• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
যেভাবে বোকা সেজে ধোঁকা দিত তারা

সৌদি রিয়াল

সংরক্ষিত ছবি

অপরাধ

যেভাবে বোকা সেজে ধোঁকা দিত তারা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ মার্চ ২০১৯

রাজধানীর গুলশান ও বনানীর রাস্তায় যানজটে আটকে থাকা দামি গাড়ি টার্গেট করে, কিংবা চলতি পথে আবার কখনো বাসাবাড়িতে গিয়ে সৌদি আরবের কিছু রিয়াল নিয়ে প্রতারকচক্র জানতে চাইত এগুলো কোথাকার টাকা। তার কাছে আরো বেশ কিছু বান্ডিল আছে, ইজতেমার মাঠে দুই বান্ডেল পেয়েছে, জানতে চাইত বিদেশি মুদ্রা ভাঙানো যাবে কোথায়। কম দামে রিয়াল পেয়ে অনেকে তাদের ফাঁদে পা দিত। দু-চারটি আসল নোট আর জাল নোট দিয়ে ভেতরে সাদা কাগজের বান্ডেল হাতে ধরিয়ে দ্রুত কেটে পড়ত প্রতারকচক্রটি। মোটা অঙ্কের বিনিময়ে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা বান্ডিল ধরে রিয়াল কিনত। বান্ডিল খুলে দেখার আগেই প্রতারকচক্র বলত- পুলিশ আসছে ঝামেলা হবে। এই বলে টাকা নিয়ে সরে পড়ত। পরে দেখা যেত বান্ডিলের ওপরে ও নিচে কয়েকটা রিয়াল, বাকিগুলো সাদা কাগজ।

গত বৃহস্পতিবার রাতে কুড়িল বিশ্বরোডে অভিযান চালিয়ে এই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সৌদি রিয়াল বিক্রির প্রতারকচক্রের বিস্তারিত তুলে ধরে র্যাব।

জিজ্ঞাসাবাদে ওই প্রতারকচক্রের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পাওয়া তথ্য তুলে ধরে র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারোয়ার-বিন-কাশেম জানান, চক্রটি হজ মৌসুমে হজ ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকায়ও এভাবে প্রতারণা করত। হজ মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হজ গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের টার্গেট করে তারা এসব সৌদি রিয়াল বিক্রি করত। অনেকে কম দামে রিয়াল পেয়ে যাচাই-বাছাই না করে সেগুলো কিনত। পরে প্রতারণার শিকার হতো।

র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে এ চক্রটি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করত। বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিরা খুশি হয়ে তাদের অনেক রিয়াল উপহার দিয়েছে কিংবা ইজতেমায় সৌদি রিয়াল কুড়িয়ে পেয়েছে- এমন কথা বলত এবং জানতে চাইত কীভাবে সেসব টাকা তারা ভাঙাবে। অনেকে তাদের কাছ থেকে কম দামে সেগুলো কিনতে আগ্রহী হতো। এ সময় চক্রটি তাদের নির্দিষ্ট ঠিকানায় আসতে বলত। রিয়াল বিক্রির আলাপের ফাঁকে তারা আসল টাকার মধ্যে সাদা কাগজ দিয়ে বান্ডিল তৈরি করে বিক্রি করত। এভাবে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে তারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি মামলা হয়েছে।

প্রতারকচক্রের গ্রেফতার সদস্যরা হলো আবু শেখ, তার সহযোগী শাহিন মাতব্বর, মহসিন মিয়া, আবুল বাশার, কামরুল শেখ, ইশারত মোল্লা ও আব্দুর রহমান মোল্লা।

র্যাব-১ অধিনায়ক আরো বলেন, আবু শেখ এ চক্রের মূল হোতা। তার নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে সাতজনের এই চক্রটি অভিনব পন্থায় প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। এমন আরো দু-একটি চক্র রাজধানীতে সক্রিয় থাকতে পারে, তাদের বিষয়ে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads