প্রতিবছর বাজেট ঘাটতির একটি বড় অংশ পূরণ হয় বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণের মাধ্যমে। তবে ঘাটতি পূরণে ঋণ নেওয়া হলেও এর পরিমাণ আশপাশের অনেক দেশের তুলনায়ই কম। বাংলাদেশের মোট বিদেশি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৩১ বিলিয়ন ডলার। আর মাথাপিছু ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৯৮ ডলার। গতকাল বাজেট-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আজম। গতকাল ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নেতৃত্বে বাজেট-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ও ঝুঁকিসংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আজম বলেন, বিদেশি ঋণের ঝুঁকি বিষয়ে যে তিনটি সূচক রয়েছে, তাতে বাংলাদেশ ঝুঁকির অনেক নিচের অবস্থানে রয়েছে।
ইআরডি সচিব বলেন, বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১৯৮ ডলার। আমাদের প্রতিবেশী দেশের তুলনায় এটা অনেক কম। আমাদের মোট বিদেশি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৩১ বিলিয়ন ডলার এবং বছরে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের মতো পরিশোধ করতে হয়। এ বছরে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলারের মতো ছাড় হবে। অর্থাৎ নিট ৫ বিলিয়ন ডলারের মতো আমাদের উদ্বৃত্ত থাকবে। বিদেশি ঋণের ৯০ শতাংশই হচ্ছে নমনীয়। এর সুদহারও অনেক কম। বর্তমানে আমাদের মাত্র দুই হাজার কোটি টাকা সুদ বাবদ দিতে হচ্ছে, যা খুবই নমিনাল। বর্তমানে আমাদের পাইপলাইনে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার আছে, যার ৭২ শতাংশই এসেছে গত তিন বছরে। গত বছর আমরা ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেয়েছি।
ঋণ পরিশোধে সরকার কখনো ব্যর্থ হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানান, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কখনো বাংলাদেশ ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি এবং সময়মতো ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ কখনো ঋণখেলাপি হয়নি বলেও জানান তিনি।
সক্ষমতার দিকগুলোতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একসময়ে আমাদের বিশ্ব ভিক্ষুক বলা হতো। এখন আর বলে না। এ ক্ষেত্রে তিনি বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তির বাংলাদেশ সম্পর্কে বর্তমান ধারণা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে আগের মতো এখন আর কেউ ‘তলাবিহীন ঝুড়ি ও আশাহীন বলে না’। সবার মুখে এখন বাংলাদেশ কেবল ‘রোল মডেল’ বলে উল্লেখ করেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।