কুমিল্লার লাকসামে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসা বাড়িতে হামলা, ভাংচুর এবং পিকআপ ভ্যান যোগে মালামাল লুটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের চরবাড়ীয়া গ্রামে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এছাড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক আমান উল্লাহ আমানকে বেধরক মেরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ করছেন তার স্বজনরা।
লাকসামের বিএনপির নেতাকর্মী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধায় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান লাকসাম পৌরশহর সংলগ্ন নরপাটি বাজারের চা খাচ্ছিলেন। তখন স্থানীয় ছাত্রলীগের ২০/২৫ জনের একটি দল তাকে বেধরক পিটিয়ে আওয়ামী লীগ অফিসে আটকে রাখে। পরবর্তীতে লাকসাম থানা পুলিশকে খবর দিয়ে আমানকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এই ঘটনার পর গোবিন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আবুল কালামকে লাকসাম পৌর সদরের জগন্নাথ বাড়ী এলাকায় যুবলীগ ছাত্রলীগের এক গ্রুপ তাকে আটক করে তাকেও বেধম মারধর করে। এরপর কালামকে লাকসাম বাজারের গরু বাজার এলাকায় গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে যায় তারা। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা শহরের হাসপাতালে প্রেরণ করে।
আজগড়া ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতার স্ত্রী ওম্মে কুলসুম অভিযোগ করেন, তার বাড়ী সাফিয়া মঞ্জিলে রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালায় ওই ইউপির চেয়ারম্যান রুহুল আমিনের নেতৃত্বে আবুল মেম্বার, যুবলীগ নেতা সোহাগ, জসীম, ছাত্রলীগ নেতা জামসেদ, বিল্লালসহ ৪৫/৫০ জনের একটি দল। তারা আলমিরা, শোকেচ, টিভি, সোফা,ও ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ও লুটপাট চালিয়ে নগদ ৩০ লাখ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণ অলংকার নিয়ে যায়।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আজগরা ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন।
লাকসাম উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও লাকসাম পৌরসভার মেয়র মো. আবুল খায়ের বলেন, শুক্রবার যুবলীগ-ছাত্রলীগ কোথায়ও হামলা করেছে বলে আমার জানা নেই। আমরা এখন সবাই উৎসবের আমেজে নির্বাচনের কাজ করছি। বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই এবং একটি ইস্যূ তৈরী করার জন্যই এমন মিথ্যা ও বানোয়াট কথা বলছে।
লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোজ কুমার দে জানান, সাবেক ছাত্রদল নেতা আমান এলাকায় মারামারি করছিল। স্থানীয়রা ধরে পুলিশের কাছে দেয়। থানায় এনে রাতে আমরা তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করি। আর অন্য কোন হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা তিনি জানেন না। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
