• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
'ক্রাইম পেট্রোল' দেখে ভাবিকে হত্যা

ছবি: ইউএনবি

অপরাধ

'ক্রাইম পেট্রোল' দেখে ভাবিকে হত্যা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

গত ৭ ফেব্রুয়ারি হাসিনা বেগম গার্মেন্টস থেকে বাসায় ফিরে তার ঘরের পাশে রান্নাঘরে খাওয়ার পানি গরম করতে যায়। এই অবস্থায় দেবর ফরহাদ হোসেন লিমন টিভি দেখার কথা বলে তার ঘরে যায়। পরে হাসিনা বেগম নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়লে লিমন ঘুমন্ত অবস্থায় দুই হাত দিয়ে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে তাঁর ভাবিকে হত্যা করে। পরে তাঁর শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার, মোবাইল নিয়ে হাসিনার লাশ বাসার বাইরে আরেকটি কক্ষে তালা দিয়ে রেখে পালিয়ে যায় লিমন।

চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানা এলাকায় ভাবিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে দেবর মো. ফরহাদ হোসেন লিমন (২২)।

আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম। খবর বার্তা সংস্থা ইউএনবির।

তিনি বলেন, ‘ভাবি হাসিনা বেগমের কাছে টাকা চেয়ে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে খুন করে স্বর্ণালঙ্কারসহ দামি জিনিসপত্র নিয়ে যায় লিমন। এরপর এ ঘটনাকে চুরি হিসেবে প্রমাণের চেষ্টাও চালিয়েছে সে।’ আর এসব পরিকল্পনা ধারাবাহিক হিন্দি সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল দেখে শিখেছে বলে স্বীকার করেছে লিমন। 

আসামি লিমন চাঁদপুরের পাইকপাড়া এলাকার আবুল কাশেম পাটোয়ারীর ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, নগরীর আকবরশাহ থানাধীন কালিহাট এলাকার ইদ্রিস সওদাগরের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন হাসিনা বেগম। হাসিনা বেগম নোয়াখালীর শফিগঞ্জ এলাকার পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের মেয়ে। তিনি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। তার স্বামী সৌদি প্রবাসী এবং ছেলে আবির হোসেন (১২) পাহাড়তলী নেছারিয়া মাদ্রাসার হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছে। একই বিল্ডিংয়ে ব্যাচেলর হিসেবে থাকতো তার দেবর মো. ফরহাদ হোসেন লিমন।

লিমনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি হাসিনা বেগম গার্মেন্টস থেকে বাসায় ফিরে তার ঘরের পাশে রান্নাঘরে খাওয়ার পানি গরম করতে যায়। এই অবস্থায় দেবর ফরহাদ হোসেন লিমন টিভি দেখার কথা বলে তার ঘরে আসে। পরে হাসিনা বেগম নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়লে লিমন ঘুমন্ত অবস্থায় দুই হাত দিয়ে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে তার ভাবিকে হত্যা করে। পরে তার শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার, মোবাইল নিয়ে হাসিনার লাশ বাসার বাইরে আরেকটি কক্ষে তালা দিয়ে রেখে পালিয়ে যায় লিমন।

এ ঘটনায় হাসিনার ভাই মো. মানিক বাদী হয়ে আকবরশাহ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেখানে তিনি বোনের দেবর ফরহাদ হোসেন লিমনকে হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্দেহজনক দায়ী করেন। পুলিশ গত ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

রিমান্ডে লিমন পুলিশকে হত্যার দায় স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য দেন।

লিমন জানায়, ক্রাইম পেট্রোলে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের কেস স্টাডি দেখে ভাবিকে খুন করে এ ঘটনাকে চুরি হিসেবে সাজাতে চেষ্টা করে সে।

পুলিশ তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১ জোড়া বড় স্বর্ণের দুল, ২ জোড়া ছোট স্বর্ণের কানের দুল, ১টি স্বর্ণের নাকের নথ, স্বর্ণের বেসলেট ১টি, ১ জোড়া ছেঁড়া স্বর্ণের চেইন, ১টি স্বর্ণের লকেট, ১ জোড়া রূপার পায়ের নুপুর উদ্ধার করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মো. কামরুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (পাহাড়তলী জোন) পংকজ বড়ুয়া, আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads