• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ঘুমন্ত ছেলেকে নিয়ে যান বাবা, খুন করেন চাচা-ভাই

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

ঘুমন্ত ছেলেকে নিয়ে যান বাবা, খুন করেন চাচা-ভাই

  • সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৬ অক্টোবর ২০১৯

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পাঁচ বছরের শিশু তুহিনকে হত্যা করেন বাবা, চাচা ও চাচাত ভাই। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান এ দাবি করেন।

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পরিবারের লোকজন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে উল্লেখ করে এসপি জানান, পুলিশের কাছে শিশু তুহিন হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বাবা ও চাচা। হত্যার ঘটনায় সুনামগঞ্জের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তুহিনের চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাত ভাই শাহরিয়ার। আদালতে হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেন তারা।

স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে এসপি মিজানুর রহমান আরো বলেন, রোববার রাত আড়াইটার দিকে বাবা আবদুল বাছির তুহিনকে কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে যান। পরে চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাত ভাই শাহরিয়ার তুহিনকে খুন করেন। পরে তুহিনের কান ও লিঙ্গ কেটে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় তুহিনের বাবাও জড়িত। তার সহযোগিতায় এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তার সামনেই শিশু তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় তুহিনের বাবাসহ থানায় নিয়ে পাঁচজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই তুহিনকে খুন করা হয় বলে পুলিশকে জানান বাবা ও চাচা।

সোমবার সন্ধ্যায় মিজানুর রহমান জানিয়েছিলেন, শিশু তুহিন হত্যায় পরিবারের লোকজন জড়িত। তুহিন হত্যাকাণ্ডে তার পরিবারের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তুহিনকে কেন মারা হয়েছে, কীভাবে মারা হয়েছে, কয়জনে মেরেছে পুরো ঘটনা জানা গেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলব না। তবে শিগগিরই আদালতের মাধ্যমে পুলিশ রেকর্ড দিয়েই আসামিদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল তাদের আদালতে পাঠিয়ে জবানবন্দি নেওয়া হয়।

এর আগে তুহিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবাসহ তিনজনকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বিকালে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামকান্ত সিনহা তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দিরাই থানার ওসি আবু তাহের মোল্লা জানিয়েছেন এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল ভোরে তুহিনের মা বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। তবে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের নাম জানাননি।

উল্লেখ্য, রোববার রাতে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে রাতের আঁধারে পাঁচ বছরের শিশু তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘাতকরা তার লাশ রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। এ সময় তুহিনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। তার পেটে দুটি ছুরি ঢোকানো ছিল, দুটি কান কাটা, এমনকি যৌনাঙ্গটিও কেটে ফেলা হয়।

খবর পেয়ে সোমবার সকালে জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, সিআইডি ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বাবা আবদুল বাছির ও তার তিন চাচা মাওলানা আবদুল মোছাব্বির, জমসেদ মিয়া, নাছির, জাকিরুল, চাচি খায়রুন বেগম এবং চাচাত বোন তানিয়াকে থানায় নিয়ে আসা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই পুলিশ খুনের কারণ ও খুনিদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads