• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

অপরাধ

রাজধানীতে ‘গর্ভপাতের’ অপরিণত শিশু মারা গেল হাসপাতালে

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ১৭ নভেম্বর ২০১৮

রাজধানীর গেণ্ডারিয়ার স্বামীবাগে কাপড়ের ব্যাগের ভেতর থেকে শুক্রবার সকালে অপরিণত একটি শিশু উদ্ধার করা হয়। পরে জরুরিভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মাত্র ৭৯০ গ্রাম ওজনের শিশুটিকে। সেখানে দুপুরে  মারা যায় ওই শিশুটি। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে নবজাতকটি মারা যায়। এর আগে সকালে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকার একটি বাসার সামনে পরিত্যক্ত কাপড়ের ব্যাগে কিছু একটা নড়াচড়া করতে দেখা যায়। ব্যাগটি খুলে ভেতরে পাওয়া যায় জীবন্ত নবজাতক। রোমানা আক্তার নামের স্থানীয় এক গৃহবধূ পুলিশের সহায়তায় নবজাতকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঢামেক হাসপাতালের ২১১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাকে। তবে দুপুরের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নবজাতকটি পেটের ভেতরে ২২ থেকে ২৪ সপ্তাহ ছিল। তার ওজন ৭৯০ গ্রাম। নাভিতে একটি ক্লিপও লাগানো ছিল। তাদের ধারণা, কোনো একটি ক্লিনিকে গর্ভপাত ঘটানোর পরে নবজাতকটিকে সেখানে ফেলে যাওয়া হয়েছে।

নবজাতকটিকে হাসপাতালে আনা রোমানা জানান, তিনি ৩৫ নম্বর স্বামীবাগের বাসিন্দা। বাসার সামনে হলুদ ও নেভি ব্লু রঙের একটি কাপড়ের ব্যাগে নবজাতকটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। তিনি বলেন, কুকুর-বিড়ালের বাচ্চা এভাবে অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকলেও মানুষ এগিয়ে আসে। সামাজিক ও মানবিক দায়বোধ থেকে বাচ্চাটিকে বাঁনোর চেষ্টা করেছি। কারা, কী কারণে বাচ্চাটিকে ফেলে গেছে সেটি খুঁজে বের করা দরকার।

এ বিষয়ে গেণ্ডারিয়া থানার ওসি কাজী মিজানুর রহমান জানান, সকালে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ব্যাগটি কারা ফেলে গেছে, আশপাশের সিসি ক্যামেরা দেখে তা শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, শুধু সিসি ক্যামেরা নয়-আমরা সোর্স নিয়োগ করে নবজাতক হত্যাকারীকে বের করে শাস্তির আওতায় আনার চেষ্টা করব।

আইনজীবী ও মানবাধিকার সংগঠক অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে নবজাতকটিকে চলন্ত রিকশা থেকে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। তার শরীর ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখে তাই মনে করা হচ্ছে।  তিনি বলেন, কারো রাইট নেই এ রকম কিছু করার। এতিমখানা আছে-হাসপাতাল আছে ভরণ পোষণ করতে বা সন্তানের জন্ম দেওয়ার বিষয়ে কোনো লোকলজ্জার ব্যাপার থাকলে ভিন্নভাবে সমাধান করার বহু পথ খোলা আছে। পুলিশের উচিত যারা একাজ করেছে তাদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা। এসব অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads