সিরাজগঞ্জে ফের নজজাতক বাচ্চা চুরির ঘটনা ঘটেছে। জন্মের মাত্র ৬ ঘণ্টা পরই নার্স সেজে বাচ্চা চুরি করে নিয়ে গেছে এক নারী। শনিবার বিকেল তিনটার দিকে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হসপিটালে এ চুরির ঘটনা ঘটে। নবাজতক বাচ্চার বাবার নাম মাজেম আলী। মায়ের নাম-সমিতা খাতুন। তাদের বাড়ী সিরাজগঞ্জের তাড়াশের নওগাঁ গ্রামে। ১২ বছর পর জন্মগ্রহন করা নবজাতক সন্তানকে হারিয়ে মা-বাবাসহ স্বজনরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতাল থেকে ২৩দিনের এক বাচ্চা চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ এখনো বাচ্চাটিকে উদ্ধার করতে পারেনি। নতুন করে আবার চুরির ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নবজাতক বাচ্চার চাচা তাজেল মোল্লা জানান, শনিবার ভোররাত তিনটার দিকে ভাইয়ের স্ত্রী সমিতাকে সাখাওয়াত এইচ মেমারিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকাল ৯টার দিকে অপারেশন রুমে সিজারের মাধ্যমে ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম দেন। এরপর বাচ্চা ও তার মাকে হাসপাতালে বেডে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে বোরকা পরিহিত একনারী নার্স পরিচয় দিয়ে বেডের কাছে ঘুরঘুর করতে থাকে। বিকেল তিনটার দিকে নার্স পরিচয়ধারী ওই নারী বাচ্চার নানীর কাছ থেকে বাচ্চাকে কান্না থামানোর কথা কোলে নেয়। এরপর হাটতে হাটতেসেই বারান্দায় যায়। কিছ সময় পরেই নার্স পরিচয়ধারী নারীসহ বাচ্চাকে পাওয়া যায় না।
শিশুটির নানী জানান, ওই নারীর ভাইয়ের ছেলে জন্ম হয়েছে এই হাসপাতালেই। কিন্তু তাকে কোলে নিতে দিচ্ছে না। তাই শিশুটিকে কোলে নিতে চাইলে আমি কোলে দেই। কিন্তু ভিতরে ডাকছে বলে আমাকে পাঠিয়ে দিয়ে ওই নারী বাচ্চাকে নিযে পালিয়ে যায়।
বাচ্চাটির বাবা মাজেম আলী বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর পর সন্তানের বাবা হয়েছি। স্ত্রীকে সিজারের কানে ওষুধপত্র নিয়ে ব্যস্ত থাকায় একটু কোলেও নিতেই পারিনি। তার আগেই বাচ্চাটি চুরি হয়ে গেলো। এটা যে কত বড় কস্টের তা বোঝানো সম্ভব না।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. রবিউল ইসলাম জানান, শিশুটি তার নানীর কোলে ছিল। পরে তার কাছ থেকে একজন নারী কোলে রাখেন। তারপর সে সুকৌশলে পালিয়ে যান।
তিনি বলেন, বিষয়টি পুলিশকে অবগত ও সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালে গাফিলতির বিষয়ে বলেন, নিরাপত্তার ত্রুটি থাকতে পারে। ভবিষ্যতে আরো সতর্ক হওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন ঘটনার সাথে যদি কোন স্টাফ জড়িত থাকে তবে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী জানান, প্রায় তিনঘণ্টা ওই নারী বাচ্চার মা, নানী ও খালার সাথে এক সঙ্গে সময় কাটিয়েছে। গল্প গুজব করেছে। বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে মায়ের দুধ খাইয়েছে। তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছিল। তিনটার দিকে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে পালিয়ে গেছে।
তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ওই নারী বাচ্চার কান্নার থামানের চেষ্টা করছে। যখন আশপাশে কেউ ছিল না তখনই বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকের বের হয়ে গেছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ইতোমধ্যে ওই নারীকে শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে।