• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ভ্যাট ফাঁকি রোধে ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক

ভ্যাট ফাঁকি রোধে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিশেষায়িত হিসাবযন্ত্র (ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস বা ইএফডি) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে

সংরক্ষিত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

জরিমানা বা ব্যবসা বন্ধের মতো খড়গের মুখে পড়তে পারেন ব্যবসায়ীরা

ভ্যাট ফাঁকি রোধে ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ আগস্ট ২০১৮

ভ্যাট ফাঁকি রোধে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিশেষায়িত হিসাবযন্ত্র (ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস বা ইএফডি) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাস থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সিটি করপোরেশন এলাকায় এবং ডিসেম্বর থেকে জেলা শহরের ১৩ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে এ যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে।

যে ১৩ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সেগুলো হলো- আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ ও ফাস্ট ফুডের দোকান, মিষ্টান্ন ভান্ডার, আসবাবপত্রের বিক্রয়কেন্দ্র, পোশাক বিক্রয়কেন্দ্র বা বুটিক শপ, বিউটি পার্লার, ইলেকট্রনিক বা ইলেকট্রিক্যাল গৃহস্থালিসামগ্রীর বিক্রয়কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার, অভিজাত শপিং সেন্টারের অন্তর্ভুক্ত সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, জেনারেল স্টোর বা সুপারশপ, অন্যান্য বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ী (পাইকারি ও খুচরা) প্রতিষ্ঠান এবং স্বর্ণকার, রৌপ্যকার, স্বর্ণ ও রৌপ্যের দোকানদার ও পাকাকারি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এনবিআর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইএফডি ব্যবহারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা বিক্রয়ে স্বচ্ছতা থাকবে। এতে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) ফাঁকির সুযোগ কমে যাবে। ফলে এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে। যন্ত্রটি ব্যবহার না করলে কিংবা কোনো ধরনের ফাঁকি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার শিকার হতে হবে। একাধিকবার এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের কারণে বন্ধের হুমকিতেও পড়তে হতে পারে।

অবশ্য এর আগে ২০০৯ সাল থেকে এ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার বা ইসিআর মেশিন স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হলেও তাতে সফলতা আসেনি। এবার ইএফডি ব্যবহারে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হলেও তা সফল হবে কি না- তা নিয়ে এনবিআরের অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, ইসিআর স্থাপন করা হলেও এনবিআরের সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত না থাকায় ভ্যাট ফাঁকি রোধে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। তবে ইএফডি এনবিআরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সার্ভারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবে। এর নাম ইএফডি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা ইএফডিএমএস। ফলে যেকোনো বিক্রির তথ্য ইএফডিতে দেওয়া হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা এনবিআরে রক্ষিত সার্ভারে দেখা যাবে। এটি ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে অনলাইন বা ইন্টারনেট ব্যবস্থা ও নির্ধারিত সিম থাকবে। প্রত্যেক বিক্রয় তথ্য অনুমোদিত কোডের জন্য এনবিআরে রক্ষিত সার্ভার বা ইএফডিএমএসে যাবে। ইএফডিএমএস থেকে অনুমোদিত কোড পাওয়ার পর বিক্রয়ের লেনদেন কার্যকর হবে। একটি ইউনিক নাম্বারসহ চালান মুদ্রিত হবে। ওই চালানের কপি ক্রেতাকে দেওয়া হবে এবং ওই নাম্বার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও এনবিআরের সংরক্ষিত সার্ভারে থাকবে। ফলে প্রতিদিন কত বিক্রি হয়েছে এবং এর কত ভ্যাট আদায় হলো, তা এনবিআর জানতে পারবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইএফডি বাদ দিয়ে হাতে হাতে লেনদেন হলে ওই ফাঁকি ধরা কার্যত সম্ভব হবে না। এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ কথা স্বীকার করে বলেন, ইএফডি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতায় আনা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। এটি চালু হওয়ার পর ধীরে ধীরে স্বচ্ছতা আসবে। ফলে ভ্যাট আদায়ও বাড়বে।

এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের ভ্যাট বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ঘোড়ার আগে গাড়ি দৌড়াতে চাইলে সফলতা আসবে না। এনবিআরের বিধি তৈরিসহ ভ্যাট সংক্রান্ত বিষয়ে সক্ষমতা ও ব্যবসায়ীদের যথাযথ প্রশিক্ষণের আগে এটি চালু করা ঠিক হবে না। অনেক ব্যবসায়ী ইএফডির মতো অত্যাধুনিক যন্ত্রের সঙ্গে পরিচিতও নন। ফলে এটি ব্যবহারের জন্য বাড়তি অভিজ্ঞ লোকবলের প্রয়োজন হতে পারে। তাতে ব্যবসায় ব্যয় বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads