• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
জানুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে ৪ নারী ধর্ষণের শিকার

প্রতীকী ছবি

অপরাধ

জানুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে ৪ নারী ধর্ষণের শিকার

এক মাসেই ৩২৬ নারী বিভিন্নভাবে নির্যাতিত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়িয়েছে দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন পরিস্থিতি। বেড়েছে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা। বেসরকারি সংস্থাগুলোর হিসাব বলছে, জানুয়ারি মাসে প্রতিদিন গড়ে ৪ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।

বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদ ১৪টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এই তথ্য তৈরি করেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি। কারণ অনেক নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশিত হচ্ছে না। নানা কারণে অনেক নারী ও তাদের পরিবার বিষয়গুলো লুকানোর চেষ্টা করে থাকেন। চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১১৬ জন নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর ৬০ জন কন্যাশিশু। গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২০ নারী। ধর্ষণের ঘটনাসহ মোট ৩২৬ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের ঘটনার রেকর্ড পাওয়া গেছে।

পরিসংখান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯৬ জন, গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২০ জন, এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছেন ২৪ জনকে। শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে ৮ জন। যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১০ জন।

অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছেন ৩ জন। অপহরণের শিকার হয়েছেন মোট ১৫ জন। নারী ও শিশু পাচার হয়েছে ২ জন। যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে ৩ জনকে। যৌতুকের কারণে নির্যাতন করা হয়েছে ১৫ জনকে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১০ জন। বিভিন্ন কারণে ৪০ জন নারী ও কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে ৬ জনকে। এক মাসে ১৭ জন নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন নির্যাতনের কারনে ২১ জন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। উত্ত্যক্ত করা হয়েছে ৬ জন। উত্ত্যক্তের কারণে আত্মহত্যা করেছে ১ জন। থেমে নেই ফতোয়া। জানুয়ারি মাসে ফতোয়ার শিকার হয়েছে ৪ জন। বাল্যবিবাহ হয়েছে ১ জন ও বাল্যবিবাহের চেষ্টা করা হয়েছে ৯ জন। জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়েছে ১ জনকে। সাইবার ক্রাইমের শিকার ৫ জন। এছাড়া অন্যান্যরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৯ জন নারী ও শিশু।

এদিকে, গত শুক্রবার গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানা এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে ভাইকে বেঁধে রেখে বোনকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। রাত ১১টার দিকে তার ছোট ভাইকে নিয়ে চেরাগআলী থেকে রিকশাযোগে আরিচপুর বাসায় যাওয়ার পথে হিমারদীঘি এলাকায় পৌঁছালে ৪ বখাটে জোরপূর্বক রিকশা থেকে নামিয়ে ভিকটিম ও তার ছোট ভাইকে হাত-পা বেঁধে আটকে রাখে। পরে ঘটনার শিকার কিশোরীকে জোরপূর্বক একটি খালি ট্রাকে উঠিয়ে জোরপূর্বক তাকে গণধর্ষণ করে। পুলিশ চার ধর্ষককে আটক করেছে। ঘটনার শিকার কিশোরীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বলছে, বর্তমানে রাস্তাঘাট, গণপরিবহনসহ সর্বত্র নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং নারী ও শিশুর স্বাধীন চলাচল অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ ব্যাপারে বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণসহ ধর্ষণের ঘটনার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads