সময় নারীসহ আটক ২

দলিল রেজিষ্ট্রির সময় আটককৃতরা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

প্রতারনা করে দলিল রেজিষ্ট্রির সময় নারীসহ আটক ২

  • শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৯ নভেম্বর ২০১৮

মুন্সীগঞ্জ শ্রীনগরে ইউপি সদস্য ও দলিল লিখকের যোগ সাজশে ভূয়া ওয়ারিশ সেজে দলিল সম্পাদন করার সময় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নারী। পরে আটক ওই নারী-পুরুষকে শ্রীনগর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে শ্রীনগর সাব- রেজিস্ট্রি অফিসে এ ঘটনা ঘটে। আটককৃতরা হচ্ছেন,  সামছুন্নাহার ও পরিমল মন্ডল।

সাব রেজিষ্ট্রার আব্দুল খালেক জানান, উপজেলার হাসাড়া ইউনিয়নের হাসাড়া মৌজার এস.এ ৪৭৮ ও আর.এস ১২৫৭ নং খতিয়ানের এস.এ ৩৪৭৮ ও আর এস ৫৮৩৪ নং দাগে ১০ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হলেন হাসাড়া গ্রামের পূর্নচন্দ্র ঘোষাল। যাহার নামজারী কেস নং-৮৭৫৭। দলিল রেজিষ্ট্রি করতে একই ইউনিয়নের সামছুন্নাহার হাসাড়া ইউনিয়নের পূর্নচন্দ্রের সম্পত্তির ভূয়া ওয়ারিশ সাজিয়ে আনেন জেলে পাড়ার কালীপদ মন্ডলের ছেলে পরিমল মন্ডল (৬৫)কে। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে পরিমল মন্ডলকে ওয়ারিশ বানিয়ে সামছুনাহার তার বোন শামীমা মুক্তার নামে ৭ শতাংশ জায়গা ৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা মুল্যে শ্রীনগর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল রেজিষ্ট্রী করতে আসে। সামছুন্নাহারের কাছ থেকে জানা যায়, পরিমল মন্ডলের ভূয়া জন্মনিবন্ধন তৈরী করতে হাসাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ইউপি সদস্য মমিন শেখ তার ছেলে আল-আমিনকে দিয়ে এ ভূয়া জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটটি তৈরী করিয়ে দিবেন এবং সার্টিফিকেটটি অনলাইনে যাচাই করলেও পাওয়া যাবে মর্মে  মোটা অংকের টাকা চুক্তি হয়েছিল। সামছুন্নাহার আরো জানান, এই জাল সার্টি ফিকেটটি দিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রি করতে দলিল লিখক আব্দুল গফুর ও তার ছেলে শেখ মুকুল (ইউসুপ) এর সাথেও মোটা অংকের টাকার চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক দলিল লিখক আব্দুল গফুর ও তার ছেলে শেখ মুকুল (ইউসুফ) ভূয়া ওয়ারিশের দলিলটি করতে গেলে সাব রেজিষ্ট্রার আব্দুল খালেকের সন্দেহ হয়। পরবর্তিতে তিনি জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটটি বিভিন্ন ধরনের যাচাই-বাছাই করে দেখতে পান সম্পত্তিটির মূল মালিকের নাম পূর্নচন্দ্র ঘোষাল। ভূয়া জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটটি ওয়ারিশের নাম দেওয়া হয়েছে পরিমল মন্ডল । সাথে সাথে তিনি সামছুন্নাহার ও পরিমল মন্ডলকে তার কক্ষে বসিয়ে রেখে শ্রীনগর থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে আব্দুল গফুর, তার ছেলে শেখ মুকুল (ইউসুপ), পরিমল মন্ডল ও সামছুন্নাহারকে থানায় নিয়ে আসেন। ভূয়া রেজিষ্ট্রি দলিল করানোর মার-প্যাচ ও নিজ লাইসেন্স বাচাঁনোর জন্য দলিল লিখক মুকুল (ইউসুপ) শ্রীনগর থানায় এ ব্যপারে অভিযোগ করেছেন বলে অন্যান্য দলিল লিখকদের অভিযোগ। এছাড়া কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছারাই মাত্র ১৮ বছর বয়সে মুকুল একজন দলিল লিখক হিসেবে সনদ করিয়েছেন।

এ সম্পর্কে  শ্রীনগর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে প্রতারনা করে দলিল রেজিষ্ট্রির ব্যপারে দলিল লিখক সভাপতি পরিমল চক্রবর্তি(বাহাদুর) কছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী অন্তত পাঁচ বছর পর্যন্ত একজন দলিল লিখকের সহকারী হিসেবে কাজ করতে হবে।  আর এ বিষয়ে কম বেশী দলিল লিখক জড়িত না থাকলে এমন কাজ করতে কেউ সাহস পায়না। এছাড়া এ বিষয় জাল জন্মনিব্ধন তৈরী বিষয়ে হাসাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোলায়মান খান বলেন, ‘কেউ জন্ম নিবন্ধন নিতে এলে , জন্মনিবন্ধন দেওয়ার পূর্বে ওয়াডের্র মেম্বারদের যাচাই-বাচাইয়ের পর জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট  স্বাক্ষর করা হয়। ঠিক তেমনি পাঁচ নং ওয়ার্ড মেম্বার মমিন আলী শেখ ওয়ারিশ সম্পর্কে যাচাই বাচাই করার পর আমাকে স্বাক্ষর দিতে বললে আমি স্বাক্ষর করে সার্টিফিকেটটি দিয়ে দেই’।

এ ব্যপারে শ্রীনগর থনার অফিসার ইনচার্জ ইউনুচ আলীর কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন ভূয়া জন্মনিবন্ধন দিয়ে দলিল সম্পাদন করার দায়ে দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাদের আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads