• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইয়াবার আধিপত্য

ইয়াবা

সংরক্ষিত ছবি

অপরাধ

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইয়াবার আধিপত্য

# ব্যাপক চাহিদা সহজলভ্যতা # মাদক ব্যবসায়ীদের জামিন পেয়ে যাওয়া

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ নভেম্বর ২০১৮

লাভ হচ্ছে না ইয়াবার লাগাম টেনে ধরেও। আগের মতোই পাগলা ঘোড়ার গতিতে চলছে ইয়াবার আধিপত্য। গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত জামিন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যের কারণে নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না এই মরণনেশা। অবশ্য বিশ্লেষকদের মতে, ইয়াবার ব্যাপক চাহিদা এবং সহজলভ্যতার কারণে ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সূত্র জানায়, ইয়াবা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নীতি নির্ধারক মহল আন্তরিক। কিন্তু শর্ষে ভূত থাকার মতো খোদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এই পেশার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। অতি মুনাফা এবং স্বল্প সময়ে ধনী হতে পুলিশ সদস্যরা কেউ কেউ নিজেরা সরাসরি আবার কেউ পরোক্ষভাবে এ ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছেন। গত ৩ মাসে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ফেনী, কুমিল্লা ও রাজধানীতে ইয়াবা পরিবহনকালে পুলিশ বাহিনীর ১০ সদস্য হাতেনাতে ধরা পড়েছে। এদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে।

সম্প্রতি এ ব্যাপারে একটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে ‘পুলিশের মধ্যেও মাদক  চোরাকারবারে জড়িত কিছু লোক আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম  মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেছেন, আমি অস্বীকার করব না আমাদের পুলিশ বাহিনীতে পাঁচ-দশজন লোক নেই যারা মাদক চোরাকারবারে জড়িত না। আমরা তাদের আইডেন্টিফাই করতে চাই। যারা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আমি তাদের ওউন করি না। আমার পুলিশ ব্যর্থ হতে পারে, কিন্তু কেউ ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকবে এটা হতে পারে না। গত মার্চে দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৭০ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়। গ্রেফতার করা হয় প্রায় ৩ হাজার জনকে। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুলিশ অনেকটাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় ব্যস্ত হওয়ায় মাদকবিরোধী অভিযানে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে জামিনে বের হওয়া এবং পলাতক মাদক ব্যবসায়ীরা। আগে রাজধানীর ৩ শতাধিক স্পটে ইয়াবা বিক্রি হতো। এখন হচ্ছে কমপক্ষে দেড় শতাধিক স্পটে। বেশি মুনাফা এবং চাহিদা থাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিয়ে হলেও ব্যবসা অব্যাহত রাখছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এর উৎস বন্ধ করতে হবে। আর উৎস বন্ধ করতে হলে- সীমান্ত রক্ষীদের আরো কঠোর হতে হবে। আরেকটা পথ আছে মিয়ানমার সরকারকে লিখিত জানানো সীমান্ত এলাকায় কোনো কারখানা রাখা যাবে না। ইয়াবা কারখানা সীমান্ত এলাকা থেকে সরাতে হবে।

এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। সরকারের একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমার সরকারকে ইয়াবা পাচার বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।

র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ হয়েছে- নির্মূল হয়নি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আরো নিয়ন্ত্রণ করার। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ভর করে এটা রোধ করা কঠিন ব্যাপার। মাদকের কুফল সম্পর্কে যার যার অবস্থান থেকে সোচ্চার হতে হবে। হয়তো আমরা মাদকমুক্ত দেশ বা সমাজ গড়ে তুলতে পারব না। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ হলে-মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে মাদকের ভয়াবহতা রোধ করতে পারব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads