পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ দেওয়ায় পাশের আরেক ভবন মালিককে ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিক মো. হাসান প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত সোমবার চকবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রাজমহল হোটেলের মালিক মোহাম্মদ আজম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহাম্মদ আজম গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে গত ২০ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিক হাসান ফোন দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন। আমাকে দেখে নেবেন, খেয়ে ফেলবেন- এ ধরনের আরো অনেক কথা বলেছেন। এরপর পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে ২৫ মার্চ চকবাজার থানায় একটি জিডি করেছি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
তিনি বলেন, আমি এসব হুমকিতে ভয় পাই না। ভয়ের বয়স অনেক আগেই পার করে এসেছি। আমি কাউকে কোনো ফুটেজ দিইনি। ঘটনার পর পুলিশ সব নিয়ে গেছে। তারপরও আমাকে হাসান দায়ী করছেন। তিনি এলাকার অনেককেই ফোন করে গালাগাল করছেন। আমি উপায় না পেয়ে জিডি করেছি।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭০ জন নিহত হয়েছে। মর্মান্তিক ঘটনায় ভিডিও ধারণ করা হয় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হওয়া ওয়াহেদ ম্যানশনের পাশে থাকা রাজমহল হোটেলের সিসি ক্যামরায়। ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে, ওয়াহেদ ম্যানশনের দ্বিতীয় তলায় বিস্ফোরণ হয়েছে। এরপর পুলিশ হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। সেই ফুটেজ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আসিফ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার দায়েরকৃত মামলায় এরই মধ্যে ৩ সপ্তাহের জামিন পেয়েছেন সেই ওয়াহেদ ম্যানশনের দুই মালিক মো. হাসান ও সোহেল ওরফে শহীদ। জামিনে বেরিয়েই হাসান চুড়িহাট্টার আরেক ভবন মালিককে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মূলত এই ফুটেজ কেন প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছে গেল তা নিয়েই হাসান তাকে হুমকি দিয়েছেন বলে দাবি করেন মো. আজম। এর জেরে হাসান ভবিষ্যতে তার বড় ধরনের কোনো ক্ষতি করতে পারে আশঙ্কাতে তিনি থানায় জিডি করেছেন।
এ বিষয়ে চকবাজার থানার ওসি শামীমুর রশীদ তালুকদার বলেন, ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিক হাসান কাউকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইব্রাহীম খান গণমাধ্যমকে বলেন, জিডি হলে অবশ্যই থানার ওসি জানবেন। আমি বিষয়টির খোঁজ নিচ্ছি। আমরা অবশ্যই জিডি দায়েরকারীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। এ বিষয়ে আইনগত যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার আমরা সব করব।
