• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
নয়াপল্টনে হামলায় হুকুমের আসামি মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির ৬ নেতা

নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশের গাড়ি পোড়ানোর দৃশ্য

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

৩ মামলায় গ্রেফতার ৬৮

নয়াপল্টনে হামলায় হুকুমের আসামি মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির ৬ নেতা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ নভেম্বর ২০১৮

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাগুলো হলো ২১, ২২ ও ২৩ নম্বর। তিন মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ছয় নেতাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যাত্রাবাড়ী বিএনপির সভাপতি নবীউল্লাহ নবী, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আকতারুজ্জামান এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কফিল উদ্দিন। পুলিশের অভিযোগ, তাদের মদদে ও নির্দেশে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে সরকারি কাজে বাধা, জানমালের ক্ষতি, ককটেল বিস্ফোরণ ও গাড়ি পুড়িয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হয়। ইতোমধ্যে মামলা তিনটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, মিডিয়া উইং শামসুদ্দিন দিদার, দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নিপুণ রায়, যুবদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মজনু, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমাসহ অনেকে।

গত বুধবার রাতে ২১ নম্বর মামলাটি দায়ের করা হয় বিস্ফোরক ও বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনে। ১৯২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত সহস্রাধিক বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীকে ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় ইতোমধ্যে ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিশেষ আইনে দায়ের ২২ নম্বর মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৫৯ জনকে। এ মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ২৩ জনকে এবং বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনে করা ২৩ নম্বর মামলায় ১৩৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ২৬ জনকে। সব মিলে তিন মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ৬৮ জনকে। গত বুধবার রাতে মামলা দায়েরের পর গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

২১ নম্বর মামলার এজাহারে বলা হয়, নির্বাচনী আচরণবিধির নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রথমে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের নেতৃত্বে  নেতাকর্মীরা ব্যান্ডপার্টি-ব্যানার-ফেস্টুনসহ শোডাউন নিয়ে বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে আসে। এরপর নবীউল্লাহ নবী ও কফিল উদ্দিনের নেতৃত্বে পৃথক মিছিল শোডাউন নিয়ে আসে। পরে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ৮-১০ হাজার নেতাকর্মী মিছিল সহকারে কার্যালয়ে আসে। তারা নয়াপল্টনের ভিআইপি সড়ক বন্ধ করে মিছিল ও শোডাউনের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ তৈরি ও যান চলাচল বন্ধ করে। তাদের রাস্তার এক লেন ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হলে তারা ক্ষিপ্ত হয়। আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি রুহুল কবির রিজভীকেও জানানো হয়। মাইকেও বলা হয়। এরপর বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে কার্যালয়ের পাশের সড়কে অবস্থান নেয়। তাদের পার্টি অফিস থেকে লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় দাঙ্গা করে পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। প্রায় একই ধরনের অভিযোগ বাকি দুই মামলার এজাহারেও উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে ২২ নম্বর মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১-৬ নম্বর আসামিসহ পার্টি অফিসে উপস্থিত অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদ, নির্দেশ ও অর্থায়নে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল ও দেশে অস্থিতিশীল এবং নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরির অসৎ ও অভিন্ন উদ্দেশ্যে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তায় দাঙ্গা করে পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ, সরকারি কাজে বাধা, লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল দিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করে মারাত্মক জখম, পুলিশের যানবাহন পুড়িয়ে কার্যক্ষমতা ব্যাহতের চেষ্টা করা হয়।

২৩ নম্বর মামলায় উল্লেখ করা হয়, তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করে যে, তারা ওই ছয়জনসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে ও মদদে পলাতক এজাহারনামীয় আসামিসহ আরো অনেককে নিয়ে পুলিশের মনোবল ভেঙে আসন্ন সংসদ নির্বাচন বানচাল এবং অস্থিতিশীল ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরির অসৎ ও অভিন্ন উদ্দেশ্যে এসব ঘটনা ঘটানো হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান জানান, যারা গাড়ি পুড়িয়েছে তাদেরকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার ওই তিনটি মামলা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (পূর্ব বিভাগ) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের নির্দেশের কথা জানিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার খন্দকার নুরুন্নবী বলেন,  পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছি।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads