• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
রাজধানীজুড়ে র্যাব পুলিশের নিরাপত্তা বলয়

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

রাজধানীজুড়ে র্যাব পুলিশের নিরাপত্তা বলয়

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ২৫ মে ২০১৯

ঈদ ও রোজার শেষ দিনগুলোতে কেন্দ্র করে নগর পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়েছে। রাজধানীতে ছিনতাই, মলম পার্টি ও অপরাধী চক্রের দৌরাত্ম্য রোধে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা মাঠে থাকবেন। অপরাধী ধরার কৌশল হিসেবে স্বর্ণালংকার ও লোভনীয় পোশাক পরিয়ে ছদ্মবেশে মাঠে নামানো হচ্ছে নারী পুলিশ সদস্যদেরও।

ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে নগর পুলিশ রাজধানীর অভিজাত মার্কেট, শপিংমল ও বিপণিবিতানগুলোর দোকান মালিকদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে। বৈঠকে মার্কেটের সামনে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মার্কেটের বাইরে এবং ভেতরে সিসিটিভি সক্রিয় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এদিকে রাজধানীর চিহ্নিত অপরাধপ্রবণ এলাকা, শপিং মল এবং বাস টার্মিনাল এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ৩০টি ক্যাম্প। সারা দেশে রমজান উপলক্ষে গঠন করা র্যাবের ২০টি বিশেষ দলের ১০টিই রয়েছে রাজধানীতে। র্যাব রমজানের শেষ সময় ও ঈদের আগমুহূর্তে টিকেট কালোবাজারি রোধে টার্মিনাল, ঘাটে তৎপরতা বাড়িয়েছে।  ক্রেতা-বিক্রেতারা যেন নির্বিঘ্নে  কেনাকাটা করতে পারেন, সে জন্য র্যাব মাঠে রয়েছে। চাঁদাবাজি, ছিনতাই রোধে র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এ ছাড়া কারওরান বাজার, শ্যামবাজারসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে ক্রেতা  সেজে রয়েছেন গোয়েন্দারা।

সূত্র জানায়, ছিনতাই, ডাকাতি ও পকেটমার ধরতে অর্ধশত স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন ছদ্মবেশে অবস্থান নিয়েছেন। মৌচাক, মহাখালী, ফার্মগেট, মগবাজার,  কাকরাইল, পল্টন, গুলশান, নিউমার্কেট, গাবতলী, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, কারওয়ান বাজার, কমলাপুর  রেলস্টেশনসহ রাজধানীর বিলাসবহুল শপিং মল ও মতিঝিলের বিভিন্ন ব্যাংক ভবন এলাকায় তারা দায়িত্ব পালন করছেন।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বাংলাদেশের খবরকে বলেন, কয়েক বছর ধরে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। নগরবাসী স্বস্তিতে আছে। ঈদের সময় তারা গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করে নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরেছে। কারো তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। এবারও নানা কৌশল অবলম্বন করে পুলিশ সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেশির ভাগ রোজা চলে গেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত রোজায় উল্লেখযোগ্য কোনো অপরাধ বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বাকি যে কটা দিন আছে ভালোভাবেই কেটে যাবে আশা করি। কারণ নগরজুড়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া প্রতি থানা এলাকায় পুলিশ দিনরাত ফুট পেট্রলিং করছে। নির্দিষ্ট পয়েন্টে তল্লাশিও হচ্ছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মীর রেজাউল জানান, এবার রোজার মাসেও রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে। অন্যান্য বছর রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, মিরপুর, মৌচাক, কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও, রায়েরবাজার, মহাখালী, কমলাপুর ও গাবতলী এলাকায় এ ধরনের অপরাধ বেশি সংঘটিত হতো। কিন্তু এবার পুলিশ অনেকটা আগে থেকেই বাড়তি সতর্কাবস্থা গ্রহণ করে। তিনি বলেন, রাজধানীর সব  পেশাজীবীর নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরাপদ করা হবে রাজধানীর ভোরের রাস্তা। পেট্রল টহল,  চেকপোস্টের পুলিশের পাশাপাশি থাকবে সাদা  পোশাকের বিশেষ গোয়েন্দা পুলিশ।

ডিএমপি সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীকে বিশেষ কয়েকটি অপরাধ জোনে ভাগ করে একজন  ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীকে ১৩টি অপরাধ জোনে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি জোনে একজন ডিসির নিয়ন্ত্রণে পুলিশসহ ২৬ সদস্যের একটি টিম দায়িত্ব পালন করবে।

সূত্রমতে, রমনা, লালবাগ, তেজগাঁও, মিরপুর, ওয়ারী, মতিঝিল, গুলশান ও উত্তরা বিভাগ থেকে গঠিত অপরাধ বিভাগের আটটি সিভিল টিম বিভিন্ন কৌশলে অপরাধী ধরতে ওত পেতে থাকবে। বিভিন্ন মার্কেট ও শপিং কমপ্লেক্স ভবনের সামনে থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা। মার্কেটের নিজস্ব সিকিউরিটি ও মার্কেট কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সমন্বয়ে অতিরিক্ত প্রহরার ব্যবস্থা করা হবে। ডিবি পুলিশের বিশেষ টিম মাঠে থাকবে। আটটি ক্যাম্প ডিভিশনের সদস্যরা সাদা পোশাকে রাজধানীর ছিনতাই ও ডাকাতিপ্রবণ এলাকায় নিয়োজিত রয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো আছে। ঈদ উপলক্ষে পরিকল্পিত নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে  তোলা হয়েছে। এ নিরাপত্তা আরো নিশ্চিত করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানুষ যাতে শান্তিতে ঈদ উদযাপন করতে পারে, সে জন্যই এ ব্যবস্থা।

র্যাব সূত্র জানায়, রাজধানীতে সহস্রাধিক র্যাব সদস্য মাঠে থাকবেন। নিয়মিত তল্লাশি ও টহল ছাড়াও সোর্সের দেওয়া তথ্যে ভিত্তিতে নিয়মিত অভিযানও পরিচালনা করবে র্যাব। এছাড়াও র্যাবের বেশ কটি টিম গুলিস্তান, ফার্মগেট, বসুন্ধরা মার্কেট, হাতির পুলসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নেবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads