• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
মানিলন্ডারিং মামলায় খালেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

মানিলন্ডারিং মামলায় খালেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া (ক্যাসিনো খালেদ) ও তার দুই ভাইসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আয়ের উৎস অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, সংঘবদ্ধভাবে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং ক্যাসিনো ব্যবসা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মানিলন্ডারিং মামলায় এই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার নিম্ন আদালতে এই চার্জশিট জমা দেয় সিআইডি। সিআইডির মুখপাত্র ফারুক হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চার্জশিটে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ছাড়াও তার দুই ভাই মাসুদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও হাসান মাহমুদ ভূঁইয়া, হারুন রশিদ, শাহাদৎ হোসেন উজ্জ্বল ও মোহাম্মদ উল্ল্যাহ খানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

সিআইডি জানায়, তদন্তে আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ভ্রমণ বৃত্তান্ত ও পাসপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি পাসপোর্টে কোনো বিদেশি মুদ্রা এন্ডোর্সমেন্ট করা ছাড়াই বহুবার বিদেশ গিয়েছেন। তিনি বিদেশে যাবার সময় নগদ বিদেশি মুদ্রা পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যেতেন বলে জানা যায়।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার পাসপোর্টে একটি মালয়েশিয়ান ভিসা পাওয়া গেছে। ভিসায় ‘এমওয়াইএস মাই টু হোম’ লেখা আছে যা ‘সেকেন্ড হোম ভিসা’ নামে অধিক পরিচিত। এই ভিসা গ্রহণের শর্ত হিসেবে মালয়েশিয়ার আরএইচবি ব্যাংকে ৩ লাখ রিঙ্গিত (১ রিঙ্গিত সমান ২০ টাকা ৫০ পয়সা) এফডিআর করা আছে। খালেদ নিয়মবর্হিভূতভাবে এই টাকা মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন।

সিআইডি জানায়, সিঙ্গাপুর সিটির জুরং ইস্ট এলাকায় মেসার্স অর্পন ট্রেডার্স পিটিই লিমিটেড নামে খালেদের একটি কোম্পানি আছে। এই কোম্পানির মূলধনও বেআইনিভাবে হুন্ডির মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন তিনি।

খালেদ ও তার কোম্পানির নামে ব্যাংক হিসাব থাকার প্রমাণ হিসেবে ইউওবির ডেবিট কার্ডও জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া তার নামে থাইল্যান্ডের ব্যাংঙ্কক ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্টে ২০ লাখ টাকার সমপরিমাণ থাই বাথ জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

আসামির ব্যাংঙ্কক ব্যাংকে আরও দুটি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। সহযোগী আসামি মোহাম্মদ উল্লাহ তার নির্দেশে বিদেশি মুদ্রা ক্রয় করেন বলে জানা যায়। তিনি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্তে আসামি খালেদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে অবৈধ মাদক, অস্ত্র, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ সংঘবদ্ধ অপরাধলব্ধ আয় জ্ঞাতসারে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার ও পাচারের চেষ্টায় জমা রাখার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

তদন্তে আরও জানা যায়, আসামি মোহাম্মদ উল্লাহ ২০১২ সাল থেকে আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার মালিকানাধীন ভূঁইয়া অ্যান্ড ভূঁইয়া ডেভেলপার লিমিটেড, মেসার্স অর্পণ প্রোপার্টিজ ও অর্ক বিল্ডার্স নামে তিনটি ফার্মের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি আসামি খালেদের নির্দেশে তার অপরাধলব্ধ আয় গ্রহণ করে খালেদের ভাই মাসুদ মাহমুদ ভূঁইয়া সঙ্গে গিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক যেমন-এনসিসি ব্যাংকের মতিঝিল শাখা এবং ব্র্যাক ব্যাংক মালিবাগ শাখায় জমা দিতেন।

আসামি মোহাম্মদ উল্লাহর বিরুদ্ধে আসামি খালেদের অপরাধলব্ধ আয় গ্রহণ, ব্যাংকে জমা এবং পাচারের জন্য অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা ক্রয় করার মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ে সহায়তা করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়ছে।

তদন্তে অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আসামি খালেদের সকল অপরাধ কার্যের প্রত্যক্ষ সহযোগী ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads