• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
সিরাজগঞ্জে মা ও ছেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

সিরাজগঞ্জে মা ও ছেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা

  • সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৭ জুন ২০১৯

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মহেশপুরে রাতের আঁধারে নিজ বাড়ীতে মা-ছেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বত্তরা। নিহতরা হলেন, মহেশপুর গ্রামের মৃত বাছেদ মিয়ার ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য হাজী আলতাফ হোসেন মুকুল (৬০) ও তার বৃদ্ধা মাতা রিজিয়া বেগম (৯৫)।

গতকাল বুধবার রাত নয়টার দিকে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ দাবী করেছে। নিহতের স্বজনরা জানান, মসজিদে নামাজ আদায় অথবা গাড়াদহ নদী থেকে বালু উত্তোলনের নিয়ে দ্বন্দের কারণে প্রতিপক্ষরা হয়তো এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।

পুলিশ বলছেন, হত্যাকান্ডটি পুর্ব পরিকল্পিত। নৃশংসভাবে জবাই করে এবং হাত-পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি-ডিবি, পিবিআই ও র‌্যাব সদস্যরা আলামত সংগ্রহসহ তদন্ত শুরু করেছে।

নিহত হাজী আলতাফ হোসেনের বাড়ীর কাজের মেয়ে সুমনা জানান, বুধবার এশার নামাজ পর হাজী আলতাফ হোসেন বাড়ীতে আসার পর খাবার তৈরী করে দিয়ে আমি নিজ বাড়ীতে চলে যাই। সকালে এসে দেখি বাসার গেট বাইরে থেকে লাগানো। গেটখুলে ভিতরে ঢুকেই দেখি চাচা আলতাফ হোসেন ও দাদী রিজিয়ার রক্তাক্ত লাশ পরে আছে। পরে ভয় পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে সকলকে হত্যার বিষয়টি জানাই।

নিহত আলতাফ হোসেনের মেয়ে স্কুল শিক্ষিকা রোখসানা হোসেন হিজল জানান, আমার মা ও ভাই চিকিৎসার জন্য কয়েক দিন আগে ঢাকায় যাওয়ায় বাড়িতে শুধু বাবা আর দাদী ছিল। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বাবার সাথে শেষ কথা হয়। তখন তিনি বলেছিলেন কাজের মেয়ে রান্না করে দিয়ে গেছে এখন তোর দাদীকে নিয়ে খাবো। এরপর সকালে হত্যার সংবাদ পেয়ে ছুটে আসি। এসে দেখি বাবা ও দাদীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। খুনিরা আমার ৯৫ বয়সী দাদীর হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলেছে। এসময় কান্নাজরিত কন্ঠে তিনি নৃশংস হত্যাকারিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

নিহতের শ্যালক আব্দুল মান্নান রতন ও মানিক চাঁদ জানান, বোন জামাই হাজী আলতাফ হোসেন মুকুল প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে মসজিদ নির্মাণ করেন। এই মসজিদে নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে এলাকার কয়েক জনের সাথে দ্বন্দ চলছিল। এছাড়াও গাড়াদহ নদী থেকে বালু উত্তোলনে বাঁধা দেয়ায় কয়েক জন বালু দস্যুদের সাথে দ্বন্দ ছিল। এই দুই কারণে হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে আমরা মনে করছি। তাছাড়া আমার বোন জামাইয়ের সাথে কারো কোন দ্বন্দ ছিল না।

উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান কওশিক জানান, ধারণা করা হচ্ছে রাত ৯ টার দিকে রাতের খাবার খাওয়া অবস্থায় হাজী আলতাফ হোসেন মুকুলকে হত্যা করা হয়। আর এই হত্যাকান্ড দেখে ফেলায় তার বৃদ্ধ মাকে নৃশংস ভাবে জবাই, হাত-পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি আরো জানান, এটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। পুলিশ, সিআইডি পুলিশ, পিবিআই পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থাল পরিদর্শনপূর্বক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি আরো জানান, লাশ সুরুতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads