• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

অর্থনীতি

মংলা কাস্টম হাউজ স্থানান্তর শুরু

  • প্রকাশিত ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত মংলা কাস্টম হাউজ মংলা বন্দর এলাকায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় অফিস ভবন ও আবাসিক স্থাপনা নির্মাণের জন্য গত মাসে ১৮২ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পণ্য ছাড়করণে আমদানি-রফতানিকারকদের হয়রানি অনেকটাই কমে যাবে।

দীর্ঘদিন ধরেই বন্দরের আমদানি-রফতানি পণ্যের কাস্টমসসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম খুলনা ও মংলা— এ দুই স্থানে সম্পন্ন হয়ে আসছে। জায়গা দুটির মধ্যে দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার। ফলে শুল্কায়ন ও পণ্য খালাসের কাজে মংলা-খুলনায় যাতায়াতে ব্যবসায়ীদের অনেক সময় নষ্ট হয়। অনেক সময় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য খালাস নেয়া সম্ভব হয় না। ফলে চরম হয়রানির শিকার হতে হয় ব্যবসায়ীদের।

মোংলা কাস্টম হাউজ সূত্র জানায়, আমদানিকৃত পণ্যের পরীক্ষা, রামিজ (ঘোষণার অতিরিক্ত কোনো পণ্য জাহাজে আছে কিনা, তা পরীক্ষা করা), ইপিজেডের পণ্য পরীক্ষা ও শুল্কায়ন, পণ্য খালাসসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম মংলা কাস্টম হাউজের বন্দর ইউনিটে সম্পন্ন করা হচ্ছে। অন্যদিকে সব প্রশাসনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আইজিএম (জাহাজে আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা) দাখিল, আমদানি ও রফতানিকৃত পণ্যের শুল্কায়ন, ব্যাংকের কাজ ও রাসায়নিক পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত মূল কার্যালয়ে। ৫৮ কিলোমিটার দূরত্বে দুই অফিসে কাজ করতে গিয়ে বছরের পর বছর চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।

গত বছরের ৫ আগস্ট মংলা বন্দরের উপদেষ্টা কমিটির ১৪তম সভায় নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের কাছে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। ওই সভায় মন্ত্রী দ্রুত কাস্টম হাউজের কার্যালয় মংলা বন্দর এলাকায় স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। এর আগে ২০১১ সালেও মংলা বন্দরের উপদেষ্টা কমিটির সভায় নৌ-পরিবহনমন্ত্রী কাস্টমস অফিস খুলনা থেকে মংলা নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বারবার নির্দেশ দেয়া সত্ত্বেও কাস্টম হাউজ মংলায় স্থানান্তর না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলেছে, আবাসিক ভবনের অভাবের কারণে স্থানান্তর প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন ভেহিকলস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সাবেক সভাপতি আবদুল হক বলেন, দুই জায়গায় শুল্কায়ন ও খালাসের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কাস্টম হাউজ দ্রুত মংলা বন্দরে স্থানান্তর করা গেলে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাড়বে। ফলে বন্দরের গতিশীলতাও বেড়ে যাবে।

মংলা কাস্টম হাউজের উপকমিশনার (ডিসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বন্দর এলাকায় আবাসিক ভবন না থাকায় এ মুহূর্তে কাস্টমসের ১৭০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মংলা স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। বন্দর এলাকায় বেসরকারি ভবন থাকলে হয়তো ভাড়া নিয়েও কার্যক্রম চালানো যেত। কিন্তু সে অবস্থাও নেই। তবে মংলা বন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় অফিস ভবন ও আবাসিক স্থাপনা নির্মাণের জন্য গত মাসে ১৮২ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আমরা মংলায় চলে যেতে পারব।

কাস্টম হাউজের কমিশনার মারগুব আহমেদ বলেন, মংলায় যত দ্রুত সম্ভব অবকাঠামো গড়ে উঠবে। আর অফিস চালানোর মতো পরিবেশ সৃষ্টি হলেই আমরা সেখানে চলে যাব। প্রকল্প বাস্তবায়নে এরই মধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একেএম ফারুক হাসান বলেন, মংলা বন্দরে কাস্টম হাউজ স্থানান্তর হলে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি থাকবে না। কাস্টমসের কাজ চালানোর জন্য আমরা ট্রাফিক বিভাগের কিছু কক্ষ তাদের ছেড়ে দিয়েছি। তাতে তাদের পুরো কার্যক্রম সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের দ্বিতীয় সামুদ্রিক বন্দর হিসেবে মংলার কার্যক্রম শুরু হয়। গত ৬৭ বছরে খুলনা অফিস থেকেই বন্দরের কাজ চলে আসছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads