• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা কাল

মূল্যস্ফীতির ওপর জোর দেওয়া এবার মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্য থাকছে

সংরক্ষিত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা কাল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ জুলাই ২০১৮

চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রথমার্ধের জন্য (জুলাই-ডিসেম্বর) নতুন মুদ্রানীতি আগামী কাল মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করে মুদ্রানীতির খসড়া চূড়ান্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গভর্নর ফজলে কবির আনুষ্ঠানিকভাবে মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন। মুদ্রানীতি প্রণয়ন করতে আমরা দেশের প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নরসহ, ব্যাংকারদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। 

ব্যাংক খাতে কিছুটা টালমাটাল পরিস্থিতি চলছে। তারল্য সঙ্কটসহ নানা সূচকে অবনতি ঘটেছে এই খাতের। এর মধ্যে আগামী ৬ মাসের মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা আনা। ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে ব্যাংক মালিকরা। মূলত ঋণের উচ্চ সুদে বিনিয়োগ স্থবির যাতে না হয় সে প্রেক্ষাপট থেকে এমন সিদ্ধান্ত এলেও তা কার্যকর নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জিনিসপত্রের দাম সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। নির্বাচনী বছরে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রেখে ভোটের রাজনীতিতে সরকার চাইবে জনগণের সমর্থন পেতে। আর অর্থনীতির সব সূচক বিবেচনা করে একটি ভারমাস্যপূর্ণ ও স্থিতিশীল মুদ্রানীতি প্রণয়ন এরই মধ্যে শেষ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়ে মুদ্রা ও ঋণ সরবরাহে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি প্রয়োজন বলে নিজেদের মতামতে অর্থনীতিবিদরা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মূল্যস্ফীতির ওপর জোর দেওয়া এবার মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্য থাকছে। তবে চলতি অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে আসবে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি। বিদায়ী অর্থবছরে মূল বাজেটে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ছিল ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। কিন্তু ওই অর্থবছরে ব্যাংকবহির্ভূত উৎস থেকে (মূলত সঞ্চয়পত্র থেকে) বেশি ঋণ আসায় ব্যাংকব্যবস্থা থেকে লক্ষ্য অনুযায়ী ঋণ নিতে হয়নি সরকারকে। যে কারণে সংশোধিত বাজেটে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণের লক্ষ্য কমিয়ে হয় ১৯ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা।

অন্যদিকে চলতি অর্থবছরে ব্যাংকবহির্ভূত উৎস থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের লক্ষ্য কমিয়ে ২৯ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা করা হয়েছে। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্রসহ জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলো থেকে ২৬ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বাচনকে সামনে রেখে বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়বে। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক টাকার চেয়ে অপ্রাতিষ্ঠানিক বা কালো টাকার প্রবাহ বেশি হবে। এতে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। এতেও মূল্যস্ফীতি চাপে পড়বে। তাই এদিকে সজাগ থাকতে হবে মুদ্রানীতিতে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে হচ্ছে। সে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সতর্ক থাকতে হবে। তবে এর সঙ্গে বেশি সতর্ক হতে হবে ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলায়। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি প্রণয়নের সময় বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। ওই সময় মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রকৃত প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নেওয়া হয়। আর বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতিকে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগবান্ধব বলে জানান গভর্নর ফজলে কবির।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads