জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় কিশোরী অন্তরা সাহা (১৫) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সোমবার রাতে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের সাঞ্চেরপাড় গ্রামে তার নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র সাহার মেয়ে। সরিষাবাড়ী পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অন্তরা সাহা সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পৌর শহরের মতি তালুকদারের বখাটে পুত্র তানিন তালুকদার অন্তরাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছে।
গত শনিবার স্কুলে থেকে ফেরার পথে রাস্তায় জোর করে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। এমনকি ওই ছবি ফেসবুক মেসেঞ্জারে তার বন্ধুদের কাছেও ছড়িয়ে দেয়। এই খবরে অন্তরা সাহা ও তার পরিবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
সোমবার রাতে সাড়ে ৭টার দিকে তার মা নমিতা রাণী সাহা তাকে না পেয়ে ঘরে তার কক্ষে খুঁজতে যান। তিনি ভেতর থেকে দরজা বন্ধ দেখে তাকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়ির লোকজন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকেই অন্তরাকে ঘরের ধর্ণার সঙ্গে ঝুলন্ত দেখতে পান। পরে স্বজনরা তাকে দ্রুত সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সাহেদুর রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরিষাবাড়ি হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাঃ সাহেদুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই মেয়েটি মারা গেছে।
ওই ছাত্রীর শোকার্ত বাবা নারায়ণ চন্দ্র সাহা অভিযোগ করে বলেন, সরিষাবাড়ী পৌরসভার মূলবাড়ি এলাকার মতি তালুকদারের ছেলে তানিন তালুকদার পঞ্চম শ্রেণি থেকেই আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। তাকে এবং তার বাবা-মাকে অনেক বলেছি। কোনো লাভ হয়নি। তার মেয়ে চরম উত্ত্যক্ত শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে আজ মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
