• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
জনতা ব্যাংকের ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ

ছবি : সংগ‍ৃহীত

অপরাধ

জনতা ব্যাংকের ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ

  • জাহাঙ্গীর আলম, মনিরামপুর (যশোর)
  • প্রকাশিত ০২ আগস্ট ২০১৯

জনতা ব্যাংক লিমিটেডের মনিরামপুর শাখার দুই অফিসারের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ২০ গ্রাহকের প্রায় ৩৫ লাখ টাকা অ্যাকাউন্টে জমা না করে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে এরিয়া অফিস থেকে দুই সদস্যের তদন্ত দল বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে দুজন অফিসারকে অভিযুক্ত করেছেন বলে জানা গেছে।

এর মধ্যে একজনকে যশোর এরিয়া অফিসে ওএসডি করা হয়েছে। অপরজনকে নাভারন শাখায় বদলি করা হয়েছে। আর এটা করা হয়েছে অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে। ফলে দেরিতে হলেও বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গ্রাহকসহ এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ চাঞ্চল্যকর এ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে অপচেষ্ট চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, মনিরামপুর পৌরশহরের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন ঘোষ গত মাসে একলাখ টাকা জনতা ব্যাংকে গিয়ে নিজের অ্যাকাউন্টে জমা করার জন্য কাউন্টারে অফিসার (ক্যাশ) আলমগীর কবীর রিংকুর কাছে দেন। এ সময় রিংকু জমাস্লিপে সিল মেরে স্বাক্ষর করে টাকা জমা নেন। পরবর্তীতে নিরঞ্জন ঘোষ জানতে পারেন তার অ্যাকাউন্টে ওই টাকা জমা হয়নি।

তখন ওই জমাস্লিপ নিয়ে তিনি চ্যালেঞ্জ করলে বিষয়টি ধরা পড়ে। একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি আট লাখ টাকা নিয়ে কাউন্টারে জমা দেন। একই পন্থায় তার জমাস্লিপে স্বাক্ষর করে টাকা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু অ্যাকাউন্টে ওই টাকা জমা করা হয়নি। এভাবে অহেদুজ্জামানসহ কমপক্ষে ২০ গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। আর এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে জনতা ব্যাংকের যশোর এরিয়া অফিস থেকে গোপাল মল্লিক এবং নূর মোহাম্মদ নামে দুজন অফিসারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে মোতাবেক ওই দুই অফিসার গত সপ্তাহে মনিরামপুর শাখায় এসে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যাংক অফিসার জানান, তদন্ত করে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অফিসার (ক্যাশ) আলমগীর কবীর রিংকু এবং অপর অফিসার আশিষ কুমার ঘোষের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। আর এ বিষয়টি বাইরে প্রকাশ হওয়ার আগেই সেই সব ভুক্তভোগী গ্রাহকদের ম্যানেজ করার পরামর্শ দেওয়া হয় ওই দুই অভিযুক্তকে। ফলে তারা হাতেপায়ে ধরে ওইসব গ্রাহকের সমুদয় টাকা পরিশোধ করেন।

অভিযুক্ত অফিসার (ক্যাশ) আলমগীর কবীর অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ স্বীকার করে জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী গ্রাহক একজন সাবেক জনপ্রতিনিধির আট লাখ টাকা ফেরত দিয়ে তার সঙ্গে আপস করে নিয়েছেন। অপরজন আশিষ কুমারও টাকা ফেরত দিয়েছেন।

ব্যাংকের ওই নির্ভরযোগ্য সূত্র আরো জানান, এরই মধ্যে নিরঞ্জন ঘোষ, অহেদুজ্জামানসহ ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সমুদয় টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। আর এসব করা হয়েছে অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে। অবশ্য এ ঘটনায় অফিসার আলমগীর কবীর রিংকু এবং আশিষ কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে গত মঙ্গলবার আলমগীর কবীরকে মনিরামপুর থেকে যশোর এরিয়া অফিসে ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) করা হয়েছে। অপরজন আশিষ কুমার ঘোষকে নাভারন শাখায় বদলি করা হয়েছে। আলমগীর কবীর এবং আশিষ কুমার শাস্তির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে এ ব্যাপারে কোনো প্রকার মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ব্যাংক ম্যানেজার এমরান হোসেন শামিম। যশোরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মিজানুর রহমান গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে জানান, গত মঙ্গলবার এরিয়া অফিসের আওতায় বিভিন্ন শাখার আটজনকে বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে মনিরামপুরে দুজন অফিসার রয়েছে। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads