নরসিংদীর পলাশে দায়িত্ব পালনের সময়ে পুলিশ সদস্যদের উপর স্থানীয় ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজনসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।পরে বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজন (৩২), লাল মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (২৫),আবু সাইদ ভূইয়ার ছেলে শফিকুল ভূইয়া (২৪),মোবারক মোল্লার ছেলে জাহির (১৯), কাজল মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (২০) ও রাজন (২৭)। তারা সকলেই চরসিন্দুর ইউনিয়ের বাসিন্দা।
পলাশ থানা পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ হইতে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর নতুন ব্রীজে ঘুরতে আসেন। ওই সময় তারা ব্রীজের এক পাশে বসে তাস খেলছিলেন। এসময় হৃদয় নামে স্থানীয় এক যুবক তাদের তাস খেলতে বারন করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে কালিগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা ছাত্রলীগ সদস্যরা বিষয়টি পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজনকে জানান। এরই জেরে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতির লোকজন হৃদয়কে মারপিট করতে থাকে।
খবর পেয়ে চরসিন্দুর ক্যাম্পের আইসিসহ পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। এবং উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহবান জানায়। কিন্তু তারা পুলিশের কথা অমান্য করে দুই পক্ষে সংঘর্ষে জাড়িয়ে পরে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে লার্ঠিচার্জ করে পুলিশ । এসময় পালাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজনের উপর লাঠির আঘাত লাগে। এতে ছাত্রলীগ নেতার সমর্থকরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরে ছাত্রলীগ নেতা ও তার সমর্থকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এসময় ছাত্রলীগ নেতারা পুলিশকে মারপিট করেন। একই সঙ্গে পুলিশের গায়ে থাকা ইউনিফর্ম ছিড়ে ফেলেন। এসময় আহত হয় চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই প্রদিপ কুমার দাশ,কনন্সটেবল জাহিদ, নাদিম, গাইয়ুম ও নায়েক আলামিন।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ প্রদিপ কুমার দাশ বাদি হয়ে ১১ জনকে আসামি করে পলাশ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে রবিবার দুপুরে পুলিশ পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেন।
চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ প্রদিপ কুমার দাশ বলেন, চরসিন্দুর ব্রীজ এলাকায় দুই পক্ষের মারপিট হচ্ছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে যাই। দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার আহব্বান জানাই। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অতর্কিত পুলিশের উপর হামলা চালায় এবং পুলিশের ইউনিফর্ম ছিড়ে ফেলেন। এসময় তাদের হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়।
বিষয়টি জানতে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহামুদকে ফোন করলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন মোল্লা বলেন, পুলিশকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজন সহ ৬জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
