• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) ভবনে পাঁচ দিনব্যাপী মধুমেলা-২০১৮ শুরু হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত

অর্থ ও বাণিজ্য

বিসিক ভবনে পাঁচ দিনব্যাপী মধুমেলা শুরু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ মে ২০১৮

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মৌচাষ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্যোগে পাঁচ দিনব্যাপী মধুমেলা-২০১৮ শুরু হয়েছে।

মতিঝিলের বিসিক ভবন চত্বরে গতকাল এ মেলা উদ্বোধন করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল্লাহ। এ দিন ‘উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ’ বিষয়ক একটি সেমিনারও অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিক চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার। স্বাগত বক্তব্য দেন আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মৌচাষ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প সচিব বলেন, বিসিক দেশব্যাপী ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প খাতের উন্নয়নে উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের সেবা-সহায়তা দিয়ে আসছে। পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে মৌচাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রমও পরিচালনা করছে। ১৯৭৭ সাল থেকে বিসিক মৌচাষের কার্যক্রম গ্রহণ করে। দেশে বর্তমানে দুই প্রজাতির যথা, অ্যাপিস মেলিফেরা এবং অ্যাপিস সেরেনা বা দেশজ প্রজাতির মৌমাছি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৌ-বাক্সে চাষ করা হয়। মধু উৎপাদন এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সফল পরাগায়নের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ দুই প্রজাতির মৌমাছি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৌ-বাক্সে চাষ করা প্রয়োজন। ফসলের মাঠে মৌমাছিরা বিচরণ করে সেখানে বাড়তি পরাগায়নের কারণে ফসলের উৎপাদন ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। বাংলাদেশ থেকে বছরে এক থেকে দেড় লাখ টন মধু বিদেশে রফতানি করা সম্ভব। এজন্য বিসিককে আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।

বাংলাদেশের মধু খাত সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দেশের মধু বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে উৎকৃষ্টমানের। মধু উৎপাদনের সঙ্গে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি সম্পর্কযুক্ত তাই এর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মধু উৎপাদন, বোতলজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার। বিসিকের এ মৌমাছি পালন কর্মসূচির মাধ্যমে বর্তমানে দেশে সনাতন পদ্ধতির আহরিত মধুর চেয়ে গুণগতমান ভালো ও উন্নতমানের মধু উৎপাদন করা সম্ভব।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিসিক চেয়ারম্যান বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দেশব্যাপী মৌচাষে মৌচাষীদের উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে মধু উৎপাদন বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে মানুষের আয়বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব। এই কার্যক্রম পালনের মাধ্যমে ইতোপূর্বে বিসিক দেশব্যাপী প্রায় ১৮ হাজার নারী ও পুরুষকে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌচাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। তাছাড়া বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মৌচাষ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৬ হাজার লোককে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌচাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের অনেকেই বর্তমানে মৌচাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। মৌচাষীদের উৎপাদিত মধুর ব্যাপক পরিচিতি ও বাজার সৃষ্টি এবং মধু ব্যবহার সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এই মধুমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাছাড়া সেমিনারে ‘উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ’ বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর মো. আহসানুল হক। এ ছাড়া মৌচাষ কল্যাণ সমিতির প্রধান উপদেষ্টা এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, বাসার পরিচালক জগদীশ চন্দ্র সাহা ও মৌচাষ কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবাদুল্লাহ আফজাল প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন।

দেশের বিভিন্ন এলাকার মৌচাষীদের উৎপাদিত মধু বিক্রি ও প্রদর্শনের লক্ষ্যে মেলায় ৪০টি স্টল স্থান পেয়েছে। মেলা চলবে ৬-১০ মে পর্যন্ত।  প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads