• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে জাপান

টোকিওতে জাপানের ইকোনমি, ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মন্ত্রী হিরোশিগে সেকোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জাপানি মন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অর্থ ও বাণিজ্য

দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে জাপান

  • বাসস
  • প্রকাশিত ২৫ জুলাই ২০১৮

স্বল্প আয় থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পরও জাপান বাংলাদেশকে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধাসহ আর্থ-সামাজিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। জাপান সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল টোকিওতে জাপানের ইকোনমি, ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মন্ত্রী হিরোশিগে সেকোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জাপানি মন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সব ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। বাংলাদেশ আশা করছে, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পরও জাপান বাংলাদেশকে দেওয়া কারিগরি, লিগ্যাল, বাণিজ্য ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

২০১৬ সালে ঢাকায় হলি আর্টিজানে অপ্রত্যাশিত ঘটনায় সাত জাপানি নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার যেকোনো সন্ত্রাসী ঘটনায় জিরো টলারেন্স নীতি পালন করে চলছে। বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যে ওই ঘটনার তদন্ত করে বিচারিক আদালতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে। ওই ঘটনার পর সরকারের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে এ জাতীয় আর কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেনি। বর্তমানে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। এখন জাপানি নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ওপর থেকে বিদ্যমান লেভেল-২ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে বাংলাদেশ খুশি হবে।

জাপানের ইকোনমি, ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মন্ত্রী হিরোশিগে সেকো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সবক্ষেত্রে দ্রুত উন্নয়নে জাপান খুশি। জাপান সরকার এবং জাপানের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তার বিষয়ে জাপান সরকার ঢাকার জাপান দূতাবাসের মাধ্যমে জানতে পেরেছে, বাংলাদেশে এখন কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। জাপানি নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ওপর থেকে বিদ্যমান লেভেল-২ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৈঠকে তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে একশটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য ইকোনমিক জোন বরাদ্দ দিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। এখানে জাপানের বিনিয়োগকারীরা স্মার্ট টেকনোলজি, ব্লু ইকোনমি, হাই-টেক প্রডাক্ট, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রডাক্ট, টেক্সটাইল, এগ্রোপ্রসেসিং প্রডাক্ট, অটো মোবাইল, আইসিটি এবং জুট প্রডাক্ট খাতে বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে জাপান বাংলাদেশকে ১৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতের ৪০টি প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে জাপান। জাপান বাংলাদেশকে অনেক পণ্য রফতানিতে ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করছে। ফলে জাপানের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের রফতানি বাড়ছে।

তিনি বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ জাপানে রফতানি করেছে ১ হাজার ১২ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে ১ হাজার ৮৩৩ দশমিক ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। জাপান বাংলাদেশকে চামড়ার হ্যান্ড গ্লোবসসহ কিছু পণ্যের ডিউটি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করলে জাপানে বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি আরো বাড়বে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে বাংলাদেশে জাপানের ৩১২টি কোম্পানি ব্যবসা করছে এবং এখানে প্রায় ৪২ হাজার জনবল কাজ করছে।

পরে বাণিজ্যমন্ত্রী জাপান-বাংলাদেশ কমিটি ফর কমার্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের উদ্যোগে বিজনেসম্যান টু বিজনেসম্যান বৈঠকে মতবিনিময় করেন। এরপর তিনি জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেটরো) প্রেসিডেন্ট ইয়াশুশি আকাহোশির সঙ্গে বৈঠক করেন।

এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতেমা, এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান, এলএফএমইএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নাজমূল হাসান, বিজিএমইর পরিচালক মুনির হোসেন, ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফাত ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ওবায়দুল আযম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads