• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
পানামা পেপার্স: হাসান মাহমুদ রাজাকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ

দুদক প্রধান কার্যালয়

ছবি: সংগৃহীত

অর্থ ও বাণিজ্য

পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি

হাসান মাহমুদ রাজাকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ

  • প্রকাশিত ১৬ জুলাই ২০১৮

ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজাকে মুদ্রা পাচারের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পানামা পেপার্সে তার নাম রয়েছে।  সোমবার সকাল ৯টায় তিনি দুদক প্রধান কার্যালয়ে আসেন। এর আধা ঘণ্টা পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন কমিশনের উপ-পরিচালক এসএমএম আখতার হামিদ ভূঞা।

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, পানামা পেপার্সে যাদের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে ইউনাইটেড গ্রুপের আরো তিনজনকে সোমবার জিজ্ঞাসবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। তারা হলেন কোম্পানির তিন পরিচালক খোন্দকার মঈনুল আহসান শামীম, আহমেদ ইসমাইল হোসেন ও আখতার মাহমুদ।

এই চার জনের পাশাপাশি প্যারাডাইস পেপার্সে নাম আসা তিন ব্যবসায়ীকে গত ৮ জুলাই  তলব করে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা আখতার হামিদ ভূঞার স্বাক্ষরে আলাদা নোটিস পাঠানো হয়। প্যারাডাইস পেপার্সে নাম আসা তিনজন হলেন- ডব্লিউএমভি লিমিটেডের এরিক জোহান অ্যান্ডারস উইলসন, ইন্ট্রেপিড গ্রুপের ফারহান আকিবুর রহমান ও সেলকন শিপিং কোম্পানি মাহতাবা রহমান। তাদেরকে মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে। 

দি ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) ২০১৬ সালের মে মাসে পানামার ল’ ফার্ম মোস্যাক ফনসেকার বিপুল সংখ্যক নথি ফাঁস করে দেয়, যা পানামা পেপারস নামে পরিচিতি পায়। বিশ্বের ধনী আর ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা কোন কৌশলে কর ফাঁকি দিয়ে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ছেন সেই তথ্য বেরিয়ে আসে সেসব নথি থেকে।

পানামা পেপার্সে দেড় ডজনের মতো বাংলাদেশির নাম আসার পর দুদক তাদের বিষয়ে অনুসন্ধানের ঘোষণা দেয়। সেজন্য তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান দলও গঠন করা হয়।

সেই অনুসন্ধান শেষ হওয়ার আগেই ২০১৭ সালের শেষ দিকে বারমুডার ল ফার্ম অ্যাপলবির গ্রাহকদের ১ কোটি ৩৪ লাখ নথি ফাঁস করে আইসিআইজে। সেখানে বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরসহ আরও দেড় ডজন বাংলাদেশির নাম আসে।

করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত দেশগুলোতে গোপনে টাকা লগ্নিকারী হিসেবে বাংলাদেশিদের নাম এলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে সে সময়।

খোদ সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সংসদে বলেন, “অর্থপাচার, ঋণ জালিয়াতির তদন্ত আশা করি করা হবে, দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। পাকিস্তান পানামা পেপারস নিয়ে তদন্ত করতে পারলে আমরা পারছি না।”

দুদকের একজন কর্মকর্তা ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন, পানামা পেপার্স ও প্যারাডাইস পেপার্সে যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়ে কমিশনের উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঁঞার নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল কাজ করছে। ওই দলের সদস্যরা প্রাথমিকভাবে সম্পদ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছে।

“পানামা পেপার্সের সাথে যে ১৫ জনের নাম এসেছে তাদের সবাইকে নোটিস দেওয়া হলেও নয়জন কমিশনে এসে বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দেশের বাইরে স্থায়ী নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। সবার নাম ঠিকানা যাচাই করা হচ্ছে।”

দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সে সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, পানামা পেপার্স ও প্যারাডাইস পেপার্সে যে সকল ব্যক্তির নাম এসেছে তাদের অনুপার্জিত আয়ের বিষয়টি দুদক অনুসন্ধান করবে এবং অনুসন্ধানে যদি মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অন্য কোনো প্রেডিকেটেড অফেন্স পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে কমিশন প্রাপ্ত তথ্যাদি বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইইউ, পুলিশের সিআইডি অথবা রাজস্ব বোর্ডে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হবে।”

মুদ্রাপাচার বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি (৮৯৭ কোটি ডলার) পাচার হয়; তার আগে ১০ বছরে ৭৫ বিলিয়ন ডলার হারায় বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads