• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪২৮
চৌদ্দগ্রামে খাটি বলে বিক্রি হচ্ছে ‘ভেজাল মধু’

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

প্রতারিত হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ

চৌদ্দগ্রামে খাটি বলে বিক্রি হচ্ছে ‘ভেজাল মধু’

  • মো. এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা)
  • প্রকাশিত ১০ মার্চ ২০১৯

মধু খেতে সকলেরই মন চায়। কিন্তু সেই মধু আসল না নকল চেনার কোন উপায় আছে? উপায় না জানায় প্রতিনিয়ত ধোকার শিকার হচ্ছেন মধু খেতে আগ্রহী অসংখ্য মানুষ। কতিপয় চক্র মানুষকে আসল মধু বলে নকল মধু বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। সরকার ঘোষিত মৌ মেলার প্রথম দিন রোববার দুপুরে এমন প্রতারণার শিকার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার ফালগুনকরা গ্রামের কয়েকজন যুবক। পরে বিকেলে তারা ‘সুমন’ নামের এক মধু বিক্রেতাকে আটক করে। তাকে মারধরের হুমকি দিলে সে জানায়, চিনির সিরা, ক্ষতিকর রং, ফিটকারি ও মেডিসিন মিশিয়ে মধু তৈরি করা হয়। পরে আসল মধু বলে সেগুলো বিক্রি করে তাঁর মত অসংখ্য মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে। কথা স্বীকার করার পর মধু যুবকরা পাশ্ববর্তী দীঘির পাড়ে তার সবগুলো মধু ঢেলে দেয়।

বিভিন্ন সুত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, প্রতিদিনই নকল মধু বিক্রেতারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসে বলে, মধু নিবেন, মধু। খাটি মধু। এক কেজি ৬০০ টাকা। আগ্রহী ক্রেতারা জিজ্ঞেস করে কোথা থেকে এনেছ?, উত্তরে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়ছড়িসহ পাহাড়ি অঞ্চলের ঠিকানা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে কতিপয় ভদ্রবেশি প্রতারক চক্র-যে গ্রামে মধু বিক্রি করতে আসে, কয়েকটি গ্রাম পরের একটি গ্রামের ঠিকানা দেয়-যেখানে মৌচাক ভেঙে মধু নেয়া হয়েছে। তাদের হাতে কাঁচি ও পলিথিনে মধু রেখে ভ্রাম্যমাণ মৌয়াল থেকে মধু সংগ্রহ করার অস্তিস্ত দেখায়। পরে খোঁজ নিয়ে মৌচাক ভেঙে মধু নেয়ার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।

সুত্রে আরও জানা গেছে, প্রাকৃতিক মধু কারখানায় উৎপন্ন করা হয় না। তবে অনেকেই কারখানায় উৎপন্ন করে মধুকে প্রাকৃতিক হিসেবে বাজারে চালায়। তাই অনেক সময় খাঁটি মধু চেনা মুশকিল হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন, নকল মধুগুলোতে বেশি লাভের জন্য চিনিযুক্ত সিরাপ মেশানো হয়। এতে মিষ্টির পরিমাণ বাড়ে। নকল মধু খেলে স্বাস্থ্যের কোনো লাভই হয় না। উল্টো স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। আর নকল জিনিস কিনলে টাকার অপচয় তো হয়ই। আসল এক কেজি মধুর দাম ১৫০০-২০০০ টাকা।

নকুল মধু কিনে প্রতারণার শিকার তরুণ আইনজীবি এম দিদার হোসেন বলে, ‘অনেক আগ্রহ করে ১৬০০ টাকা দিয়ে দুই কেজি মধু ক্রয় করি। এছাড়া কয়েকজন শিক্ষক ও স্থানীয় লোকজন প্রায় ১০ কেজি মধু ক্রয় করে। বাড়িতে নিয়ে মধুতে পানি দিয়ে পরীক্ষা করে দেখে মধুগুলো খাটি মধু নয়, নকল মধু। পাশের একজন ভদ্রবেশির কারণে প্রতারণারই শিকার হলাম।

এ ব্যাপারে হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ডাঃ মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ বলেন, মধু প্রাকৃতিক খাবার। মিষ্টি স্বাদের এই খাবার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। আর খেতেও সুস্বাদু। তবে বাজার থেকে মধু কিনতে গেলে অনেকেই ভয়ের মধ্যে থাকেন। কেননা, নকল মধুর ভিড়ে খাঁটি মধু কোনটি, সেটি চেনাই মুশকিল হয়ে যায়। তাই বলে কি মধু খাওয়া বন্ধ থাকবে? একটু সতর্ক হয়ে কিছু বিষয় খেয়াল রাখলেই কিন্তু বুঝবেন, আসল ও নকল মধু কোনটি। শিশুদেরকে কোনভাবেই নকল মধু না খাওয়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads