ইলিশের নিরাপদ প্রজনন রক্ষায় চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মতলব উত্তর ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সব ধরণের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শত শত অসাধু জেলে প্রকাশ্যে মেঘনায় ইলিশ আহরণ করছে এবং নদীর পাড়ে এনে বিক্রি করছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নদীর উপরিভাগে কোন ধরণের টহল ও চেক পোস্ট না থাকার কারণে প্রকাশ্য লোকজন ব্যাগ ও বস্তা ভর্তি করে ইলিশ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার দুপুর ১টার দিকে সদর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের লালপুর বাজারের উত্তর পাশে মেঘনা নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে শত শত নৌকা ইলিশ ধরে নিয়ে আসছে এবং বিক্রি করে চলে যাচ্ছে।
কিছু সময় অপেক্ষা করে দেখাগুলো সিএনজি চালিত অটোরিকশা, অটোবাইক, রিকশা, মোরটরসাইকেল করে নারী-পুরুষ ক্রেতা দলে দলে আসছে আর ইলিশ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে একশ্রেণীর মানুষ রয়েছে যারা ক্রেতাদের সাথে দালালি করে। তারা হচ্ছে মেঘনার পূর্ব পাড়ের জেলে ও বখাটে শ্রেণীর লোকজন। তারা সাংবাদিকদের সাথে সাথেও খারাপ আচরণ করে এবং ক্যামেরায় হাত দিয়ে ছবি তুলতে বাধা প্রদান করে।
স্থানীয় নিবন্ধিত জেলে শাহাবুদ্দিন দর্জি ও জিয়া উদ্দিন বলেন, আমরা নিবন্ধিত জেলে। নিষেধাজ্ঞার সময় মা ইলিশ শিকার থেকে বিরত থাকি। কিন্তু লালপুর বাজারের নদীর পাড়ে প্রতিদিন মেঘনার পশ্চিম পাড়ের লক্ষ্মীরচর, রাজরাজেশ্বর ও আলু বাজার এলাকার জেলেরা মাছ শিকার করে এখানে এনে বিক্রি করে। প্রতিবাদ করতে গেলে স্থানীয় নেতাদের মার খেতে হয়। বরং আমরা ইলিশ শিকার থেকে বিরত থেকে ২০ কেজির চালের পরিবর্তে পেয়েছি ১০ কেজি।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক লালপুর গ্রামের একজন বয়স্ক ব্যাক্তি জানান, স্থানীয় নেতারা প্রত্যেক জেলে থেকে ২২ দিন মাছ বিক্রির জন্য ৯ থেকে ১০হাজার টাকা করে চাঁদা নিয়েছেন। যার কারণে প্রশাসনের লোকজন কখন অভিযানে নাম তার খোঁজ খবর রেখে ইলিশ বিক্রি করছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকি জানান, জেলায় ৫১ হাজার জেলে। এর মধ্যে কিছু জেলে রয়েছে অসাধু। যারা মা ইলিশ নিধন করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তাদেরকে ইলিশ শিকার থেকে বিরত রাখতে আমাদের আপ্রাণ প্রচেষ্টা অব্যাহত। এ বছর মা ইলিশ প্রজনন রক্ষায় নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, র্যাব, নৌ-পুলিশ সকলেই খুবই আন্তরিক হয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যে নৌ-পুলিশ বড় ধরণের হামলারও শিকার হয়েছে।