• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
কারাগারে আরামেই আছেন মিজান-বাছির

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

কারাগারে আরামেই আছেন মিজান-বাছির

ছক কষছেন মুক্তির

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

কারাগারে আরাম-আয়েশেই আছেন পুলিশের বিতর্কিত ও বরখাস্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান এবং ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। কারাগারে বসেই তারা এখন ছক কষছেন মুক্তির। এরই মধ্যে তাদের নির্দেশনামতো স্বজনরা সরকারের বিভিন্ন প্রভাবশালীদের দ্বারস্থ হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

গতকাল রোববার হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছেন দুদকের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পরিচালক এনামুল বাছির। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বাছিরের আইনজীবী এমএম জামাল হোসেন এ আবেদন জমা দেন। তিনি জানান, আবেদনটির ওপর বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হবে।

এর আগে ঘুষ লেনদেনের মামলায় গত ২৩ জুলাই এনামুল বাছিরের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েস। একই সঙ্গে জেল কোড অনুযায়ী তাকে ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় এনামুল বাছিরসহ পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গত ১৬ জুলাই মামলা করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষায় ঘুষ লেনদেন নিয়ে তাদের কথোপকথনের অডিও’র সত্যতা পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ‘দুদকের বরখাস্ত পরিচালক বাছির নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন। মিজান দুর্নীতির অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য বাছিরকে ঘুষ দিয়েছেন। আর এসব করে দুজনই দণ্ডবিধির ১৬২/১৬৫ (ক)/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ অনুসন্ধানকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, নথিপত্র পর্যালোচনা, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) ফরেনসিক প্রতিবেদন ও প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, মিজানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুদকে অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয়। অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গত বছরের ২৫ নভেম্বর বাছিরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি কাজ শুরু করেন গত বছরের ২৯ নভেম্বর।

অনুসন্ধান চলাকালে এ বছরের ৯ জুন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার হয়, ডিআইজি মিজান তার বিরুদ্ধে চলা অনুসন্ধান প্রভাবিত করতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন। বিষয়টি দুদকের নজরে এলে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে বাছিরের বক্তব্য নেয়। পরে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত বলে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। গত ১৩ জুন বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিন সদস্যের এই অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছিল।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. মাহবুবুল ইসলাম জানান, কারাগারে তারা ভালো আছেন। তারা প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা। তাই তারা ডিভিশন সেলে আছেন। সেখানে ভিআইপি মর্যাদায় তাদের রাখা হয়েছে।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছেন, কারাগারে বসেই মুক্তির ছক কষছেন মিজান-বাছির। কারাগারে স্বজনরা দেখা করতে গেলে তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। কীভাবে মুক্তি মিলবে, তা নিয়ে নানা পরিকল্পনা শেয়ার করছেন স্বজনদের সঙ্গে। তাদের দিকনির্দেশনা মতো বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলে দৌড়ঝাঁপ করছেন স্বজনরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads