• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
মাদারীপুরে যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা

মাদারীপুরে যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

  • মাদারীপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২০ জুন ২০১৯

মাদারীপুর সদর উপজেলায় নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় এরশাদ মুন্সী (২৭) নামে এক যুবলীগকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের সবুজবাগ এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এরশাদ মুন্সী সবুজবাগ এলাকার বেলায়েত মুন্সীর ছেলে। তিনি মাদারীপুর পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য ছিলেন বলে জানিয়েছেন জেলা যুবলীগের সভাপতি আতাহার সরদার।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাঠক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের সবুজবাগ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

গত মঙ্গলবার মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দেকে আট হাজার ভোটে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান এমপির ছোট ভাই ওবায়দুর রহমান খান।

যুবলীগকর্মী এরশাদ এ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী কাজলের পক্ষে প্রচারে কাজ করেছিলেন বলে পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য।

তারা জানান, বুধবার দুপুরে শহরের সবুজবাগ এলাকায় একদল লোক এরশাদকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনার পর কাজলের সমর্থকরা শহরের কলাতলা এলাকায় কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করে। পরে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এরশাদ মঙ্গলবার মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাচনের ভোটে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজল কৃষ্ণ দের পক্ষে কাজ করেছেন; অন্যদিকে জসিম গৌড়া বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী সাবেক নৌমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি শাজাহান খানের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবায়দুর রহমান খানের সমর্থক।

বিকেলে জেলা হাসপাতাল চত্বরে জেলা আওয়ামী লীগের এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ অভিযোগ করেন, এরশাদের ওপর হামলা চালানো হয় যুবলীগকর্মী জসিম গৌড়ার নেতৃত্বে, যে ওবায়দুর রহমান খানের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

তিনি বলেন, নৌকার পক্ষে কাজ করার কারণে এরশাদকে তারা হত্যা করে মাদারীপুরের শান্তির পরিবেশ নষ্ট করছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত জসিমসহ সবার দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।

পৌর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক রাজিব মাহমুদ কাওছার হোসেন বলেন, এরশাদ নৌকার সমর্থক হওয়ায় জসিম গৌড়া তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এরশাদকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। জসিমের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশ সুপারকে বারবার বলা হলেও তাকে গ্রেপ্তার করেনি। এটা পরিকল্পিত হত্যা। আমরা জসিমসহ খুনিদের বিচার চাই।

তবে এ অভিযোগের বিষয়ে জসিম বা তার পক্ষের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাঠক বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। এ ঘটনার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমের রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে।

এবার উপজেলা নির্বাচনে শাজাহান খানের ভাই ওবায়দুর রহমান কালু খান দলের মনোনয়ন চাইলেও নৌকার মনোনয়ন পান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে। কালু খান তখন আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন করেন এবং শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads