• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

অপরাধ

টং দোকানি থেকে শতকোটি টাকার মালিক রাজীব

  • এমদাদুল হক খান
  • প্রকাশিত ২১ অক্টোবর ২০১৯

রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় একটি টং দোকানের মালিক ছিলেন তারেকুজ্জামান ওরফে রাজীব। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান রাজীবের বাবা রডমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। তার চাচা ছিলেন রাজমিস্ত্রি। থাকতেন একটি বস্তিতে। বস্তির ছেলেদের নিয়েই গড়ে তোলেন একটি বাহিনী। তারা মোহাম্মদপুরে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ভূমিদখলসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে টাকা খরচ করে বাগিয়ে নেন যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সম্পাদকের পদ। আর পেছন ফেরে তাকাতে হয়নি রাজীবকে। একসময় নির্বাচিত হন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান। সামান্য টং দোকানদার থেকে হয়ে যান শতকোটি টাকার মালিক। দেশ-বিদেশে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। অবশেষে শনিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। তার গ্রেপ্তারের খবরে মোহাম্মদপুরে বয়ে যায় আনন্দের বন্যা। নির্যাতনের শিকার মানুষগুলো তার শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলও করেন।  

গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। বিক্ষোভ মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ফের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে শেষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা রাজীবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া আম্বিয়া বেগম নামের এক নারী অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে তসিরকে সাড়ে তিন বছর আগে হত্যা করেছিল রাজীবের লোকজন। তিনি বলেন, আমার ছেলেকে রাজীবের লোকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

জানা গেছে, তসির মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান ইউনিট আওয়ামী লীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তার হত্যার বিচারের দাবিতে অনেকেই স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভ করতে আসা মাসুম নামের এক ব্যক্তি দাবি করেন, কিছুদিন আগে আমাকে রাজীবের লোকজন কুপিয়েছিল। চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে আমাকে ওরা কুপিয়েছিল। আমরা এর বিচার চাই। এতদিন আমরা কোনো কথা বলতে পারিনি।

ফারুক নামের স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, রাজীবের বাবা ছিলেন রাজমিস্ত্রি। সেখান থেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় কাউন্সিলর হয়ে এলাকায় রাজত্ব কায়েম করেন রাজীব। চাঁদাবাজি আর জমি দখল করে প্রচুর টাকার মালিক হয়েছেন তিনি।

মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী আবদুল হালিম বলেন, কাঁচাবাজার পুরোটা তার (রাজীব) নিয়ন্ত্রণে। প্রতি দোকান থেকে প্রতিদিন তার লোকজনকে অন্তত ১৫০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। এর চেয়ে বেশিও দিতে হয় কারো কারো।

এদিকে এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন ‘চাঁদাবাজের ফাঁসি চাই, রাজীবের শাস্তি চাই’, ‘রাজীবের চামড়া, তুলে নেব আমরা’।

গত শনিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর রোডের ৪০৪ নম্বর বাসায় অভিযান চালিয়ে কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটির ১ নম্বর রোডের ৩৩ নম্বর বাসায় অভিযান চালানো হয়। একইসঙ্গে জমিজমার বিভিন্ন কাগজপত্রও জব্দ করা হয়েছে। একই সময় আলামত ধ্বংস এবং কাজে অসহযোগিতার কারণে রাজীবের সহযোগী (পিও) সাদেককে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। কাউন্সিলর রাজীবের বাসায় অভিযান পরিচালিত হয় র‍্যাব-১ ও র‍্যাব-২-এর সমন্বয়ে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।

র‍্যাব-২-এর অপারেশন অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাহিদ আহসান বলেন, রাজীবের বাসায় অভিযান চালিয়ে ব্যাংকে জমা দেওয়া একটি পাঁচ কোটি টাকার রসিদ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ এফডিআরের নথি পাওয়া গেছে। শুধু তা-ই নয়, তার স্ত্রীর নামেও কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে গতকাল রোববার সকালে র‍্যাব-১-এর অপারেশন অফিসার সুজয় কুমার সরকার বলেন, কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবকে র‍্যাব-১-এর কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার সঙ্গে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও সন্ত্রাসবাদে আর কে কে জড়িত, সেসব বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর কাউন্সিলর রাজীবকে রাত ৮টার দিকে রাজধানীর ভাটারা থানায় হস্তান্তর করা হবে। যেহেতু বসুন্ধরা এলাকাটি ভাটারা থানার অধীন, সে কারণেই তার বিরুদ্ধে এ থানায় মামলা হবে। 

র‍্যাব-২-এর অপারেশন অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাহিদ আহসান বলেন, রাজীবের বাসায় অভিযান চালিয়ে ব্যাংকে জমা দেওয়া একটি পাঁচ কোটি টাকার একটি রসিদ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ এফডিআরের নথি পাওয়া গেছে। শুধু তা-ই নয়, তার স্ত্রীর নামেও কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে।

মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, আমরা মোহাম্মদপুরে তার বাসা এবং অফিসে তল্লাশি করেছি। সেখানে তেমন কিছু পাইনি। কারণ আমরা যা বুঝতে পেরেছি, তার বাড়িতে আর্থিক লেনদেন-সংক্রান্ত যেসব ডকুমেন্ট ছিল সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে তারই একজন সহযোগীর আত্মীয় বাড়ি থেকে একটি চেকবই উদ্ধার করা হয়েছে। বইটিতে দেখা গেছে, ব্র্যাক ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে একদিনে (তিনটি চেকের মাধ্যমে) পাঁচ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা এগুলো তদন্ত করে দেখছি— কোথায় টাকা জমা দিয়েছেন, টাকাগুলো কোথায় গিয়েছে। আপাতত তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অর্জিত আয়ের উৎস এবং অর্থ পাচারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং এই অর্থ তিনি কোথায় খরচ করেছেন দেখা হবে। যদি এখানে মানি লন্ডারিংয়ের কোনো বিষয় থাকে তখন তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা হবে।

ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার বলেন, রাজীবের সহযোগী এবং তার সঙ্গে জড়িত রয়েছে এমন আত্মীয় বা অনাত্মীয় প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার তো আসলে তার বৈধ আয়ের কোনো কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।

সারওয়ার আলম বলেন, তার যে একটি রাজকীয় বাড়ি রয়েছে এ বাড়িটির বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। বাড়ির প্রতিটি আসবাবপত্র থেকে শুরু করে প্রতিটি জিনিস সে বাইরে থেকে আমদানি করেছে। এসব জ্ঞাত আয়ের বহির্ভূত বলে আমাদের মনে হয়েছে।

তিনি বলেন, কাউন্সিলর হওয়ার আগপর্যন্ত তার দৃশ্যমান কোনো ধরনের ব্যবসা বা পেশা ছিল না। বর্তমানে সিটি করপোরেশন থেকে যে সম্মানী পান, সেটা তার একমাত্র প্রধান আয়। এছাড়া যে অবৈধ লেনদেনের বিষয়গুলো রয়েছে, সেসব তদন্তসাপেক্ষে বেরিয়ে আসবে।

সারোয়ার আলম আরো বলেন, তিনি আসলে কাউন্সিলর হওয়ার পরপরই ২০১৬ সালে তিনটি কোম্পানি খুলেছেন। সিলিকন, এক্কা ও নাইমা এন্টারপ্রাইজ— এই তিন প্রতিষ্ঠানের নামে আসলে তিনি জমিদখল করেছেন। এ অপরাধগুলো করতে গিয়ে তিনি যে লোকদের ব্যবহার করেছেন, আত্মীয় এবং অনাত্মীয়, প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সূত্র জানায়, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যেই সিটি করপোরেশন এলাকার কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দখল, চাঁদাবাজি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কাউন্সিলরদের কেউ কেউ সরাসরি ক্যাসিনো কারবারের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। অভিযানের পরপরই অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। মোহাম্মদপুরের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবও গত দুই সপ্তাহ ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। র্যাব সদর দপ্তর ও র্যাব-২-এর একটি যৌথ দল তাকে নজরদারি করে। তবে ক্যাসিনোর সঙ্গে রাজীবের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছে র‍্যাব। এর আগে পাশের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তার বাসা থেকেও বিপুল টাকা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

সূত্র জানায়, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যেই সিটি করপোরেশন এলাকার কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দখল, চাঁদাবাজি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কাউন্সিলরদের কেউ কেউ সরাসরি ক্যাসিনো কারবারের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। অভিযানের পরপরই অনেকেই পালিয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। মোহাম্মদপুরের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবও গত দুই সপ্তাহ ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। র্যাব সদর দপ্তর ও র্যাব-২-এর একটি যৌথ দল তাকে নজরদারি করে।

রাজীবকে গ্রেপ্তারের পর র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও সন্ত্রাসবাদসহ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসতে থাকে কাউন্সিলর রাজীবের বিরুদ্ধে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিছুদিন ধরে আমরা তাকে খুঁজছিলাম। কিন্তু সে আত্মগোপনে ছিল। শনিবার র্যাব জানতে পারে, রাজীব বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার বন্ধুর বাসায় আত্মগোপন করে আছে। গ্রেপ্তারের সময় রাজীবের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি গুলি, একটি ম্যাগজিন, সাত বোতল বিদেশি মদ ও ৩৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।

র্যাব সূত্র থেকে জানা গেছে, গত কয়েক দিন আগে ৫ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে তার কিছু কাগজপত্র পাওয়া গেছে। অনেকগুলো জমির দলিল পাওয়া গেছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের অনেক চেক বই পাওয়া গেছে।

কাউন্সিলর রাজীবের মোহাম্মদপুরের বাসাটি ২০১৬ সালের শেষের দিকে নির্মাণ করা হয়। মূলত তার আগের বছর তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ির নিচে একটি গুপ্ত কক্ষ রয়েছে, যেখানে রাজীব গোপনীয় কিছু কাজ করতেন বলে জানিয়েছে র্যাব সূত্র। 

রাজীব বসুন্ধরার ওই বাসায় কত দিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব কর্মকর্তা সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, আমাদের জানামতে, ১৩ অক্টোবর থেকে তিনি এই বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। তার বন্ধুকে আমরা পাইনি, সে বিদেশে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা ও দখলদারিত্বের কী অভিযোগ রয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা মাত্র অভিযান এখানে শেষ করেছি। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি।

রাজীবের কাছ থেকে পাসপোর্ট পাওয়া গেছে, তার মানে তিনি কি পালাতে চেয়েছিলেন— এমন প্রশ্নের জবাবে সারোয়ার বিন কাশেম জানান, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

রাজীবকে নিয়ে গত ১০ দিনের ব্যবধানে ঢাকা উত্তর সিটির মোহাম্মদপুর এলাকার দুই ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তার করল র‍্যাব। ১০ অক্টোবর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান ওরফে মিজানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। মিজান গ্রেপ্তারের পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন রাজীব। কয়েকদিন ধরেই তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি নিজ কার্যালয়েও যাচ্ছিলেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, মিজান গ্রেপ্তার হওয়ার পর রাজীব তার দুটি অস্ত্র থানায় জমা দিয়েছিলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, টং দোকানদার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ, চন্দ্রিমা হাউজিং, সাত মসজিদ হাউজিং, ঢাকা উদ্যানসহ বিভিন্ন এলাকায় দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে রাজীবের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে প্রবাসীদের বাসাসহ এলাকার অনেকের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে। বর্তমানে মোহাম্মদপুর এলাকায় একাধিক বাড়ি, জমি ও একাধিক বিলাসবহুল গাড়ির মালিক তিনি। সাবেক একজন প্রতিমন্ত্রীর হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হওয়া রাজীব ২০১৫ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর পদে জয়লাভ করেন। এরপর থেকেই মূলত ভাগ্য আরো খুলে যায় তার।

আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মী জানিয়েছেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার অনুসারী ছিলেন রাজীব। তিনি নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর রাজীব বস্তির ছেলেদের নিয়ে বাহিনী গড়ে তোলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, রাজীব তার বাহিনী দিয়ে জমি দখল ও চাঁদাবাজি করাতেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে চাদা সংগ্রহের জন্য তার আলাদা বাহিনী করে দেওয়া ছিল। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে তিনি ১৫-২০টি জায়গা বা ফ্ল্যাট দখল করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই রাজীবের পরিবর্তন শুরু হয়। এক সময় খারাপ মানুষকে নিয়ে তার চলাফেরা শুরু। এসবেরই পরিণতি হিসেবে রাজীব গ্রেপ্তার হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই রাজীবের পরিবর্তন শুরু হয়। ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন রাজীব। তিনি মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এক মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আবার ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads