• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
বছরে রাজস্ব ক্ষতি ৮০ হাজার কোটি টাকা

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

বছরে রাজস্ব ক্ষতি ৮০ হাজার কোটি টাকা

  • সাইদ আরমান
  • প্রকাশিত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

শক্ত সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে অবৈধ বন্ড কারবারিদের। ফুলেফেঁপে উঠেছেন সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত এ অবৈধ ব্যবসায়ীরা। প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন তারা। বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করছে চক্রটি। বছরে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের নেপথ্যে রয়েছেন কয়েকজন। তাদের নেতৃত্বেই পরিচালিত হচ্ছে এই অবৈধ কারবার। এদের প্রায় সবাই রাজধানীর পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও যেন জিম্মি হয়ে পড়েছে তাদের শক্তির কাছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে বার বার বাধার মুখে পড়েছে। দায়িত্ব পালন করতে গেলে এনবিআরের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সময় বাধা দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভ করে শুদ্ধি অভিযানকে ভেস্তে দিয়েছে সিন্ডিকেটটি।

সর্বশেষ গত রোববার ও গতকাল এনবিআরের কর্মকর্তারা অভিযানে গেলেও একই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়। একই সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আক্রান্ত হয়েছেন দুই সাংবাদিক। তাদের ক্যামেরা ও গাড়িও ভাঙচুর করে বন্ড হোতারা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন, যতই শক্তিশালী হোক- এই সিন্ডিকেটকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

সূত্র বলছে, বন্ড কেলেঙ্কারির ১২ গডফাদার হলেন পুরান ঢাকার ২৫ জিন্দাবাহার প্রথম লেনের নূরজাহান মার্কেটের ফিনিক্স ইন্টারন্যাশনালের মালিক আবদুর রহিম, ১৫/৭ জিন্দাবাহার দ্বিতীয় লেনের সোনা মিয়া মার্কেটের সিটি পেপারের মালিক মো. বশির, নূরজাহান মার্কেটের রহমত এন্টারপ্রাইজের মালিক রহমত, ৩১ জিন্দাবাহার লেনের চৌধুরী মার্কেটের হক ট্রেডিংয়ের জাহাঙ্গীর, ২৫/২ জিন্দাবাহার প্রথম লেনের আবুল মার্কেটের সানফ্লাওয়ার ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানের আবুল হোসেন, উরিরচর মার্কেটের সিয়াম অ্যান্ড শেফা প্রতিষ্ঠানের সেলিম, নূরজাহান মার্কেটের ফাল্গুনী ট্রেডার্সের আবুল কালাম সুমন, ৪০/৪১ জিন্দাবাহার প্রথম লেনের চান মিয়া মার্কেটের সীমান্ত ট্রেডিংয়ের মো. মিলন, নূরজাহান মার্কেটের গোল্ডেন বার্ড ইন্টারন্যাশনালের অনীল, একই মার্কেটের খালেদ ইন্টারন্যাশনালের আবদুল মাতিন জুয়েল, আলম ট্রেডিংয়ের আলমগীর হক এবং বিনিময় পেপারের মালিক মো. দুলাল।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিন্ডিকেটটি বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের পাশাপাশি বন্ড দুর্নীতির মাধ্যমে একেকজন শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। 

এছাড়া আরো ৬৮ চোরাকারবারি এর সঙ্গে জড়িত বলে তথ্য পেয়েছে বন্ড কমিশনারেট ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মামলাও হয়েছে। অনেকে কাগজে-কলমে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে বন্ড সুবিধায় বিনা শুল্কে পণ্য আমদানি করে খোলাবাজারে বিক্রি করে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ কোনো একসময় উৎপাদনে থাকলেও এখন নেই। এই গোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় এক হাজার ।

সূত্রগুলো বলছে, বছরে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। অর্থপাচার এবং অবৈধভাবে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি করে এসব গডফাদার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার ও বিভিন্ন অপকৌশলের কারণে।

পুরান ঢাকার কিছু ব্যবসায়ী নেতা পুরো এলাকার বন্ডের চোরাই পণ্যের কারবার করছেন নেপথ্যে থেকে। পুরান ঢাকার আবুল মার্কেটের আবুল হোসেন বন্ডের পণ্যের অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। গত রোববার অভিযান পরিচালনা করা হলে তার সহযোগীদের বিপুল পণ্য জব্দ করা হয়। আরেক ব্যবসায়ী আবদুল মাতিন জুয়েল এ অপকর্মের দায়ে ধরা পড়লেও নানা ফাঁকফোকর গলে কিছুদিন পর জামিনে ছাড়া পেয়ে একই কারবার করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তার গুদামেও চোরাই পণ্য জব্দসহ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে বন্ড কমিশনারেট। এর আগে জামাল নামে আরেক কারবারির গুদামে ধরা পড়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই কাগজ।

জানতে চাইলে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, অনেক ব্যবসায়ী কর অব্যাহতি নিয়ে কাঁচামাল এনে দেশের বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। কয়েকটি খাতে এটি বেশি হচ্ছে। তৈরি পোশাক খাত, কাগজশিল্পে বন্ডের অপব্যবহার হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করেছি এটি বন্ধ করতে। আমরা ব্যবসায়ীদের বলেছি বন্ডের অপব্যবহার বন্ধ করতে। তা না হলে একপর্যায়ে বন্ড সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ার পথে যেতে হবে সরকারকে।

সূত্র জানায়, নয়াবাজারের যে একডজন কারবারির বিরুদ্ধে তথ্য মিলেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে এ অপকর্মে জড়িত। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের অভাবে তাদের গ্রেপ্তারও করা যাচ্ছে না। তবে সূত্র জানায়, আগের মামলার তদন্তের সূত্রে তাদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

বন্ড কমিশনারেটের দায়ের করা ২১টি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডি ৬৮ জনের ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তারের পর কয়েকজন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। তদন্ত চলাকালে গ্রেপ্তার এড়াতে গা-ঢাকা দিয়ে চলছেন বেশ কয়েকজন। কাপড়ের পণ্য চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত ঢাকা ও চট্টগ্রামের এসব কারবারির বিরুদ্ধে এখনো তদন্ত চলছে। বেশিরভাগ চোরাকারবারির দোকান আছে পুরান ঢাকার ইসলামপুর, গুলশানারা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, সদরঘাট ও বিক্রমপুর মার্কেটে। এদের মধ্যে আজিজুর রহমান ওরফে বোরকা আজিজ, আইনাল ওরফে হাতকাটা আইনাল, পেট মোটা সোহেল, বিজি কাইয়ুম ওরফে ডেঞ্জারাস কাইয়ুম, ইয়াসিন, রেজা রোমান, খোকা মিয়া, নেসার মোল্লা, হাজি সম্রাট ওরফে সম্রাট হাওলাদার, চাঁদপুরের বাসিন্দা শাহজালাল ও তার ভাতিজা সারোয়ার, পাবনার বাসিন্দা বকুল মিয়া ও তার মেয়ের জামাই মিন্টু, হাজি মোমিন আলী, দুদু খান, মতিন ও আওলাদ হোসেন ওরফে আওলাদ চেয়ারম্যান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আইনাল হোসেন এক যুগ আগেও সদরঘাটে কাপড়ের দোকানে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতেন। তার বাবার নাম হাজি মোতালেব হোসেন হাওলাদার। বর্তমানে আইনালের পরিবারের সদস্যরা চার-পাঁচটি প্রাডো গাড়ি ব্যবহার করে। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়নের ঢুলুগাঁওয়ে তৈরি করেছেন আলিশান বাড়ি। রাজধানীতে রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। সদরঘাটসহ ইসলামপুরে বিভিন্ন মার্কেটে অন্তত ২০টি দোকানের মালিক তিনি।

চোরাকারবারিদের অন্যতম খোকা মিয়া বর্তমানে ইসলামপুরের বড় কাপড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। একসময় তিনি ভয়েল কাপড়ের খুচরা ব্যবসায়ী ছিলেন। ইসলামপুরেই তার ১৫-২০টি দোকান রয়েছে। নিপ্পন ট্রেডার্সসহ একাধিক মিল-ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছেন। চোরাচালান জগতে তিনি নওগাঁর খোকা নামে ব্যাপক পরিচিত। কারবারির তালিকায় নাম থাকা নেসার মোল্লা বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির নেতা। ভাতিজা সারোয়ারকে সঙ্গে নিয়ে বিশাল চোরাচালানি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন চাঁদপুরের শাহজালাল। চোরাকারবারি হিসেবে শনাক্ত হওয়া কাইয়ুম ওরফে বিজি কাইয়ুম একসময় বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। তিনি এখন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে চলেন। বিজি কাইয়ুম গুলশানারা সিটিকেন্দ্রিক চোরাচালান সিন্ডিকেটের গডফাদার। একইভাবে খোলস পাল্টেছেন ইয়াসিন ওরফে ইয়াসিন শেখ।

বন্ড সুবিধায় আমদানি করা পণ্যের বেশিরভাগই কাগজ ও কাগজজাতীয় পণ্য। তবে এ সুবিধায় প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক, রাসায়নিক, রডসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যও আমদানি করা হয়। এ ছাড়া কূটনীতিবিদদের ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন পণ্য বন্ড সুবিধায় বিনাশুল্কে আমদানির সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

বন্ড সুবিধা পাওয়া তৈরি পোশাকশিল্পের বিভিন্ন কারখানা কাগজ ও কাগজজাতীয় পণ্য আমদানি করে থাকে। সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা সাড়ে ৯ হাজার বন্ড সুবিধাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের অর্ধেকের বেশি এবং ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের আওতায় থাকা ছয় হাজারের মধ্যে চার হাজারই গার্মেন্ট বন্ড।

সরেজমিনে রাজধানীর পুরান ঢাকার নয়াবাজার, হাশেম টাওয়ারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুল্কমুক্তভাবে আমদানি করা আর্ট বোর্ড, ডুপ্লেক্স বোর্ড, প্রিন্টিং পেপারসহ বিভিন্ন কাগজজাতীয় পণ্যের রমরমা অবৈধ ব্যবসা চলছে। দেশীয় শিল্পে উৎপাদিত প্রতি টন ২০০ থেকে ৩৫০ জিএসএমের (গ্রাম/বর্গ মিটার) আর্ট বোর্ড ১ লাখ ২ হাজার থেকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকায়, ১৬ জিএসএমের হার্ড টিস্যু ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়, ডুপ্লেক্স বোর্ড ৬২ থেকে ৬৫ হাজার টাকায়, জিএসএমের সাদা প্রিন্টিং পেপার (কাগজ) ৭৫ থেকে ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ খোলাবাজারে বন্ড অপব্যবহারে বিক্রি হওয়া একই পরিমাণের একই জাতীয় আর্ট বোর্ড ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা, হার্ড টিস্যু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায়, ডুপ্লেক্স বোর্ড ৫২ থেকে ৫৮ হাজার টাকায়, সাদা প্রিন্টিং পেপার (কাগজ) ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ পেপার মিলস্ অ্যাসোসিয়েশনের সচিব নওশের আলম বাংলাদেশের খবরকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে টেলিফোনে বলেন, এদেশে বন্ড সুবিধায় সবচেয়ে বেশি আমদানি হচ্ছে কাগজ ও কাগজজাতীয় পণ্য। লাভ না রেখে শুধু উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সমান রেখে যে দামে দেশি প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য বিক্রি করছে, তার চেয়ে বিনাশুল্কে আমদানি করা একই জাতীয় পণ্য কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এভাবে লোকসান গুণে দেশীয় কাগজশিল্পগুলোর টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে।

জানা গেছে, বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা অপব্যবহারের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির তথ্য দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, বন্ড লাইসেন্সধারীদের ওপর কাস্টমস ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কার্যকর নজরদারি নেই।

সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো বলছে, কাগজশিল্পে ৭০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ১৩০টি কাগজকলে ১৫ লাখ টন উৎপাদন ক্ষমতা থাকলেও তা হচ্ছে না। কিন্তু বন্ডের অপব্যবহারের কারণে মাত্র ৩ থেকে ৪ লাখ টন কাগজ বাজারে সরবরাহ করা যাচ্ছে। বাকি উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কাস্টমস ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাঝে মধ্যে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু অভিযানের ধারাবাহিকতা থাকছে না। কার্যকর অভিযান হলে অসৎ ব্যবসায়ীরা ধরা পড়তেন। এক্ষেত্রে কাস্টমসের সক্রিয় ভূমিকা দরকার। চোরাচালানে জড়িত ওইসব প্রতিষ্ঠান ডুপ্লেক্স বোর্ড, পেপার বোর্ড, হোয়াইট কালার, আর্ট কার্ড, লাইনার পেপার, কার্ড বোর্ড, ক্রাফট, ব্রাউন লাইনার পেপার, মিডিয়া পেপার, টিস্যু পেপার, শার্টিং, পেপার রিবন, কার্টন, মারকার পেপার, সিকিউরিট ট্যাগ, স্টিকার ইত্যাদি কাগজজাতীয় পণ্য আমদানি করছে।

দেশের বার্ষিক বাজেটের ঘাটতি ভূমিকা রাখে পূরণে রাজস্ব আয়। বন্ডের অপব্যবহারে প্রতিবছর ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। এ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হলে দেশ উপকৃত হতো। এক্ষেত্রে কাস্টমস ও সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হলে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হবে দেশ। বন্ডের অপব্যবহারে দেশীয় শিল্পখাত ধ্বংসের মুখে পড়েছে। অথচ সরকার বন্ড সুবিধা দিয়েছে রপ্তানি আয় বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য। কিন্তু তার পরিবর্তে বন্ড অপব্যবহারকারীরা অর্থনীতির ক্ষতি করছে। এখন সরকার ক্ষতির বিষয়টিতে গুরুত্ব না দিলে ভবিষ্যতে বড় সংকটে পড়বে শিল্পখাত।

সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিদিন গভীর রাতে ট্রাকে ট্রাকে কাপড় ও কাগজ-জাতীয় পণ্যসামগ্রীবোঝাই ট্রাক খালাস হয় রাজধানীর ইসলামপুর, নয়াবাজার, চকবাজার মোড়, সাভার ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে। নিয়মানুযায়ী পুনঃরপ্তানির শর্তে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি হওয়া পণ্যসামগ্রী খালাস হওয়ার কথা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়্যারহাউসে। কিন্তু চোরাকারবারিতে জড়িত একটি সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ীচক্র সে পণ্য বিক্রি করছে কালোবাজারে। বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধার অপব্যবহার ও চুরির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ইপিজেডগুলোর কর্মকর্তারা। আর কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ী শুল্ক দিয়ে সামান্য পণ্য আমদানি করেন, বাকি পণ্য বন্ড থেকে অপসারিত পণ্যের সঙ্গে মিলিয়ে এক ভ্যাট চালানের রসিদ ব্যবহার করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads