• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
আশুলিয়ায় তৈরী হচ্ছে বিষাক্ত মশার কয়েল

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

অবৈধ গ্যাস লাইন ও শিশু শ্রম

আশুলিয়ায় তৈরী হচ্ছে বিষাক্ত মশার কয়েল

  • আশুলিয়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ এপ্রিল ২০১৯

ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার আবাসিক ও পোশাক কারখানার গা ঘেঁষে স্থাপন করা হয়েছে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত মশার কয়েল তৈরীর কারখানা। বিষাক্ত বায়ুদূষণে ভুগছে এ সকল পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা। শুধু বিষাক্ত বায়ুদূষণ নয় এ ফ্যাক্টরী গুলোর মধ্যে বেশির ভাগ ফ্যাক্টরী চালানো হচ্ছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে। অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ, বিদুৎ বিল বকেয়া রেখে ও শিশু শ্রমিক দিয়ে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অবৈধ কারখারখানা মালিকরা। এসব বিষাক্ত কেমিক্যাল কারখানার অনুমতি দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার এজাক্স সোয়েটার এর প্রাচীর ঘেষে রয়েছে এমনি একটি সাইনবোর্ড বিহীন কোয়েল তৈরীর ফ্যাক্টরি। যেখানে আশরাফ ফুড প্রোডাক্টস এর নামে বিএসটিআই অনুমোদনও রয়েছে, রয়েছে পিএইচপি নাম্বারও। নামে ফুড প্রোডাক্টস ব্যবহার করলে সেখানে কোন ধরনের ফুড প্রোডাক্টস তৈরী করা হয় না। সেখানে র‌্যাটরো ওভেল নাম ব্যবহার করে দুই থেকে তিন ধরনের মোড়কে প্যাকিং করা হচ্ছে মশার কয়েল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশরাফ ফুড প্রোডাক্টস কারখানায় কোন ধরনের ফুড প্রোডাক্টস তৈরী না করে বিভিন্ন কালারের মশার কোয়েল তৈরী করছে। এ কারখানার বিষাক্ত বায়ুদুষনে পরিবেশ বির্পযসহ নানা রোগে ভুগছে পোশাক শ্রমিক ও এলাকাবাসী। এ ছাড়াও অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে শুকানো হচ্ছে মশার কয়েল। কারখানা ভিতরে কর্মরত বেশির ভাগ শিশুর বয়ষ ১২ বছরের নিচে। কিন্তু তারা কেউ মুখে মাস্ক ব্যবহার করছে না।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ফ্যাক্টরীর ভেতর থেকে প্রবাহ বিষাক্ত কেমিক্যালের দুর্গন্ধ ও ময়লা পানির কারনে অনেকের হাঁপানি, শ্বাসকষ্টসহ নানা বায়ুবাহীত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে, ফলে আমাদের বসবাস করতে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাছাড়াও তারা যে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করছে তা নিয়েও আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি, কখন যে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। সাইনবোর্ড বিহীন এ কয়েল কারখানা গুলো এলাকাবাসীর অকাল মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িছে বলেও জানান তারা।

এ সকল কারখানার অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করে যেভাবে গ্যাসের চাপ কমাচ্ছে তেমনি সরকার হারাচ্ছে কোটি-কোটি টাকার রাজস্ব। এছাড়াও কিছু ফ্যাক্টরী আবার আবাসিক বাড়ির মধ্যেও চালানো হচ্ছে।

আশরাফ ফুড প্রোডাক্টস কারখনার দায়িত্বরত আমিরুল নামের এক কর্মকতার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের কারখানার ২২টি লাইনেন্স আছে। সাংবাদিক কি করবে, সাংবাদিকের খাওয়া নাই, র‌্যাব, পুলিশ ও ডিবি আমাদের কিছু করতে পারে না। এছাড়াও তিনি সাংবাদিকদের কে বিভিন্ন ধরেনর হুমকি ধামকি দিতে থাকেন।

ফ্যাক্টরীর মালিক আশরাফ সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরে, তার সাথে স্বাক্ষাৎ করতে সক্ষম হয় সাংবাদিকরা, তিনি সাংবাদিকদের সাথে উচ্চস্বরে বলেন, আপনার কোথা থেকে এসেছেন, আমি তো গ্যাস কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে টাকা দিয়ে আমার ফ্যাক্টরী চালাচ্ছি। তাছাড়া আমার ফ্যাক্টরীর ১৮ টি লাইসেন্স আছে কয়েল জগতে। আমার একটাই দূর্বলতা সেটা হচ্ছে আমার গ্যাস লাইনটি অবৈধ। এছাড়াও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমি কিছু দিন আগে সময় টেলিভিশনের যুবায়েল নামের এক সাংবাদিককে লাথি মেরে বের করে দিছি।

শিশু শ্রমিকদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে তা স্বীকার করেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, আমি আজ ১১ বছর ধরে ব্যবসা করি, কাকে কিভাবে ম্যানেজ করতে হয় তা আমি বুঝি। সবশেষে তিনি সাংবাদিককে কে ভাই বন্ধু বলে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads