• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
গোয়েন্দা নজরদারিতে ডিআইজি মিজান

ছবি সংগৃহীত

অপরাধ

গোয়েন্দা নজরদারিতে ডিআইজি মিজান

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ১৮ জুন ২০১৯

ডিআইজি মিজানকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। খুব শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। বর্তমানে ডিআইজি মিজানের গতিবিধির ওপর একটি গোয়েন্দা সংস্থা সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে।

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, ডিআইজি মিজানকে নিয়ে রীতিমতো বিব্রত পুলিশ প্রশাসন। তাকে গ্রেফতার করাটা এখন সময়ের ব্যাপার। একজন অতিরিক্ত আইজিপির নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলেই তার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সূত্র জানায়, ডিআইজি মিজানের ‘অবৈধ সম্পদ’র অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন দুদকের পরিচালক এনামুল বাছির। সম্প্রতি এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলে তার সপক্ষে কয়েকটি অডিও ক্লিপ সম্প্রতি গণমাধ্যমে হাজির করেন ডিআইজি মিজান। ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এনামুল বাছিরকে; যদিও তিনি ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। একাধিক নারী কেলেঙ্কারি ও দুদকের কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার কথা নিজেই প্রচার করাসহ নানা বিতর্কের পরও গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। আদালত দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ডিআইজি মিজানকে এখনো  গ্রেপ্তার করছেন না কেন? সে কি দুদকের চেয়ে বেশি শক্তিশালী?’

সূত্রমতে আপিল বিভাগের এ মন্তব্যের পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। তাকে গ্রেফতার করা না হলে পক্ষপাতের অভিযোগ উঠতে পারে পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনটাও গুঞ্জন উঠেছে খোদ পুলিশ প্রশাসনেই। এরই ধারাবাহিকতায় ডিআইজি মিজানের  মোবাইল ফোন, তার যাতায়াত, বাসায়, অফিসে অবস্থানকালেও গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। সে যাতে দেশের বাইরে যেতে না পারে সে লক্ষ্যেও একটা গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হয়েছে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন ও সীমান্তগুলোতে।

প্রসঙ্গত, গত বছর নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয় পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে। এরপর তার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত চলাকালেই প্রাপ্ত তথ্য অভিযুক্তের কাছে চালান করে দিয়ে আপসরফার মাধ্যমে দুই দফায় ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন তিনি। দুদকের কাছে ডিআইজি মিজানের করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তার বিররুদ্ধে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল টাকার বিনিময়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাবেন। তবে টাকা নিয়েও শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধেই প্রতিবেদন জমা দেন বাছির। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অবৈধ লেনদেনের এই ঘটনা দুদকের কাছে ফাঁস করেন ডিআইজি মিজানুর রহমান।

ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ করেন মরিয়ম আক্তার ইকো নামে এক নারী। অভিযোগে প্রকাশ, ২০১৭ সালের ১৪ জুলাই ইকোকে তাদের পান্থপথের বাসা থেকে এক রকম কৌশলে তার গাড়িতে তুলে জোরপূর্বক ৩০০ ফুট এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন ইকো। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ডিআইজির বেইলি রোডের বাসায়। সেখানে তাকে সুস্থ করার কথা বলে ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। পরদিন দুপুর ১২টার দিকে তিনি ঘুম থেকে জেগে দেখতে পান তার পরনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানের স্লিপিং ড্রেস এবং তিনি তার বেডরুমে। বুঝতে পারেন, তার সর্বনাশ হয়ে গেছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads