• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে দুতার্তের ফিলিপাইন

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে

ছবি : ইন্টারনেট

অর্থ ও বাণিজ্য

অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে দুতার্তের ফিলিপাইন

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৩ জুলাই ২০১৮

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। তার ছয় বছরের শাসনামলের দুই বছর শেষ হয়েছে সম্প্রতি। শাসনামলের প্রথম থেকেই নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন, দিচ্ছেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্ষমতা গ্রহণের পর মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। দুতার্তে সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে গত মাস পর্যন্ত মাদক-সংশ্লিষ্ট হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ হাজার। এ নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে প্রচুর। তা সত্ত্বেও তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর কারণ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। দুতার্তেকে নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও ফিলিপাইনের অর্থনীতির গতি তার আমলেই ইতিবাচক ধারায় এগিয়ে চলেছে। ফিলিপাইনে এখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের বেশি। পাশাপাশি বাড়ছে ফিলিপাইনবাসীর আয়ের অঙ্ক। গতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিই তার জনপ্রিয়তায় কোনো প্রভাব পড়তে দিচ্ছে না।

ফিলিপাইনে কর সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন দুতার্তে। সড়ক, রেলপথ নির্মাণে নিয়েছেন ১৭ হাজার কোটি ডলারের কর্মসূচি। ফিলিপাইনের এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টায় সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থান।

অন্যদিকে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে পৌঁছেছে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজার থেকে তুলে নিচ্ছেন বিনিয়োগকৃত অর্থ। ডলারের বিপরীতে ফিলিপাইনের মুদ্রার মান দাঁড়িয়েছে ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে। তাই ১৬তম প্রেসিডেন্টের জন্য ছয় বছর মেয়াদের বাকি সময়টা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন দুতার্তেকে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে শক্ত হাতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিলিপাইনের কর্ণধারকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা ধরে রাখতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে কর সংস্কার, অবকাঠামো উন্নয়ন, মূল্যস্ফীতিতে।

চলতি বছর কর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে ফিলিপাইনে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ফিলিপাইনবাসীকে এখন আয়কর দিতে হচ্ছে অনেক কম। পাশাপাশি মিষ্টি পানীয় ও তেলজাত পণ্যে বাড়ানো হয়েছে কর। এ ব্যবস্থায় গত পাঁচ মাসে ২০১৭ সালের একই সময়ের তুলনায় সরকারের রাজস্ব বেড়েছে ১৯ শতাংশ। এই রাজস্ব গৃহীত প্রকল্পগুলোয় বিনিয়োগে সহায়তা করবে। এতে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। কর ফাঁকির বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে দুতার্তে সরকার। এ পদক্ষেপের কারণে অবৈধ কার্যক্রম চালানোর জন্য মাসুল গুনতে হয়েছে শীর্ষ সিগারেট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মাইটি করপোরেশনকে। দুতার্তে গুরুত্ব দিচ্ছেন অবকাঠামো উন্নয়নে। হাতে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার প্রকল্প। এসব প্রকল্পের আওতায় ছয় বছরের শাসনামলে ৪ কোটি ৩০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের। ২০২২ সালের মধ্যে ৭৫টি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্পের ৩২টি শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর জন্য ব্যয় হচ্ছে ৮৫ হাজার ৯০০ কোটি পেসো (ফিলিপাইন মুদ্রা)।

নতুন করনীতি বাস্তবায়নে বেড়েছে জ্বালানি ব্যয়। পাশাপাশি তেলের দরবৃদ্ধি ও মুদ্রার দুর্বল মান মে মাসে মূল্যস্ফীতির হার ৪ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হতে সহায়তা করেছে। এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও দুতার্তে সরকারকে নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ। ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি বছর এরই মধ্যে দুইবার বাড়িয়েছে সুদের হার। বছরের দ্বিতীয়ার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) ফিলিপাইনবাসীর জন্য আরো কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতির পুঁজিবাজারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে ফিলিপাইনেরটি। এর প্রভাবে পেসোর মানও কমছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ফিলিপাইনের পুঁজিবাজার থেকে তুলে নিয়েছেন ১২২ কোটি ডলার। এটি নেতিবাচক। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থিতিশীলতার জন্য দুতার্তেকে অবশ্যই নজর দিতে হবে পুঁজিবাজারের দিকে।

সূত্র : ব্লুমবার্গ

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads