• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
খুলনায় ২৩ মাসে ১৩০ নারী ও শিশু ধর্ষিত

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

খুলনায় ২৩ মাসে ১৩০ নারী ও শিশু ধর্ষিত

  • খুলনা ব্যুরো
  • প্রকাশিত ১৯ এপ্রিল ২০১৯

মাদক মামলার পর খুলনায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা। প্রতি মাসে গড়ে ৫ নারী ও শিশু ধর্ষিত হচ্ছে। জেলার তুলনায় মহানগরীতে ধর্ষণের সংখ্যা বেশি। গত ২৩ মাসে মহানগরী এলাকায় ৭৩ ও জেলার থানাগুলোতে ৫৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সবচেয়ে আলোচিত ধর্ষণের ঘটনা ঘটে আটরার আফিল জুট মিল এলাকায়। এখানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে তিন দুর্বৃত্ত ধর্ষণ করে। খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ২০০২ সালের মামলাও বিচারাধীন রয়েছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) সূত্র জানায়, গত ২৯ জানুয়ারি আফিল জুট মিলস সিটি গেট এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে আটরা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষিত হয়। তার পিতা বাদী হয়ে একই দিন খানজাহান আলী থানায় মামলা করেন। ধর্ষিতা ২৯ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে চিকিৎসাধীন ছিল। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে আটরা মশিয়ালী গ্রামের রুস্তুম আলীর ছেলে সাগর আলী, রেনু মিয়ার ছেলে বিল্লাল ও টোকান আলীর ছেলে শফিককে পুলিশ গ্রেফতার করে।

জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের মে থেকে চলতি ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত ১৩০ নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। অধিকাংশ মামলার চার্জশিট হয়েছে। এ বছরের গত তিন মাসে জেলার ৯ থানা ও মহানগরের ৮ থানায় ৫০টি নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হয়েছে।

খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আনিছুর রহমানের দেওয়া তথ্যমতে, ধর্ষণের অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা রেকর্ড হচ্ছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য অনেক সময় ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা থানায় আসেন। তদন্ত শেষে চার্জশিট দেওয়া হয়। জেলায় এ অপরাধ কমেছে বলে তিনি দাবি করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর পাবলিক প্রসিকিউটর জেসমিন পারভীন জলি জানান, জেলায় তিনটি আদালতে এ সংক্রান্ত মামলার বিচার হচ্ছে। তিনি জানান, ট্রাইব্যুনাল-৩-এ তিন হাজার মামলা বিচারাধীন। প্রতি মাসে গড়ে ৮-১০টি মামলার রায় হচ্ছে। ২০০২ সালের মামলা এখনো বিচারাধীন। ধর্ষণ মামলার বিচার কাজ দ্রুতগতিতে চলছে।

খুলনা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, ঘটনার পর একবার গোসল ও দুইবার প্রস্রাব হলে আলামত নষ্ট হয়। এ ক্ষেত্রে মেডিকেল টেস্ট প্রমাণ করা কষ্টসাধ্য হয়।

দাকোপ উপজেলার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা সুরাইয়া সিদ্দিকার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বছর এ উপজেলায় ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেনি। মানবাধিকার কর্মী মমিনুল ইসলাম জানান, জেলার তিনটি আদালতে বিচার চলছে। দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়ায় এ অপরাধ দিন দিন কমছে।

রূপসা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইলিয়াছুর রহমান গত মাসের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উল্লেখ করেন, ছেলেমেয়েরা সামাজিক মননশীল কাজে নিয়োজিত হলে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হবে না। মহিলা পরিষদের সম্পাদক রসু আক্তারের মতে, সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে। মাদরাসা ও মন্দিরে এ ঘটনা ঘটছে। অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads