• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
আর্থিক খাতের শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে চাঙ্গা পুঁজিবাজার

একই সময়ে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত থেকে মূলধনি মুনাফা আসে ৫২ শতাংশ

সংগৃহীত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

আর্থিক খাতের শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে চাঙ্গা পুঁজিবাজার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ আগস্ট ২০১৮

২০১৭ সালে ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভর করে চাঙ্গা হয়ে ওঠে পুঁজিবাজার। সে সময় এ খাতটি থেকে বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৬০ শতাংশ মূলধনি মুনাফা পেয়েছিলেন। একই সময়ে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত থেকে মূলধনি মুনাফা আসে ৫২ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে চলতি বছর তারল্য সঙ্কট ও আমানতের তুলনায় ঋণ বিতরণ বেশি হওয়ায় এক ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়ে পুরো আর্থিক খাত। যার প্রভাব পড়ে পুঁজিবাজারে। ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার দর হারানোয় সূচকের পতন হয় স্টক এক্সচেঞ্জে। তবে প্রায় সাত মাস পর আর্থিক খাতে নির্ভর হয়ে আবারো চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পুঁজিবাজার।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তা ও বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির প্রভাবে চলতি বছরের ২৬ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক খাতের শেয়ারদর কমে প্রায় ২৯ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত ২০ শতাংশের বেশি দর হারায়। দর হারায় বীমা খাতও। টানা দর হারানোর পর আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। আর ২৯ জুলাই থেকে আর্থিক খাতে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়ায় হারানো দর পুনরুদ্ধার হতে দেখা যায়। যার প্রভাবে পুঁজিবাজারে দীর্ঘ প্রায় সাত মাস পর চাঙ্গা ভাব দেখা যায়।

বিভিন্ন খাতের শেয়ার দর পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ১৬ কার্যদিবসে উৎপাদন খাতের বাজার মূলধন কমলেও বেড়েছে আর্থিক খাতের শেয়ার দর। এ সময় ব্যাংক খাতের শেয়ারের বাজার মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গত তিন সপ্তাহে ব্যাংক খাতের শেয়ার দর বেড়েছে ২০ শতাংশ। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর বেড়েছে ১ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এছাড়া সামান্য বেড়েছে বস্ত্র, সাধারণ বীমা ও জীবন বীমা খাতের শেয়ার দর। বিপরীতে উৎপাদন খাতের টেলিযোগাযোগ, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিমেন্ট, জ্বালানি, প্রকৌশল, তথ্যপ্রযুক্তি ও সিরামিক খাতের বাজার মূলধন কমেছে। সবমিলিয়ে গত তিন সপ্তাহে উৎপাদনমুখী খাতের শেয়ার দর কমলেও ব্যাংকসহ পুরো আর্থিক খাতের শেয়ার দর বাড়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ৮ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা।   

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বছরের শুরু থেকে দর হারানোর শীর্ষে থাকা ব্যাংক খাতের শেয়ারে আগ্রহ তৈরি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই তুলনামূলক কম দরে থাকা এ খাতের শেয়ার নিয়ে নিজেদের পোর্টফোলিও তৈরি করছেন তারা। এতে ব্যাংক খাতের চাহিদা বাড়ায় দরও বাড়ছে। যার প্রভাব পড়ছে স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যসূচকে। আর্থিক খাতের শেয়ার দরে নির্ভর করে গত ১৬ কার্যদিবসে ডিএসই প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ২৬৬ পয়েন্ট। এতে ঈদের আগে শেষ কার্যদিবসে এ সূচকটি ৫৫৭১ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে।

ধারাবাহিকভাবে আর্থিক খাতের শেয়ারের দর বাড়ায় টেলিযোগাযোগ খাত হটিয়ে ডিএসইর বাজার মূলধনের শীর্ষস্থানটি আবারো ব্যাংক খাতের দখলে। বর্তমানে ব্যাংক খাতের বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। আর গত তিন সপ্তাহে মূলধন হারিয়েও ৫২ হাজার ১৪০ কোটি টাকার বাজার মূলধন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে টেলিযোগাযোগ খাত। পরের অবস্থানে রয়েছে ফার্মাসিউটিক্যালস খাত। এ খাতটির বাজার মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ৪২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বাজার মূলধন নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত।

দেশের পুঁজিবাজারে একক কোম্পানি হিসেবে বাজার মূলধনের শীর্ষে রয়েছে গ্রামীণফোন। এ কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট বাজার মূলধনের ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। একক কোম্পানির বাজার মূলধনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। এ কোম্পানির বাজার মূলধন হচ্ছে ২০ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। বিএটি বাংলাদেশ ১৯ হাজার ৮৪০ কোটি টাকার বাজার মূলধন নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। ডিএসইতে এ কোম্পানির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ৩ হাজার ৩০৬ টাকায়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads