• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
পরিবহন সঙ্কটের চট্টগ্রাম বন্দরে জমেছে ৪৩ হাজার কন্টেইনার

কন্টেইনারের জট কাটতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা

সংরক্ষিত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

পরিবহন সঙ্কটের চট্টগ্রাম বন্দরে জমেছে ৪৩ হাজার কন্টেইনার

  • চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • প্রকাশিত ০৭ আগস্ট ২০১৮

দেশব্যাপী পরিবহন সঙ্কটের বিরূপ প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। ইয়ার্ডগুলোতে পণ্যবাহী কন্টেইনারের স্তূপ জমেছে। গতকাল সোমবার থেকে কন্টেইনার পরিবহন শুরু হলেও আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনারের জট কাটতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ট্রাক, কভার্ড ভ্যান ও ট্যাঙ্ক লরি চলাচল বন্ধ থাকার কারণে একদিকে বেসরকারি কন্টেইনার ডিপো থেকে বন্দরে রফতানি পণ্যবাহী কন্টেইনার পাঠানো ব্যাহত হয়েছে, অন্যদিকে বন্দর থেকে আমদানি পণ্যের কন্টেইনার ডেলিভারি হয়নি। যে কারণে ইয়ার্ডগুলোতে কন্টেইনারের পরিমাণ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি আইসিডিগুলো থেকে রফতানি কন্টেইনার না আসার কারণে জাহাজে পণ্য উঠানোর কাজও ব্যাহত হয়েছে। তবে গতকাল বিকাল থেকে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে বলে জানান তিনি।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের দেশব্যাপী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার থেকে টানা তিন দিন ধরে চলে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট। এ সময় জাহাজিকরণের জন্য অফডকগুলোতে জমে থাকা রফতানি পণ্যবাহী কন্টেইনারগুলো বন্দরে পাঠানো পুরোপুরি বন্ধ থাকে। একইভাবে বিভিন্ন আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার জাহাজ থেকে বন্দরে ইয়ার্ডে নামানো হলেও পরিবহন সঙ্কটে তা ডেলিভারি হয়নি।

চট্টগ্রাম বন্দরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গতকাল চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে মোট কন্টেইনারের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৮৪৩ টিইইউস। এর মধ্যে আমদানি পণ্যের কন্টেইনার ছিল ইয়ার্ডের ধারণক্ষমতার বাইরে। ৩৭ হাজার ৬২০ টিইইউস কন্টেইনারের ধারণক্ষমতার বিপরীতে একদিকে আমদানি কন্টেইনার ছিল ৩৯ হাজার ৬১ টিইইউস। অন্যদিকে ৪ হাজার টিইইউস রফতানি পণ্যবাহী কন্টেইনারের ধারণক্ষমতা থাকলেও বন্দরে গতকাল এ ধরনের কন্টেইনারের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ হাজার টিইইউস। খালি কন্টেইনার ছিল ২ হাজার ৭০০ টিইইউস।

বাংলাদেশ কন্টেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) সচিব রুহুল আমিন সিকদার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, পরিবহন সঙ্কটের কারণে টানা ত্রিশ ঘণ্টা বেসরকারি আইসিডিগুলোর অপারেশনাল কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ ছিল। এর ফলে প্রচুর পরিমাণ রফতানি পণ্য যথাসময়ে জাহাজিকরণ করা যায়নি।

তিনি জানান, গতকাল দুপুর থেকে বিভিন্ন ডিপোতে কাজ শুরু হলেও প্রতিটি ডিপোর সামনেই প্রচণ্ড জ্যাম লেগে আছে।

তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সূত্র জানায়, বেসরকারি আইসিডিতে আটকা পড়া রফতানি পণ্যগুলোর বেশিরভাগই হচ্ছে তৈরি পোশাক। যথাসময়ে এসব পণ্য জাহাজিকরণ না হওয়ার কারণে লিড টাইম ফেল করার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় অনেক পণ্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে এয়ার শিপমেন্ট করতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশের আমদানি-রফতানির ৯২ শতাংশই পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। বিশেষ করে দেশের প্রধান রফতানি খাত আরএমজি (রেডিমেড গার্মেন্টস) সেক্টরের পণ্য রফতানি পুরোপুরি চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। আর যেকোনো ধরনের পরিবহন সঙ্কট বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম যেমন ব্যাহত করে তেমনি দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যেও মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads