• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯

ছবি: বাংলাদেশের খবর

অর্থ ও বাণিজ্য

‘রেমিট্যান্স বাড়াতে আর্থিক প্রণোদনার সুপারিশ করা হয়েছে’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ এপ্রিল ২০১৮

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য আর্থিক প্রণোদনা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। গতকাল হোটেল সোনারগাঁওয়ে নন-রেসিডেন্স বাংলাদেশিদের (এনআরবি) নিয়ে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা যতই বলি না কেন; কেউ বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠাবে না। কারণ, বৈধ চ্যানেলে ডলারের যে দর পাওয়া যায় অবৈধ চ্যানেলে পাঠালে তার চেয়ে বেশি পাওয়া যায়। সুতরাং নিজের ক্ষতি করে কেউ বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাতে চাইবে না। এ জন্য আমাদের পক্ষ থেকে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এখন অর্থমন্ত্রী এতে রাজি হলে প্রবাসীদের আমরা এ সহায়তা দিতে পারব।

সেন্টার ফর এনআরবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা রাজী হাসান, এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন প্রমুখ। সেন্টার ফর এনআরবি চেয়ারপারসন এমএস সেকিল চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতি ও সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন। ‘এসো গড়ি মাতৃভূমি’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরাও বক্তব্য দেন।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, দুই থেকে আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গিয়ে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এতে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এটা আমাদের রোধ করতে হবে। এ জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলদের দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানান। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স নিতে গিয়ে অতিরিক্ত ফি দিতে হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেদের নাম গোপন করে ওই কর্মকর্তাদের নাম জানিয়ে আমাদের কাছে চিঠি দেন, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। প্রবাসীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, গত কয়েক দশক ধরে আমাদের অর্থনীতির অন্যতম চালক হিসেবে রেমিট্যান্স ও তৈরি পোশাক শিল্প কাজ করছে। নতুন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের নতুন চালক প্রয়োজন। আমাদের সম্পদ সীমিত, কিন্তু আমাদের প্রচুর মানবসম্পদ রয়েছে। এ মানবসম্পদকে আমরা দক্ষ করে তুলতে পারি। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আমরা প্রবাসীদের মেধা, চিন্তাকে যুক্ত করতে পারি। দক্ষতা উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি নতুন চালক হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ নতুন অধ্যায়ের দিকে যাচ্ছে। কৃষি, কৃষি প্রক্রিয়াজাত, বিপণন ব্যবস্থা, সামাজিক ব্যবসার বিষয়ে আমাদের নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। সেখানে প্রবাসীদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

সাবেক মন্ত্রী শহীদুল ইসলাম বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। তবে স্থিতিশীলতার অর্থ এই নয় যে, এক দল বা এক ব্যক্তিকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অর্থ হচ্ছে রাজনৈতিক সিস্টেমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। এ ছাড়া দুর্নীতি রোধ এবং দায়িত্বশীলতার বিষয়টির ওপরও জোর দেন তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন প্রবাসীদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা বিদেশে গিয়ে নিজেদের মধ্যে কোনো ধরনের বিভেদ তৈরি না করে একসঙ্গে কাজ করুন। আপনাদের যেকোনো ন্যায্য, সঠিক দাবির পক্ষে আমরা কাজ করব। তিনি বিদেশে অদক্ষ শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের এখন অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে। এসব জায়গায় আমাদের অনেক শ্রমিক প্রয়োজন হবে। বিদেশে অদক্ষ শ্রমিক পাঠানো আমাদের জন্য কতটা আর্থিক সঙ্গতিপূর্ণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা আল রাজী বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অপব্যবহারের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ গত বছর কিছুটা কমে গিয়েছিল। তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিন হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আবার বাড়ছে। আবার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে অর্থায়নের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে নানা ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এ কারণেও রেমিট্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ২০০৭ সালের আগে যারা বিদেশে গেছেন তাদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত এবং জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশে গিয়ে এটি করা হবে। প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার অধিকারের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। পৃথিবীর অনেক দেশই এটা করতে পারেনি।

দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করার কারণে প্রবাসীরা সরকারি চাকরি, সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারছেন না উল্লেখ করে বিষয়টির সমাধান চেয়েছেন প্রবাসীরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads