• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
স্বামীকে টুকরা করার বর্ণনা স্ত্রীর

রফিকুলের স্ত্রী জেবুন নাহার

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

স্বামীকে টুকরা করার বর্ণনা স্ত্রীর

  • গাজীপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৭ জানুয়ারি ২০১৯

পাঁচ বছর আগে ফুলপুর উপজেলার উলামাকান্দা গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বিষমপুর গ্রামের চানমিয়ার দ্বিতীয় মেয়ে জেবুন নাহারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। মারিয়া আক্তার রোজা (৪) নামের তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। প্রায় আড়াই বছর ধরে শ্রীপুরের গড়গরিয়া মাস্টারবাড়ি গিলারচালা আবদুল হাইয়ের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীসহ ভাড়া থাকেন। পৌর এলাকার হাউ আর ইউ কারখানার লোডার হিসেবে কাজ করেন রফিকুল। অন্যদিকে জেবুন নাহার মেঘনা কম্পোজিট লিমিটেডে সুইং অপারেটর হিসেবে চাকরি করেন। গত কয়েক মাস ধরে কারখানার বেতন পাওয়া নিয়ে রফিকুল তার স্ত্রীকে সন্দেহ করতে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এ নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। বিষয়টি হাতাহাতি পর্যায়েও গড়াত।

গত বৃহস্পতিবার ভোরে এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে স্ত্রী জেবুন নাহারকে থাপ্পড় মারেন স্বামী রফিকুল। এ থেকে ক্ষোভের বশে সকালে স্বামী যখন ঘুমিয়ে তখন প্রথমে রফিকুলকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ঘরের ওয়ার্ডরোবে লুকিয়ে রাখেন তিনি।

পরে লাশের পরিচয় যেন শনাক্ত না হয় সেজন্য কারখানা থেকে বাসায় ফিরে রাত ১১টার দিকে মরদেহ বটি দিয়ে পা, হাত ও মাথা কেটে ৬ টুকরো করেন তিনি। একপর্যায়ে রাত আড়াইটার দিকে মাথা ও হাত ময়লার ড্রামে, শরীর বস্তার ভেতর এবং পা টয়লেটের পাশে ফেলে দেন।

গতকাল শনিবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর গাজীপুর নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান। গত শুক্রবার রাতে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লোমহর্ষক ওই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন জেবুন নাহার।

জিজ্ঞাসাবাদে জেবুন নাহার জানান, বৃহস্পতিবারও তাদের হাতাহাতি হয়। পরে রাতে ঘুমের মধ্যে প্রথমে স্বামীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপরে মাথা ও দুই হাতের কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে রফিকুলের ইসলামের লাশ বস্তায় ঢোকান। এরপর শ্রীপুর পৌরসভার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকার মেঘনা পোশাক কারখানার পশ্চিম পাশের সীমানাপ্রাচীরের পাশে লাশের বস্তা ফেলে কাজে যান জেবুন নাহার।

গত শুক্রবার দুপুরে শ্রীপুর পৌরসভার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকার মেঘনা পোশাক কারখানার পশ্চিম পাশের সীমানাপ্রাচীরের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

শ্রীপুর থানার এসআই শহীদুল হক মোল্লা জানান, কারখানার পশ্চিম পাশে বস্তা পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বস্তা উদ্ধার করে মাথা ও দুই হাতের কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন রফিকুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে। পরে নিহতের বাড়ির ময়লার ড্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা ও দুই হাত উদ্ধার করা হয়। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads