• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করে গলা কেটে মাথা ফেলে দেওয়া হয় খালে

ফাইল ছবি

অপরাধ

মতলবে স্কুল ছাত্রী কাকলী হত্যা

পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করে গলা কেটে মাথা ফেলে দেওয়া হয় খালে

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৫ এপ্রিল ২০২০

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী শারমিন আক্তার কাকলীকে হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। অত্যন্ত গোপনে শুক্রবার চাঁদপুর আদালতে পাঠানো করা হয় তাকে।  এর আগে ২২ এপ্রিল রাতে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তাকে উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে জবানবান্দি দেয় আসামী সাইফ উদ্দিন (১৫)। সে একই উপজেলার সুজাতপুর গ্রামের রাসেল মিয়ার ছেলে।

আসামীর জবানবন্দির সূত্র ধরে ওসি মো. নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, প্রথমে কাকলীকে সাইফ উদ্দিন ও তার বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে। পরে গলাটিপে হত্যার পর তার গলা কেটে মাথা খালে ফেলে দেয়।

তিনি বলেন, স্কুলছাত্রী শারমিন আক্তার কাকলীর গ্রামেই আসামী সাইফ উদ্দিন তার নানার বাড়ি থাকতো। সেই সুবাদে ৬ মাস আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্ক চলাকালীন আবার রংপুর থেকে আসা এক রাজমিস্ত্রী ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে কাকলীর। বিষয়টি সাইফ উদ্দিন টের পেয়ে যায়। তারপর ওই রাজমিস্ত্রির সাথে যোগাযোগ করে বন্ধুত্ব পেতে কাকলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে দুই বন্ধু।

গত ২৮ মার্চ সকালে তাকে মুঠোফোনের মাধ্যমে সুজাতপুর বাজারে ডেকে আনা হয়। বাজারে ও আশপাশে কিছু সময় ঘোরাফেরা করে সময় পার করে তারা। দুপুরে তাকে নির্জন জায়গায় অক্সফোর্ড কিন্ডারগার্টেনে নিয়ে যায় তারা। সেখানে প্রথমে দুই বন্ধু পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বিকালে তাকে দুই বন্ধু মিলে গলা টিপে হত্যা করে। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে ও তার মৃতদেহ যাতে কেউ না চিনতে পারে সেজন্য ছুরি দিয়ে মাথা কেটে আলাদা করে ফেলে। সন্ধার পর এলাকা জনশূন্য হলে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০০ ফুট দুরে একটি পরিত্যক্ত খালে পলিথিনে ভরে মাথাটি ফেলে দেয় তারা।

ওসি নাসির উদ্দিন আরও বলেন, চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমানের দিক নির্দেশনায় ও সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) আহসান হাবিবের সহযোগীতায় আসামী গ্রেপ্তারের পর জবানবন্দি অনুযায়ী আমরা খাল থেকে কাকলির মাথা উদ্ধার করি এবং ২৩ এপ্রিল রাতে পাশেই আরেকটি জায়গা থেকে ধারালো ছুরিটি উদ্ধার করি। এ ঘটনায় সাইফ উদ্দিনের বন্ধু রাজমিস্ত্রি জড়িত আছে। তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়াও মৃতুদেহ উদ্ধারের পর আমরা কাকলী ও সাইফ উদ্দিনের বাড়িতে তল্লাশি করি। দুই জনের বাড়িতেই দুই জনের হাতের লেখা কিছু চিঠি পাওয়া গেছে।

দিকে নিহত কাকলির মা রোকেয়া বেগম ঘটনার লোমহর্ষক বিবরণ শুণে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

তিনি বলেন, এমন মৃত্যু আমি মেনে নিতে পারছি না। আমার কলিজার টুকরো মেয়েকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ কাকলী বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় এবং ২৯ মার্চ তার মা বাদী হয়ে থানায় নিখোঁজ ডায়েরী করেন। গত ২২ এপ্রিল সুজাতপুর বাজার সংলগ্ন অক্সফোর্ড কিন্ডারগার্টেনের একটি কক্ষ থেকে কাকুলী মস্তকবিহীন অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কাকুলীর মা রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads